কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

কখন বুঝবেন ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত? ছবি: প্রিয়.কম

গর্ভাবস্থায় পেটে ব্যথা—কখন দেখাবেন ডাক্তার?

কে এন দেয়া
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ১২ মার্চ ২০১৯, ২১:৪৪
আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৯, ২১:৪৪

(প্রিয়.কম) গর্ভাবস্থায় পেটে ব্যথা হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। এর পেছনে ছোটখাটো শারীরিক সমস্যা থেকে শুরু করে গুরুতর কোনো কারণ থাকতে পারে। কিন্তু কী করে বুঝবেন এই পেট ব্যথা ডাক্তার দেখানোর মতো গুরুতর?

গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে হালকা ব্যথা হতে পারে পেটে। বেশির ভাগ সময় ইউটেরাস বা জরায়ু বৃদ্ধির কারণে এই ব্যথা হতে পারে। তবে এই ব্যথা যদি তীব্র হয় ও তার সাথে কোনো রক্তপাত থাকে, তাহলে অবশ্যই ডাক্তার দেখাতে হবে যত দ্রুত সম্ভব। ব্যথার কারণ ও উপসর্গগুলো দেখে নিন।

১) মিসক্যারিজ

গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে মিসক্যারিজ হয় বেশি। আট সপ্তাহের মাঝে মিসক্যারিজের লক্ষণ হতে পারে হালকা থেকে ভারী রক্তপাত, পেটে তীব্র ব্যথা এবং হালকা থেকে তীব্র পিঠ ব্যথা।

২) রাউন্ড লিগামেন্ট পেইন

গর্ভাবস্থায় বাড়ন্ত ভ্রূণের জায়গা তৈরি করতে জরায়ু বৃদ্ধি হয়। দুটি লিগামেন্ট এই কাজে সাহায্য করে। তলপেট, কুঁচকি ও উরুতে এ সময়ে ব্যথা হতে পারে। সকালে ঘুম থেকে ওঠা, কাশি ও হাঁচি দেওয়ার সময় বেশি ব্যথা হতে পারে। লিগামেন্টগুলোতে টান পড়ার কারণে এ ব্যথা হতে পারে এবং তা হওয়াতে ভয়ের কিছু নেই।

৩) এক্টপিক প্রেগনেন্সি

জরায়ুর বাইরে, বিশেষ করে ফ্যালোপিয়ান টিউবে ভ্রূণ বড় হতে পারে। আলট্রাসাউন্ড করে তা নিশ্চিত হওয়া যায়। কিন্তু আলট্রাসাউন্ডের আগে যদি আপনি টেস্ট করে জেনে থাকেন আপনি গর্ভবতী এবং পেটে ব্যথা হয়, তাহলে তা এক্টপিক প্রেগনেন্সি হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ ক্ষেত্রে আলট্রাসাউন্ড করে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে।

৪) ফিটাল মুভমেন্ট

গর্ভে ভ্রূণের নড়াচড়ার কারণে কয়েক সেকেন্ড এমনকি কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যথা থাকতে পারে। এই ব্যথা হতে পারে পাঁজরের নিচে, পেটে বা শ্রোণি অঞ্চলে।

৫) ব্র্যাক্সটন হিকস কনট্রাকশন্স

গর্ভাবস্থার শেষের দিকে এই ব্যথা হতে পারে, কিন্তু তিন মাসের পর থেকেও তা দেখা দিতে পারে। অনেকটা লেবার পেইনের মতো। এই ব্যথা হলে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। তবে সাধারণত তা খুব একটা কষ্টকর হয় না।

৬) প্রসব বেদনা

কিছু ক্ষেত্রে ৩৭ সপ্তাহের আগেই প্রসব বেদনা দেখা দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে তলপেট ও পিঠে ব্যথার পাশাপাশি থাকতে পারে ইউটেরাইন কনট্রাকশন্স, রক্তপাত ও পানি ভাঙা। এমনকি পিরিয়ডের সময় যেমন ব্যথা হয়, তেমন ব্যথাও দেখা দিতে পারে। ৩৭ সপ্তাহের পরে এই ব্যথা হলে তাকে প্রসব বেদনা বলেই ধরে নেওয়া যায়।

৭) কোষ্ঠকাঠিন্য বা পেটের অন্য কোনো সমস্যা

গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য হতে দেখা যায় খুব। কোষ্ঠকাঠিন্যের ব্যথা বেশ তীব্র হতে পারে, এমনকি ছুরির মতো তীক্ষ্ণ ব্যথাও অস্বাভাবিক নয়। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর না হলে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন। এর পাশাপাশি পেটে গ্যাস জমে থাকা, ডায়েরিয়া, বমি—এগুলোও দেখা দিতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে গর্ভবতী নারীর অ্যাপেন্ডিসাইটিস হতে পারে। পেটের নিচে, ডান দিকে তীব্র ব্যথা, বমির প্রবণতা দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার দেখানো উচিত।

৮) ওভারিয়ান সিস্ট

তলপেটের যেকোনো এক দিকে ব্যথা দেখা দিলে হয়তো আপনার কোনো একটি রাপচারড বা টুইস্টেড ওভারিয়ান সিস্ট আছে। গর্ভবতী নারীর শরীরে তা হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে, কিন্তু হওয়াটা অসম্ভব নয়। এই ব্যথা যদি ক্রমে বাড়তে থাকে, তাহলে অবশ্যই জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে যাওয়া উচিত।

৯) কিডনিতে পাথর বা ইনফেকশন

অনেক সময় গর্ভাবস্থায় ইউরিন ইনফেকশন হয় ও তা কিডনিতে ছড়িয়ে যায়, ফলে পেটের পাশে ও পিঠে ব্যথা হয়। কিডনি ইনফেকশন বা কিডনির পাথরে একই ধরনের ব্যথা হতে পারে। এর পাশাপাশি থাকতে পারে জ্বর। এই সমস্যাটির চিকিৎসা দ্রুত করা উচিত, নয়তো মা ও শিশু উভয়ের জীবনই ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট