কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

বিপিও সামিটের উদ্বোধন শেষে স্টল পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। ছবি: সংগৃহীত

জমজমাট আয়োজনে চলছে বিপিও সামিট ২০১৯

রাকিবুল হাসান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২২ এপ্রিল ২০১৯, ১৩:২৬
আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৯, ১৩:২৬

(প্রিয়.কম) জমজমাট আয়োজনে চলছে বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০১৯। সামিটের প্রথম দিনের মতো দ্বিতীয় দিনেও সামিট জুড়ে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও তরুণ দর্শনার্থীদের ভিড়।

অংশ নেওয়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্টল ঘুরে চাকরি প্রত্যাশীদের সিভি জমা দিতেও দেখা গেছে। কেউ কেউ জেনে নিচ্ছেন আউটসোর্সিং খাতের অজানা তথ্য। আবার কোনো কোনো দর্শনাথী অংশ নিচ্ছেন সেমিনারে। জেনে নিচ্ছেন অভিজ্ঞদের সাফল্যের কথা।

জানা গেছে, এবার সামিট থেকে বেশ কিছু চাকরি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে আয়োজক ও অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর। সেজন্য সিভিও সংগ্রহ করছে প্রতিষ্ঠানগুলো। যেখান থেকে নির্বাচিতরা মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে চাকরি পেয়ে যাবেন। বিপিও খাতের এ সামিট শেষ হবে আজ ২২ এপ্রিল সোমবার।

শেষ দিনের সেমিনার:

আজ সামিটের দ্বিতীয় দিন ২২ এপ্রিল সোমবার বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত বলরুমে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘ফ্রিল্যান্সার টু এন্টারপ্রেনিওর’ শিরোনামে দিনের প্রথম আয়োজন। একই সময় সুরমা হলে হয় ‘ব্যাংকিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস বিপিও: ইমাজিং রিস্ক ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি ট্রেন্ডস’ শিরোনামে সেমিনার। বেলকনি হলে বেলা ১১টায় ‘হেলথ্ কেয়ার আউটসোর্সিং’ শিরোনামে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

দুপুর ২টার দিকে শুরু হবে দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় পর্বের আয়োজন। সুরমা হলে অনুষ্ঠেয় ‘রুরাল বিপিও: দ্য নিউ হরিজন অব ইমপ্লয়মেন্ট ফর ইয়ং ভিলেজার্স অব বাংলাদেশ’ সেমিনারটি চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ২টার সময় মেঘনা হলে শুরু হওয়া ‘অপোরচুনিটিস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জেস অব উইমেন ওয়ার্কিং ইন বিপিও’ শিরোনামের সেমিনারটি চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

চতুর্থ বিপিও সামিট ২০১৯-এর সর্বশেষ সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে বেলকনি হলে। দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে ‘আউটসোর্সিং টেলিকমিউনিকেশন সার্ভিসেস’ সেমিনার এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে বলরুমে শুরু হবে চতুর্থবারের মতো অনুষ্ঠিত বিপিও সামিটের সমাপনী অনুষ্ঠান।

বিপিওতে চার হাজার ৮০০ রকমের কাজ আছে:

সামিটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর বলরুমে অনুষ্ঠিত হয় ‘বিপিও এজ এ ক্যারিয়ার ফর ইয়ুথ অ্যান্ড লেবারজিং বিপিও ফর ইমপ্লয়মেন্ট’ শিরোনামে সেমিনার। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

সেমিনারে মোস্তাফা জব্বার বলেন, বিপিওতে চার হাজার ৮০০ রকমের কাজ আছে। আমাদের তরুণরা যে এর মধ্যে কোন একটি কাজ করতে পারবে না এমন নয়। সে জন্য চাই নিজের প্রচেষ্টা।

ওয়ার্ল্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিসেস অ্যালায়েন্সের মহাসচিব জেমস পয়সান্ট তার বক্তব্যে তরুণদের উদ্দেশে বলেন, পেশা কি হবে সেটা নিজের কাছে। তবে যেটাতে আপনি সবচেয়ে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন সেটাই পেশা হিসেবে নেওয়া দরকার। বিপিওর কথা বলতে গেলে, এটা সম্পূর্ণই একটা আনন্দদায়ক মনোভাবে থাকার পেশা।

তিনি তরুণদের উদ্দেশ্যে বলেন, ইন্টারনেট আমরা সবাই ব্যবহার করি। কিন্তু সেটা কোন উদ্দেশ্য নিয়ে ব্যবহার করছি সেটাই মূখ্য। আমরা এখন সবকিছুই ইন্টারনেটেই পাই। তাই এটাকে ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করতে হবে।

