কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

পরকীয়া মানেই গোপনীয়তা। ছবি: সংগৃহীত

পরকীয়ার শিকার হচ্ছেন না তো আপনি?

কে এন দেয়া
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ০৯ মার্চ ২০১৯, ১২:৩৩
আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৯, ১২:৩৩

(প্রিয়.কম) আপনি ভাবছেন আপনার জীবনসঙ্গী খুবই ভালো মানুষ, তিনি আপনার সঙ্গে খুবই ভালো আচরণ করেন, তার পক্ষে পরকীয়া করা সম্ভবই নয়। কিন্তু পরকীয়া মানেই গোপনীয়তা। স্বামী বা স্ত্রী আপনার অজান্তেই অন্য কারো সঙ্গে প্রেম করবেন, আপনার সঙ্গেও সংসার চালিয়ে যাবেন এবং আপনার কাছে থেকে পরকীয়া লুকিয়ে রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন, সেটাই দেখা যায় সচরাচর। একই সঙ্গে দুজন মানুষের সঙ্গে জীবন চালিয়ে যাওয়াটা কৌশলের ব্যাপার, আর তা করতে গিয়ে এসব মানুষ বেশ কিছু ভুল করে বসেন, যা লক্ষ করলে বোঝা যায়। জেনে নিন পরকীয়ার এসব সূক্ষ্ম লক্ষণ।

১) দেরি করে বাড়ি ফেরা

হয়তো আপনার স্বামী বা স্ত্রী নিয়মিত বাড়ি ফেরেন সন্ধ্যা ৬টায়। বাড়ি ফিরে তিনি এক কাপ চা পান করেন, কিছুক্ষণ বই পড়েন বা টিভি দেখেন, হয়তো বাচ্চাদের পড়ায় সাহায্য করেন, এরপর তিনি রান্না করেন বা আপনাকে রান্নায় সাহায্য করেন; সবশেষে গোসল করে ঘুমাতে যান। ভেবে দেখুন তো, হুট করে কি এই রুটিনে ব্যাঘাত ঘটেছে? তিনি কি প্রায়ই দেরি করে বাড়ি ফিরছেন কোনো কারণ ছাড়াই? এটা হতে পারে পরকীয়ার একটি লক্ষণ।

২) তিনি নিজের ‘বন্ধুদের’ বেশি সময় দিচ্ছেন

আগে হয়তো আপনারা দুজনে মিলে শুক্রবার রাতে বেড়াতে যেতেন, প্রিয় কোনো রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়া করতেন, সিনেমা দেখতেন। ইদানীং তিনি আপনার সঙ্গে নয়, বরং বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে যান এবং তখন আপনাকে সঙ্গে নেওয়ার অনুরোধ এড়িয়ে যান। এ ছাড়া আগে হয়তো বাচ্চাদের অনেক সময় দিতেন, এখন চরম অবহেলা করছেন। হয়তো তিনি বন্ধু নন, বরং প্রেমিক বা প্রেমিকার সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন।

৩) তিনি নিজের কাপড় নিজেই ধুয়ে ফেলছেন

এ দেশে যেহেতু মেয়েরাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ঘরের কাজগুলো করেন, তাই চট করে স্বামী নিজের কাপড় নিজে ধোয়া শুরু করলে তারা খুশিই হন। ভাবেন তার কাজ একটু কমে গেল। কিন্তু কেন এই পরিবর্তন, ভেবেছেন কি? হয়তো তিনি পোশাকে মেকআপের দাগটুকু লুকানোর চেষ্টা করছেন বা ভাবছেন পকেটে থাকা রেস্টুরেন্টের বিলটা আপনার হাতে পড়লে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে।

