অস্ত্র হাতে মসজিদে প্রবেশ করছেন হামলাকারী। ছবিটি হামলার ভিডিও ফুটেজ থেকে নেওয়া
ভাইরাল ভিডিও মুছে ফেলতে কতটা সক্ষম সোশ্যাল মিডিয়া?
আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৯, ১৮:৫১
(প্রিয়.কম) নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলার সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভ করেন হামলাকারী। কিছুক্ষণের মধ্যেই লাইভ করা ভিডিওটি ফেসবুকসহ অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায়ও ভাইরাল হয়ে পড়ে।
এ ঘটনার পর সমালোচনা ও তোপের মুখে পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো। প্রশ্ন ওঠে, এই ধরনের ভিডিও তাৎক্ষণিক সরাতে কতটা সক্ষম প্রতিষ্ঠানগুলো।
লাইভ ভিডিও সরিয়ে ফেলতে প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা এবং ব্যর্থতা নিয়ে সম্প্রতি প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিবিসি বাংলা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্নও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, এ ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলোকে অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।
ফেসবুকের দাবি, এ ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিজেদের প্ল্যাটফর্ম থেকে সরানো হয়েছে ১৫ লাখের বেশি ভিডিও।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ জাকারিয়া স্বপন বিবিসিকে জানান, ১৫ মিনিটের ওই লাইভ ভিডিওটি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে গেছে। বর্তমানে ফেসবুকে প্রায় ২০০ কোটির ওপর ব্যবহারকারী রয়েছে। তারা মাসে একবার হলেও ফেসবুক ব্যবহার করেন। প্রতিদিন প্রায় দেড়শ কোটি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করেন। এই দেড়শ কোটি মানুষ প্রতিদিন আটশ কোটিবার ভিডিও দেখেন। এর মধ্যে ২০ শতাংশ লাইভ ভিডিও।
তিনি বলেন, ‘এই বিশাল কমিউনিটির ভেতর মানুষ যত ভিডিও আপলোড করছেন বা লাইভ করছেন, এটিকে রিয়েলটাইম মনিটর করতে পারে না ফেসবুক। এটির প্রযুক্তিগত কিছু সমস্যা রয়েছে। একটি ছবি আপলোড করার পর ওই ব্যক্তিকে চিনতে যেমন সময় লাগে কম্পিউটারের, তেমনি একটি ভিডিও আপলোডের পর ভিডিওটি কীসের সেটা বুঝতেও সময় লাগে।'
‘এখন পর্যন্ত ফেসবুকে মানুষ যেভাবে লাইভ করে, যে কেউ চাওয়া মাত্র সরাসরি লাইভে যেতে পারে এবং শেয়ার করতে পারে, এতে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে ভিডিওটি দেখতে পারে। সেই হিসেবে লাইভ করার আগে কোনোরকম মডারেশন বা কোন ধরনের কনটেন্ট যাবে সেই ধরনের কোনো পলিসি বা সিস্টেম এখন পর্যন্ত ফেসবুকের কাছে নেই। যখন কোনো ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়, সেটা ফেসবুক কিছুক্ষণের মধ্যে বুঝতে পারে। তারা বুঝতে পারে, এই ভিডিওগুলো বা কনটেন্টগুলো ভাইরাল হয়ে যাচ্ছে বা মানুষ এগুলোর পেছনে প্রচণ্ডভাবে ছুটছে। তখন ফেসবুক তার অ্যালগরিদমের মাধ্যমে বলতে পারে যে, এই ভিডিওটি বন্ধ করে দেই।’
ভিডিওটির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভিডিওটি অনেকটা গেমের মতো। যেগুলো ভিডিও গেমসে হয়, সেগুলোর মতো অনেকটা। একটি মেশিনের পক্ষে বোঝা কঠিন যে এটি কোনো গেমের লাইভ না অন্যকিছু।’
এসব ভাইরাল ভিডিওর দায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিতে হবে বলেও মনে করেন এই প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ।
১৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের এক মসজিদে হামলা চালায় এক বন্দুকধারী। এই ঘটনায় এখন মারা গেছেন ৫০ জন। আহত রয়েছেন আরও শতাধিক। হামলার মুহূর্তটি সরাসরি লাইভ করেন হামলাকারী।
প্রিয় প্রযুক্তি/রিমন