কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

জাইরা ওয়াসিম। ছবি: সংগৃহীত

জাইরা ওয়াসিমের বলিউড বিদায়: মুসলিম বলেই কি এত কথা?

রুহুল আমিন
জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ০৫ জুলাই ২০১৯, ১৯:১৪
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৯, ১৯:১৪

(প্রিয়.কম) জাইরা ওয়াসিম, কাশ্মিরি বলিউড অভিনেত্রী। যিনি বলিউডের ব্যবসা সফল সিনেমাগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘দঙ্গল’-এ অভিনয় করে জনপ্রিয়তা পান। এ ছাড়া আমির খানের ‘সিক্রেট সুপারস্টার’ করেও প্রশংসা কুড়ান তিনি। আর আগামী অক্টোবরে মুক্তি পাবে জাইরা ওয়াসিম অভিনীত ‘দ্য স্কাই ইজ পিঙ্ক’।

২০১৬ সালে দঙ্গল সিনেমায় অভিনয় করে রাতারাতি তারকা বনে যাওয়া জাইরা ওয়াসিম হঠাৎ করেই বলিউডকে বিদায় জানান। দঙ্গলকন্যা খ্যাত এ অষ্টাদশী জানিয়েছেন, পেশার কারণে তার ইমান (আল্লাহর প্রতি আনুগত্য) হুমকির মুখে, তাই তিনি এই পেশা ছেড়ে দিলেন। ওই ঘোষণার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় তাকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। আর ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, উগ্রবাদীদের চাপে পড়ে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন জাইরা ওয়াসিম।

কেউ কেউ মনে করছেন বর্তমান ভারতে মুসলিমদের প্রকৃত অবস্থার উৎকৃষ্ট উদাহরণ হলো জাইরা ওয়াসিম। আবার কেউ বলছেন, উগ্রবাদী মুসলিমদের কারণেই তিনি অভিনয় থেকে দূরে সরে গেলেন। জাইরা ওয়াসিমের বলিউড ছাড়ার ঘোষণার মধ্য দিয়ে বর্তমান ভারতের চিত্র ফুটে উঠেছে বলেই মনে করেন হাফসা কানজুয়াল

হাফসা কানজুয়াল হলেন লাফায়েট কলেজের দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসবিষয়ক সহকারী অধ্যাপক। জাইরা ওয়াসিম সম্পর্কিত তার নিবন্ধটি কাতারভিত্তিক আল-জাজিরা অনলাইনে প্রকাশিত হয়। প্রিয়.কমের পাঠকদের জন্য তা ভাষান্তর করে দেওয়া হলো।

গত রবিবার ১৮ বছর বয়সী কাশ্মিরি মুসলিম বলিউড অভিনেত্রী জাইরা ওয়াসিম অভিনয় ছাড়ার ঘোষণা দেন। তার এই ঘোষণায় পুরো ভারতজুড়ে আলোড়ন তৈরি হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, টুইটার ও ইনস্টাগ্রামে নিজের অ্যাকাউন্টে এক পোস্টের মাধ্যমে জাইরা ওয়াসিম ঘোষণা দেন, গত পাঁচ বছরে বলিউড ইন্ডাস্ট্রি তাকে অনেককিছু দিয়েছে। অনেক অনেক ভালোবাসা, সমর্থন ও প্রশংসা এনে দিয়েছে। তবে এও ঠিক যে এটা তাকে ‘অন্ধকারের’ দিকেও নিয়ে গেছে। অর্থাৎ তার ‘ইমান’ (আল্লাহর প্রতি আনুগত্য) ও ধর্মের সঙ্গে তার যে সম্পর্ক রয়েছে, তা থেকে তাকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছিল।

প্রকৃতপক্ষে তার দেওয়া পোস্টে তিনি ব্যক্তিগতভাবে কোনো খারাপ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছিলেন কি না, তা স্পষ্ট করেননি। তবে তিনি বেশকিছু কোরআন ও ইসলামি বিধি-বিধানের দোহাই এবং আমাদেরকে সৃষ্টির উদ্দেশ্যের কথা স্মরণ করিয়ে পার্থিব ইচ্ছাকে পরিত্যাগের কথা বলেছেন।

বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি আয় করা ভারতীয় সিনেমার মধ্যে অন্যতম ‘দঙ্গল’-এ শিশু রেসলারের চরিত্রে অভিনয় করে জাইরা ওয়াসিম প্রথমে পরিচিতি পান। পরে তিনি ‘সিক্রেট সুপারস্টারে’র কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন। তার অভিনীত সর্বশেষ সিনেমা ‘দ্য স্কাই ইজ পিঙ্ক’ চলতি বছরের অক্টোবরে মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে। ২০১৭ সালে ‘বেস্ট সাপোর্টিং অ্যাকট্রেস’ ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ বেশ কয়েকটি পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি।

