কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

স্ত্রী ও দুই মেয়ের সাথে অস্ট্রেলিয়ার বাঁহাতি ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। ছবি: সংগৃহীত

বল টেম্পারিং করেছেন ওয়ার্নার, পৃথিবীর আলো দেখেনি অনাগত সন্তান

মুশাহিদ মিশু
Writer
প্রকাশিত: ২৮ জুন ২০১৯, ২২:৫৭
আপডেট: ২৮ জুন ২০১৯, ২২:৫৭

(প্রিয়.কম) বল টেম্পারিংয়ের ঘটনায় এক বছরের নিষেধাজ্ঞা। যে ক্রিকেট ছাড়া এক মুহূর্ত চলে না, সেটা ছেড়ে এক বছর! অনুতপ্ত ডেভিড ওয়ার্নার যেন সব অন্ধকার দেখতে পাচ্ছিলেন। নিষেধাজ্ঞার কারণে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) এক আসরে খেলতে পারেননি তিনি, হারিয়েছেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের অধিনায়কত্বও।

নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আইপিএলের দ্বাদশ আসর দিয়ে মাঠে ফেরেন ওয়ার্নার। কেবল তাই নয়। ব্যাট হাতে কাটান দুর্দান্ত এক মৌসুম। বিশ্বকাপের মঞ্চেও সেই ফর্মটা ধরে রেখেছেন অস্ট্রেলিয়ার বাঁহাতি এই ওপেনার। সাত ম্যাচে দুটি সেঞ্চুরি ও তিন হাফ সেঞ্চুরিতে ওয়ার্নারের ব্যাট থেকে এসেছে ৫০০ রান।

এখানেই শেষ নয়। ব্যাট হাতে দুর্দান্ত সময় পার করা ওয়ার্নারকে আরেকটি সুসংবাদ দিয়েছেন স্ত্রী ক্যানডিস ওয়ার্নার। ৩০ জুন, রবিবার তৃতীয়বারের মতো বাবা হচ্ছেন বল টেম্পারিংয়ের দায়ে এক বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে মাঠে ফেরা ওয়ার্নার। তবে তৃতীয় সন্তান জন্ম দেওয়ার আগে মর্মান্তিক এক তথ্য দিলেন ওয়ার্নারের স্ত্রী। ক্যানডিস জানান, এর আগে দুবার বাচ্চা নষ্ট হয়েছে তার।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কেপ টাউনে বল বিকৃতি কাণ্ডের পরই জড়িত তিন ক্রিকেটার ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভেন স্মিথ ও ক্যামেরন ব্যানক্রফটকে দেশে ফিরিয়ে নেয় দেশটির ক্রিকেট বোর্ড। এ সময় ওয়ার্নারের সাথেই ছিলেন তার স্ত্রী। ক্যানডিস জানান, সে সময় প্রবল মানসিক চাপ ও উড়োজাহাজে করে কষ্টসাধ্য ফ্লাইটের জন্যই তার গর্ভপাত হয়।

অস্ট্রেলিয়ার একটি সংবাদমাধ্যম দেওয়া সাক্ষাৎকারে ক্যানডিস বলেন, ‘সেই সময় দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের দুটি বাচ্চা নষ্ট হয়েছিল। যার মধ্যে একটি সন্তান আমরা পেতে পারতাম। কিন্তু এমনটাই হলো।’

গেল বছর অস্ট্রেলিয়ার এক নারীভিত্তিক সাময়িকীকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সন্তান নষ্ট হওয়ার বিষয়টি জানিয়েছিলেন ওয়ার্নার-পত্নী। ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘ডেভকে ডেকে জানাই আমার রক্ত ঝরছে। আমরা জানতাম গর্ভপাত ঘটছে। একে অপরকে জড়িয়ে ধরে দুইজনই কেঁদেছি। এটা আসলে একটি ভয়ঙ্কর সফরের মর্মান্তিক সমাপ্তি।’

দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে স্মিথ ও ব্যানক্রফটদের সঙ্গেই দেশে ফিরতে চেয়েছিলেন ওয়ার্নার। কিন্তু তাদের দুজনকে আলাদা ফ্লাইটে দেশে পাঠানো হয়। ওয়ার্নার ও তার পরিবারকে পাঠানো হয় আরেকটি ফ্লাইটে। ওয়ার্নারের স্ত্রীর দাবি, এই ফ্লাইটটি ছিল লম্বা সময়ব্যাপী ও কষ্টকর।

ওয়ার্নার-পত্নী আরও বলেন, ‘আমরা বেশ কষ্টকর ও সবচেয়ে দীর্ঘ ফ্লাইটে এসেছি। কেউ জানত না আমি অন্তঃসত্ত্বা। ডেভ আমাকে নিরাপদ রাখতে সম্ভাব্য সব চেষ্টা করেছে। আমাদেরকে নিশ্চিত করা হয়েছিল, বিমানবন্দর থেকে আমরা নির্বিঘ্নে বেরিয়ে যেতে পারব। কিন্তু গণমাধ্যমকে দেখার পর ভীষণ ভেঙে পড়ি, বিশেষ করে ২৩ ঘণ্টা ফ্লাইটের পর। বিশ্ব তো আর জানত না যে, আমি তৃতীয় বাচ্চা বহন করছি।’

ক্যারিয়ারের বাজে সময় পেছনে ফেলে ব্যাট হাতে এই মুহূর্তে দুর্দান্ত সময় কাটাচ্ছেন ওয়ার্নার। এমনকি দুই অনাগত সন্তান হারানোর ধাক্কা কাটিয়ে আবারও বাবা হচ্ছেন ওয়ার্নার। বাঁহাতি এই অজি ওপেনার জানিয়েছেন, তৃতীয় সন্তানের মুখ দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।

ওয়ার্নারের ভাষ্য, ‘অনাগত সন্তানের দিকে আমি অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছি। এর মধ্যে ক্রিকেটে মনোযোগ দিতে হচ্ছে। দুটি ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে এই মুহূর্তে আমরা ভীষণ সুখী। আশা করছি, তৃতীয়জনও রবিবার আসবে। আমরা আসলেই এটার অপেক্ষায় আছি।’

প্রিয় খেলা/রুহুল