৪) মোবাইল ফোন নিয়ে লুকোচুরি

আপনার স্বামী বা স্ত্রীর ফোনে আগে কখনোই পাসওয়ার্ড বা কোনো ধরনের লক ছিল না, আপনি এমনকি আপনার শিশুও ফোনটা নিয়ে খেলত যখন-তখন। কিন্তু হুট করেই তিনি মোবাইল নিয়ে খুব সিরিয়াস হয়ে গেলেন। তার ফোনে কেউ হাতও দিতে পারে না। বিবাহিত জীবনে দম্পতিরা পাসওয়ার্ড শেয়ার করবেন কি না এটা নিতান্তই তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার, কিন্তু ফোন নিয়ে এতটাই লুকোচুরি আসলে সন্দেহ করার মতো বই কি! অন্যদিকে আপনি যদি কোনোভাবে সন্দেহ করে ফেলেন যে তিনি পরকীয়া করছেন এবং তার ফোন দেখতে চান, তিনি চট করে ফোন দিয়ে দিলেও আসলে সন্দেহ ছুড়ে ফেলা যায় না। কারণ তার অন্য একটি ফোন থাকতে পারে, যা ব্যবহার করে তিনি পরকীয়া করছেন।

৫) অকারণেই গিফট

কোনো দিবস নেই, কোনো কারণ নেই, এর পরেও আপনাকে দামি একটা গিফট দিলেন আপনার স্বামী বা স্ত্রী। তিনি হয়তো এমন কিছু করে ফেলেছেন, যাতে অপরাধবোধ হচ্ছে তার। এই অপরাধবোধ থেকেই তিনি আপনার জন্য গিফট নিয়ে এসেছেন। আপনি নিজেই প্যাটার্নটা ধরতে পারবেন। তিনি কি অফিস ট্যুরের পর আপনার জন্য দামি একটা গিফট নিয়ে এসেছেন? রাত্রে দেরি করে বাসায় ফিরছেন নিয়মিত, এ কারণে বাসায় ফেরার পথে ফুল নিয়ে আসছেন? তাকে আপনি জিজ্ঞেস করতে পারেন, ‘গত কয়েক মাস থেকে তুমি আমার জন্য হুটহাট গিফট নিয়ে আসছো, আগে তো তা করতে না! কী এমন হয়েছে যে গিফট দেওয়া শুরু করলে?’ তার উত্তর ও অভিব্যক্তি থেকেই আপনি আঁচ করতে পারবেন আড়ালে কিছু চলছে কি না।

৬) ‘বিশেষ’ একটি বন্ধু

ফেসবুক বন্ধুরা একজন বিবাহিত মানুষের সাথে ছোটখাটো ঠাট্টা-তামাশা করতে পারেন। কিন্তু বিপরীত লিঙ্গের একজন মানুষ সাধারণত বেশ সংযম রেখেই কমেন্ট করবেন ও মেসেজ পাঠাবেন। বিপরীত লিঙ্গের একজন বন্ধু (বিশেষ করে আপনার অপরিচিত, নতুন বন্ধু) যদি আপনার স্বামী বা স্ত্রীকে রসালো, ইঙ্গিতপূর্ণ মেসেজ পাঠাতে থাকে বা কমেন্ট করতে থাকে, তাহলে আপনি চিন্তিত হতেই পারেন।

৭) মানসিক ও শারীরিক দূরত্ব

দাম্পত্যে হুট করে শারীরিক দূরত্ব দেখা দেওয়াটা কখনোই কাম্য নয়। হয়তো তিনি কোনো দুশ্চিন্তায় আছেন, তিনি অসুস্থ হতে পারেন বা ব্যস্ত আছেন। এসব ক্ষেত্রে তার সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলুন। কিন্তু কোনো স্পষ্ট কারণ না থাকলে হয়তো এর পেছনে পরকীয়া থাকতে পারে। মানসিক দূরত্বকেও অবহেলা করবেন না। আপনার প্রিয় মানুষটি হঠাৎ করেই নিরাসক্ত আচরণ করছেন। কোথায় যাচ্ছেন, কী করছেন এ বিষয়ে আপনাকে জানাচ্ছেন না। দাম্পত্য সম্পর্কে এমনটা হওয়া স্বাভাবিক নয়। অথবা তিনি হয়তো নতুন একটি কাজের অজুহাত দিয়ে (যেমন বাইরে জগিং করতে যাওয়া) ঘণ্টার পর ঘণ্টা দূরে থাকছেন—এমনটা হওয়া স্বাভাবিক নয়। তা নিয়ে খোলাখুলি কথা বলার চেষ্টা করুন। তিনি লুকোচুরি করলে বুঝতে হবে পেছনে কোনো সমস্যা আছে।

সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট

প্রিয় লাইফ/আজাদ চৌধুরী