যা হোক, বলিউডে কাটানো সময়টুকুতে বিতর্ক যেন জাইরা ওয়াসিমের পিছু ছাড়েনি। কিছু মুসলিম ধর্মের দোহাই দিয়ে তার অভিনয়কে তিরস্কার করতেন। আর তার জন্মস্থান কাশ্মিরের অনেকেই এক যুবতী মেয়ের বলিউডে অভিনয় নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন। তারা জাইরার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করা ভারতের জাতীয় স্বার্থের সমর্থক মনে করতেন। তারা এটাকে মনে করতেন, ভারতীয় শাসনের বিরুদ্ধে কাশ্মিরিদের সংগ্রামের ভুল উপস্থাপন ও ইসলামভীতি। তখন বলিউডের তারকারা তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে এসেছিলেন এবং তাকে কাশ্মিরি যুবকদের ঐক্যবদ্ধকারী রোল মডেল বলে প্রশংসা করেছিলেন। যদিও জাইরা ওয়াসিম নিজেই তখন এই তকমার বিরোধিতা করেছিলেন।

পাঁচ বছর কাজ করার পর জাইরার বলিউড ছাড়ার ঘোষণায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ভারতীয় সংবাদপত্রের বার্তাকক্ষসহ সবখানে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। অনেক মুসলিম, বিশেষ করে কাশ্মিরের মুসলিমরা বলিউড, যশ ও খ্যাতি থেকে তার জীবনকে দূরে রাখার এই সিদ্ধান্তের খুব প্রশংসা করছেন। যদিও ভারতের অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি মতাদর্শিক জায়গা থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জাইরার এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছেন।

আমরা হয়তো কোনোদিনই জানব না, জাইরার বলিউড ছাড়ার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া ও ঘোষণার পেছনে কোন ধরনের অভিজ্ঞতা, ষড়যন্ত্র ও কি পরিমাণ মানসিক যন্ত্রণা রয়েছে। বরং এটা বলা যায়, অদূর ভবিষ্যতে হয়তো এই বিষয়ে তার মত পরিবর্তন হতে পারে।

উদার নারীবাদী ও ডানপন্থি হিন্দু জাতীয়তাবাদী দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে গিয়ে জাইরার বলিউডকে বিদায় বলার পুরো ঘটনায় আমাদের সামনে কী দাঁড়াল? তিনি বলিউডকে বিদায় বলেছেন, এটা তার অপরাধ নয়, কিন্তু তিনি ইসলামিক কারণ দেখিয়েছেন এবং তা প্রকাশ্যে বলেছেন, এটাই তার অপরাধ। ভারতের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের তাদের ধর্ম বিশ্বাস প্রকাশ্যে আনার অপরাধ থেকে বিরত থাকা যেন জরুরি। অন্যদিকে হিন্দু বিশ্বাস প্রকাশ্যে আনলে পুরস্কৃত করা হয়, বিশেষ করে অভিনেতাদের মধ্যে যারা এই বিশ্বাস প্রকাশ্যে আনেন।

পক্ষান্তরে ডানপন্থিরা জাইরা ওয়াসিমকে ট্রল করে বলছেন, তার এই সিদ্ধান্ত উগ্রবাদী ও মৌলবাদের ফল। অন্যথায় তাকে পাথর নিক্ষেপ বা জিহাদের মুখোমুখি হতে হতো। আর উদারপন্থি নারীবাদীরা তরুণ এ নারী অভিনেত্রীর তারকা জীবন ও অনেক বেশি মেকি জীবন থেকে শালীন জীবন বেছে নেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। যদিও এই সিদ্ধান্ত জাইরা ওয়াসিম নিজেই নিয়েছেন।

উদারহণ স্বরূপ বলা যায়, বলিউড অভিনেত্রী রাভিনা টেন্ডন জাইরা ওয়াসিমের এই বিদায়কে ‘পশ্চাদগামী’ বলে মন্তব্য করেছেন। আর বিশিষ্ট সাংবাদিক, যিনি আবার নিজেকে নারীবাদী বলে দাবি করেন, সেই বারখা দত্ত বলেছেন, যেকোনো ধর্মে, ধর্মীয় রক্ষণশীলতায় উৎসাহী হয়ে কোনোকিছু ‘পছন্দ’ করা খুবই বিরক্তিকর। আর এই পছন্দ শব্দটিই অনেক সময় জটিল শব্দ মনে হয়, বিশেষ করে নারীদের জন্য।

