কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

প্রতীকী ছবি

‘দেশে কাগজ-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে ফাইভজি’

রাকিবুল হাসান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৭ মে ২০১৯, ২০:১৪
আপডেট: ১৭ মে ২০১৯, ২০:১৪

(প্রিয়.কম) দেশের জনগণ বা মোবাইল অপারেটর ফাইভজি সেবা প্রদানের জন্য এখনো সক্ষমতা অর্জন করেনি। এ ছাড়া উন্নতি হয়নি থ্রিজি-ফোরজি সেবা। এরই মধ্যে ফাইভজি সেবা চালু করলে তা কাগজ-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে বলে আশঙ্কা করছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।

আর এসবের জন্য টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে দুষছে সংগঠনটির নেতারা।

১৭ মে, শুক্রবার রাজধানীর তোপখানা রোডস্থ বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদের সেমিনার হলে ‘বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এমন আশঙ্কা এবং অভিযোগের কথা তুলে ধরেন সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ।

বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সরকার খুব দ্রুতই ফাইভজি মোবাইল ইন্টারনেট সেবা জনগণকে দিতে চায়। মাননীয় টেলিযোগাযোগমন্ত্রী বলেছেন যে, ২০২০-২০২১ সালের মধ্যে ফাইভজি চালু করবে সরকার। কিন্তু আমাদের প্রশ্ন, ফাইভজি চালু করার জন্য আমরা কি প্রস্তুত? এমনকি অপারেটররা? কেউই না। তবে সরকার কীভাবে ফাইভজি আনতে চাচ্ছে, তা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সবসময় স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, ন্যায়পরায়ণতা এবং দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে নির্দেশ দিলেও অন্যান্য মন্ত্রণালয় পালন করলেও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় ও নিয়ন্ত্রণ কমিশন এর বাইরে। এ খাতের নিয়ন্ত্রণ কমিশনের কোনো প্রকার জবাবদিহিতা নেই। এই কমিশন ২০১৬ সালে গ্রাহকদের অভিযোগ নিয়ে গণশুনানি করেও আজ পর্যন্ত তার ফলাফল ঘোষণা করেনি।’

ভয়েস কলরেট বৃদ্ধি করার জন্য গ্রাহকদের মতামত না নিয়েই ভয়েস কলরেট বৃদ্ধি করা হয়েছে—এমন অভিযোগ তুলে মহিউদ্দিন বলেন, ‘ইন্টারনেটের মূল্য ও ভয়েস কলরেটের মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের মতামতের তোয়াক্কা করে না এই প্রতিষ্ঠান (টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন)। এরই ধারাবাহিকতায় অপারেটররা যত্রতত্র অফার, কলরেট বৃদ্ধি, কলড্রপ, ইন্টারনেট প্যাকেজে প্রতারণা করেই যাচ্ছে। যখন যে প্রযুক্তি তারা প্রয়োজন মনে করছে, সে প্রযুক্তি যাচাই-বাছাই না করেই বা গ্রাহকদের সামর্থ্যের কথা চিন্তা না করেই গ্রাহকদের ওপরে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের সাথে গ্রাহকদের ডিভাইস পরিবর্তনের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে গ্রাহক কী অর্জন করল? তা ভেবে দেখা দরকার।’

‘আবার অপারেটররাও তরঙ্গ ক্রয়, সিম রিপ্লেসমেন্ট ও নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ বাবদ বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করে উঠতে না উঠতেই নতুন বিনিয়োগ আসার ফলে মানসম্পন্ন সেবার চাইতে প্রতারণামূলক সেবাই গ্রাহকরা বেশি পাচ্ছে। মধ্যস্বত্বভোগী অপারেটর আইজিডব্লিউ, আইসিএক্স, এনটিটিএন, এমএনপি ও নেটওয়ার্ক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো প্রকার জবাবদিহিতা নেই। অথচ গ্রাহকদের প্রদেয় অর্থেই প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হয়। গ্রাহকদের সুসংগঠিত না হওয়ার দুর্বলতাকেও এরা কাজে লাগাচ্ছে। সবচাইতে অবাক ব্যাপার, মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশও কমিশন বা অপারেটররা পালন করছে না।’

বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের এই সভাপতি বলেন, ‘গ্রাহকদের মনে প্রশ্ন যেখানে থ্রিজি পাওয়া যায় না সেখানে নামে মাত্র ফোরজি দিয়েছে সরকার। এমতাবস্থায় যদি ফাইভজি প্রযুক্তি আসে তাহলে এটি শুধু কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে। গ্রাহকরা এর সুবিধা ভোগ করতে পারবে না।’

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, প্রকৌশলী উৎপল চন্দ্র দাস, আইটি প্রকৌশলী তন্ময় মালাকার, আমিনুল ইসলাম বুলু, অ্যাড. আবু বকর সিদ্দিক, বাপ্পী সরদার, আমানুল্লাহ মাহফুজ, রাজু আহমেদ খান, আক্তার হোসেন প্রমুখ।

প্রিয় প্রযুক্তি/আজাদ চৌধুরী