সিএনসি ডেটার এমডি রাজ মহান ভাইরামুথু বলেন, তরুণরা চাইলে যেকোনো দেশ বদলে দিতে পারে। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, বাংলাদেশের তরুণরা এখন খুব ভালো কাজ করছে। বিপিও খাতটিও তাদের জন্য এগিয়ে যাবে।

সেমিনারটিতে বক্তা এবং প্যানেলিস্ট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব জিয়াউল আলম, ওয়ার্ল্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিসেস অ্যালায়েন্সের মহাসচিব জেমস পয়সান্ট, আইসিটি বিভাগের ডিজি এএমএ আরশাদ হোসেন, দ্য উইনারস সার্কেলের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ওয়াজেদ সালাম, সিএনসি ডেটা (এলএলসি) এমডি রাজ মহান ভাইরামুথু, রেডিসন টেকনোলজিসের এমডি দেলোয়ার হোসেন ফারুক। সেমিনারটি পরিচালনা করেন বাক্যর সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন।

৯৯৯ এবং ৩৩৩ জনপ্রিয়তা পেয়েছে:

বেসরকারি কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে সেবা নিতে একটি নীতিমালা করতে যাচ্ছে সরকার। বিপিও সামিটের প্রথম দিন ‘গভার্নমেন্ট প্রসেস আউটসোর্সিং: স্টেপস ফরোয়ার্ড’ শীর্ষক এক সেমিনারে এ তথ্য জানান।

বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থ প্রতীম দেব। তিনি বলেন, বর্তমানে সরকারের ৫৪ প্রকারের সেবা আছে। এগুলোর মধ্যে কোন কোন সেবা আউটসোর্সিং করা যাবে আর কোনটা করা যাবে না তার তালিকাও থাকবে নীতিমালায়।

পার্থ প্রতীম দেব বলেন, তারা আউটসোর্সিংয়ের নীতিমালার একটি খসড়া তৈরি করেছেন এবং বেসরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে এটি চূড়ান্ত করবেন। নীতিমালাটি হয়ে গেলে তখন সরকারের অনেক কাজই বেসরকারি কোম্পানিগুলো করে দিতে পারবে বলেও জানান তিনি।

সেমিনারে অংশ নিয়ে মন্ত্রীপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি সরকারি সেবা আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে বেসরকারি কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে, যার মধ্যে হজ্জ্ব ব্যবস্থাপনা অন্যতম। তাছাড়া সেবা হিসেবে ৯৯৯ এবং ৩৩৩ বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তবে ভূমি ব্যবস্থাপনাসহ আরও কিছু সেবা আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়ে আসতে পারলে তা জনগণের অনেক কাজে লাগতো এবং তাতে সরকারের খরচও কমতো। তবে খুব বেশি সরকারি সেবা আউটসোর্সিংয়ে না যাওয়ার ক্ষেত্রে তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের মানসিকতাকেও দায়ী করেন। একই সঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বেসরকারি খাতকে আহ্বান জানান আমলাদের মানসিকতা পরিবর্তনে সহায়তা করতে।

সেমিনারের সঞ্চালক ছিলেন বেসিসের সাবেক সভাপতি হাবিবুল্লাহ এন করিম। তিনি বলেন, সেবাখাত আউটসোর্সিংয়ে নিয়ে আসা গেলে তা সরকারের খরচ কমাতে সহায়তা করবে। একই সঙ্গে সেবার মানও আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় ভালো হবে।

সেমিনারে বাংলাদেশ কম্পিউার সমিতির সাবেক সভাপতি আবদুল্লাহ এইচ কাফি বলেন, সিঙ্গাপুর সরকার তাদের প্রায় সব কাজই বেসরকারি খাতকে দিয়ে দিয়েছে। তাতে করে তাদের সরকারি সেবায় গতি যেমন আছে, নিশ্চিত হয়েছে সেবার গুণগত মানও। সেমিনারে আইসিটি অধিদফতরের ডেপুটি ডাইরেক্টর জেনারেল মালিহা নার্গিস বক্তব্য রাখেন।

এর আগে এ বছরের বিপিও সামিট উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব এন এম জিয়াউল আলম, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক। অনুষ্ঠানের শুরুতেই সূচনা বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কলসেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের (বাক্য) সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ।

প্রিয় প্রযুক্তি/রুহুল