একইভাবে ওয়াশিংটন পোস্টের সাবেক ভারতীয় প্রতিনিধি রাম লক্ষণ লিখেছেন, বিশুদ্ধ ও অবিশুদ্ধের ভুল ধারণা নিয়েই সব ধর্ম আপনার মাথায় থাকে। যখন আপনার একটি আধুনিক সংবিধান আছে তখন আপনি কেন পৌরাণিক গ্রন্থ দিয়ে নৈতিকতা নির্ধারণ করবেন।

হ্যাঁ, ‘পছন্দ’ তখন কেবল একটি জটিল শব্দ, যখন এটা মুসলিম কোনো নারী করে থাকে। এই ব্যাপারে প্রয়াত নৃতাত্ত্বিক সাবা মাহমুদ তার সাড়া জাগানো বই ‘দ্য পলিটিকস অব পিয়েটি (Piety)’–তে বলেছেন, মুসলিম নারীর পছন্দ বা কার্যকলাপ কেবল উদারতাবাদেই (এই ক্ষেত্রে হিন্দু জাতীয়তাবাদ) গুরুত্ব পাবে এবং যখন এটা কোনো নির্দিষ্ট মূল্যবোধকে প্রতিরোধ বা গুড়িয়ে দিবে। কিন্তু কোনো ধর্মীয় রীতি মেনে চলার ক্ষেত্রে তা গুরুত্ব পাবে না।

এই পছন্দের ‘জটিলতা’ সেই সব নারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, যাদের ইন্ডাস্ট্রির প্রত্যাশা পূরণে বাধ্য করা হয় এবং অন্যের দৃষ্টি কাড়তে কীভাবে তাকাতে হবে, কীভাবে অভিনয় ও আচরণ করতে হবে, সে সম্পর্কিত তাদের নিজস্ব মূল্যবোধ নেই। এটাকে নারীর মুক্তি ও তার কার্যক্রমের সম্পূর্ণ অনুশীলন হিসেবে দেখা হয়। আবার এই ‘পছন্দ’ অথবা ‘কার্যক্রম’ সাধারণত সেই সব নারীদের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য হবে না, যারা ইন্ডাস্ট্রির এই ধারণার বিরোধিতা করবেন। যেসব নারী ইন্ডাস্ট্রির প্রচলিত সংস্কৃতির চর্চা করেন তাদের ধর্মনিরপেক্ষ উদার আধুনিকতাবাদী আখ্যা দেওয়া হয়, এমনকি সহিংসতার শিকার হলেও এই আখ্যা দেওয়া হয়।

বলিউড অবশ্যই খ্যাতিমান বা নামকরা কোনো ইন্ডাস্ট্রি নয়। এটা হচ্ছে স্বজনপ্রীতির এক বিশাল ফাঁদ, যেখানে প্রচুর যৌন হয়রানি, মাদক ও অ্যালকোহলের অপব্যবহারের ছড়াছড়ি। এটা উগ্র জাতীয়তাবাদ (অতি সাম্প্রতিক পুলওয়ামা আক্রমণেও এটা দেখা গেছে), বস্তুবাদ ও স্ক্যান্ডালের ওপর দাঁড়িয়ে আছে।

যখন নারীদের ভূমিকার বিষয়টি সামনে আসে তখন অবশ্য আধুনিক সংবিধান অনুসারে বলিউডকে নারীর ক্ষমতায়নের খুব বড় উৎস বলা হয়। অথচ অভিনেত্রীদের আক্ষরিক অর্থে ‘আইটেম নম্বর’ হিসেবে এবং সাধারণ তারকা সংস্কৃতির সঙ্গে মানানসই শারীরিক আদর্শগুলোর জন্য উপযুক্ত বলে মনে করা হয়। নিয়মিত কাজ পেতে বা চলনসই থাকতে নারী তারকাদের ওজন কমাতে নিয়ম করে হয়রানি করা হয়। আর কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করা নারীদের জন্য বিয়ে হচ্ছে অনেকটা মৃত্যুদণ্ডের মতো।

২০১৮ সালে দীপিকা পাডুকোন ও জাইরা ওয়াসিমসহ বেশ কয়েকজন তারকা অভিনেত্রীর এই সংক্রান্ত হতাশা ও উদ্বিগ্নতা নিয়ে তাদের সংগ্রামের কথা সাধারণ মানুষ জেনেছেন।

গবেষণাও বলিউড ফিল্মের গৎবাঁধা, লিঙ্গ বৈষম্য ও নারীর বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতামূলক কার্যক্রম শনাক্ত করেছে এবং এর প্রভাব বাস্তব জীবনে মানুষের আচরণে দেখা যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছে। এর মধ্যে ইভটিজিং প্রবণতাও রয়েছে।

