কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান (বামে); সরবত পানের প্রতীকী ছবি (ডানে)। ছবি: সংগৃহীত

এমডিকে ওয়াসার পানি দিয়ে সরবত পান করানোর উদ্যোগ!

আমিনুল ইসলাম মল্লিক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২২ এপ্রিল ২০১৯, ১৬:৩৬
আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৯, ১৬:৩৬

(প্রিয়.কম) ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খানকে ওয়াসার পানি দিয়ে সরবত বানিয়ে পান করানোর উদ্যোগ নিয়েছেন রাজধানীবাসী।

আগামীকাল ২৩ এপ্রিল, মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে কারওয়ান বাজারের ওয়াসা ভবনে তাকসিম এ খানকে সরবত পান করানো হবে বলে জানা গেছে।

জানতে চাইলে ওয়াসার পানি দিয়ে সরবত পান করানোর উদ্যোক্তা মিজানুর রহমান প্রিয়.কমকে বলেন, ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পূর্ব জুরাইন এলাকা থেকে পানি নিয়ে যাওয়া হবে। চিনিসহ সরবত তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ নিয়ে যাওয়া হবে ঢাকা ওয়াসার এমডিকে সরবত খাওয়ানোর জন্য।’

মিজান আরও বলেন, ‘এমডি সাহেব যদি ডায়াবেটিসের রোগী হন, সে ক্ষেত্রে চিনি ছাড়াই ওনাকে সরবত তৈরি করে খাওয়াব।’

সম্প্রতি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) গবেষণা উপস্থাপন করে জানায়, ঢাকা ওয়াসার পানির নিম্নমানের কারণে ৯৩ শতাংশ গ্রাহক বিভিন্ন পদ্ধতিতে পানি পানের উপযোগী করেন। এর মধ্যে ৯১ শতাংশ গ্রাহকই পানি ফুটিয়ে পান করেন। গৃহস্থালি পর্যায়ে পানি ফুটিয়ে পানের উপযোগী করতে প্রতি বছর আনুমানিক ৩৩২ কোটি টাকার গ্যাসের অপচয় হয়। ‘ঢাকা ওয়াসা: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক ওই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলে টিআইবি। রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

এরপর গত ২০ এপ্রিল, শনিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) কর্তৃক ওয়াসার পানি নিয়ে সদ্য প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনের প্রেক্ষাপটে সংবাদ সম্মেলন করেন ঢাকা ওয়াসার এমডি। ওই সময় তাকসিম এ খান বলেন, ‘এটি কোনো প্রফেশনাল গবেষণা নয়, এটি একটি একপেশে প্রতিবেদন। এটি তাদের মন গড়া।’

তিনি বলেন, ‘টিআইবির প্রচারণার ধরন, কৌশল ও অ্যাপ্রোচ দেখে এটা সহজেই দৃষ্টিগোচর হচ্ছে যে, গবেষণার সুনির্দিষ্ট তিনটি উদ্দেশ্যের রেশ ধরে আরোপিত পারসেপশনভিত্তিক মনগড়া তথ্য দিয়ে ঢাকা ওয়াসাকে জনসম্মুখে হেয় প্রতিপন্ন করাই ছিল মূল লক্ষ্য।’

টিআইবিকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, ‘পানির সংযোগ এবং গভীর নলকূপ স্থাপনের জন্য অনলাইনে আবেদনের কারণে অনিয়ম ও দুর্নীতির কোনো সুযোগ নেই। মিটার রিডার যাতে বাড়ির মালিকদের সঙ্গে যোগসাজশ না করতে পারে সে জন্য ইতোমধ্যে মিটার অটোমেশন পাইলটিং সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে। অচিরেই ঢাকা ওয়াসার পানির মিটারকে অটোমেশনের আওতায় আনা হবে।’

অভিযোগ গ্রহণ ও নিষ্পত্তির বিষয়ে টিআইবির অভিযোগ ভিত্তিহীন উল্লেখ করে তাকসিম এ খান বলেন, ‘অভিযোগ গ্রহণ ও নিষ্পত্তির বিষয়ে ঢাকা ওয়াসা অত্যাধুনিক ওয়াসা লিংক ১৬ হাজার ১৬২ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। যেখানে গ্রাহকের দায়ের করা প্রতিটি অভিযোগ কণ্ঠ রেকর্ড করা হয়।’

‘জুলাই ২০১৮ থেকে মার্চ ২০১৯ পর্যন্ত ১১ হাজার ৩৬৭ অভিযোগ পাওয়ার বিপরীতে ১১ হাজার ২০৫টি অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়। নিষ্পত্তির সংখ্যাই বলে দেয় এখানে অনিয়ম, হয়রানি, দুর্নীতি, ঘুষ বা নিয়মবহির্ভূত অর্থ আদায় ও দায়িত্ব পালনে অবহেলার কোনো সুযোগ নেই।’

তিনি বলেন, ‘ঢাকা ওয়াসার নিম্নমানের পানির কারণে প্রতি বছর পানি ফোটানোতে অপচয় ৩৩২ কোটি টাকা। ঢাকা ওয়াসাকে নিয়ে টিআইবি যে গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছে, তা কোনো গবেষণালব্ধ তথ্য না, এটি সম্পূর্ণ হাইপোথেটিক্যাল এবং বাস্তব বিবর্জিত।’

প্রিয় সংবাদ/আজাদ চৌধুরী