এইসব মনে রেখে জাইরা ওয়াসিমের ধারাবাহিক সংগ্রামের ফলশ্রুতিতে নেওয়া সিদ্ধান্তকে গ্রহণ করতে এত কঠিন মনে হচ্ছে কেন আমাদের কাছে? বিশেষ করে তরুণ বয়সে যখন তিনি ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবেশ করেছেন। কেন ওয়াসিমের এই সিদ্ধান্তকে পশ্চাদগামী বলা হচ্ছে। অথচ নারীকে পণ্য হিসেবে ব্যবহার করে এগিয়ে যাওয়া এই সেক্সিস্ট, পুরুষতান্ত্রিক ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে কেউ কিছু বলছে না। উপরন্তু কেন ১৮ বছর বয়সী একজন মুসলিম অভিনেত্রীর সমালোচনা করা হচ্ছে? কিন্তু অসংখ্য বলিউড তারকাদের সমালোচনা হচ্ছে না, যারা হিন্দু জাতীয়তাবাদী নরেন্দ্র মোদির সরকারের সঙ্গে সখ্য গড়ে চলেছেন; যার আমলে ভারতে মুসলিমরা প্রতিনিয়ত খুন হচ্ছেন।

কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ব্যতিক্রম ছাড়া ভারতের প্রকৃত মৌলবাদীদের ওপর কি কোনো অত্যাচার হচ্ছে? যদি লক্ষ্মী ও দত্তের মতো উদার সাংবাদিকরা অন্যের বৈধ ও সাংবিধানিকভাবে সুরক্ষিত বিশ্বাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন, তবে এতে বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই যে, ভারতে মুসলিম রাজনীতিকে অবজ্ঞার চোখে দেখা হবে।

এটা এমন নয় যে, এসব কারণে ইন্ডাস্ট্রি ছাড়ার কোনো উদাহরণ নেই। যখন তনুশ্রী দত্ত বলিউডে তার যৌন হয়রানির অভিজ্ঞতা প্রকাশ্যে আনেন, তখন তার সাহসের প্রশংসা করা হয়। তথাকথিত ছায়া থেকে বের হয়ে জাইরা ওয়াসিমকে যে ক’জন সমর্থন করেছেন তাদের মধ্যে তিনিও আছেন।

এখানে উল্লেখ্য, ভারতে খুব উৎসাহের সঙ্গে উদযাপিত যোগ ব্যয়ামের প্রতি কোনো মনোযোগ দেওয়া হয়নি। এটা এমন একটি অনুশীলন যা আমরা অস্বীকার করতে পারি না যে, হিন্দু ধর্মের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং যা মোদির ভারতের অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখা গেছে, বলিউড তারকারা ২১ জুন আন্তর্জাতিক যোগ ব্যয়াম দিবসের বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নিয়েছেন।

মজার ব্যাপার হলো, এই যোগ ব্যয়াম অনুশীলনে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্নতাবাদ দূর করার উদ্দেশ্যে ও আধ্যাত্মিকতার উন্নয়নের জন্য আহ্বান জানানো হয়। যেমনটা মনে করে জাইরা ওয়াসিম বলিউডকে বিদায় বলেছেন, তবে সেটা ইসলামিক দৃষ্টিতে। এই থেকে বোঝা যায় যে, আধ্যাত্মিকতার উন্নয়নের প্রচেষ্টা কেবল তখনই প্রশংসিত হয়, যখন তাতে ইসলাম অথবা মুসলিমরা সম্পর্কিত না থাকে।

এই বিশ্বে এটাই নির্মম পরিহাসের বিষয় যে, একজন মুসলিম নারীর কার্যকলাপকে বাঁকা চোখে দেখা হচ্ছে; যখন এই কার্যকলাপ ওই নারী এমনভাবে করেন, যা তাকে তার ধর্মীয় বিশ্বাস থেকে দূরে সরিয়ে দেয় না। কিন্তু দুঃখজনক হলো, তখন তাদের উগ্রবাদী বা মৌলবাদী বলে গণ্য করা হয়।

যখন জাইরা ওয়াসিমের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা হয়, সম্ভবত বলিউডের ওপরও সেই দৃষ্টি পড়ে এবং কেন ১৮ বছর বয়সী একজন মুসলিম নারী ‘বিতর্কিত’ জায়গা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন, সে প্রশ্ন ওঠে। অথচ জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থেকেও এই খপ্পর থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়েছেন জাইরা ওয়াসিম।

প্রিয় সংবাদ/রিমন