আসন্ন ওয়ানডে বিশ্বকাপের টিভি সম্প্রচার নিয়ে অভিনব এক ভাবনা রয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি)। ছবি: সংগৃহীত
অভিনব সম্প্রচার ভাবনা, ২০১৯ বিশ্বকাপে থাকবে না ধারাভাষ্যকার!
আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৯, ১০:২৭
(প্রিয়.কম) বিশ্বকাপ ক্রিকেটের বাকি মাত্র চার মাস। চলতি বছরের ৩০ মে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের মাঠে গড়াবে ১২তম ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে নানা জল্পনা-কল্পনা। কেমন হবে বিশ্বকাপ? কারা হবে চ্যাম্পিয়ন? এমন অনেক প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে ক্রিকেট ভক্তদের মনে।
বিশ্বকাপকে সামনে রেখে রণ কৌশল সাজাতে বসে পড়েছেন টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর কোচ-নির্বাচকরাও। কাদের জায়গা দেওয়া হবে চূড়ান্ত স্কোয়াডে? বোলার বেশি নাকি ব্যাটসম্যান বেশি নেওয়া হবে? ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে পেসার বা স্পিনার কয়জন থাকবেন? এমনও নানা ভাবনায় ব্যতিব্যস্ত রয়েছেন তারা।
এর মাঝেই জানা গেল, আসন্ন ওয়ানডে বিশ্বকাপের টিভি সম্প্রচার নিয়ে অভিনব এক ভাবনা রয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলেরও (আইসিসি)। আর তা হলো বিশ্বকাপের ম্যাচগুলোতে স্টাম্প মাইক সবসময় খোলা রাখা। আর এমনটা হলে ধারাভাষ্যকারদের চাকরি নিয়েই যে টানাটানি পড়ে যাবে!
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ায় একটি ম্যাচে ধারাভাষ্যের বদলে সবসময় স্টাম্প মাইক খোলা ছিল। ওই ম্য়াচে দেখা গিয়েছিল, স্টাম্প মাইকে ম্য়াচ চলাালীন ক্রিকেটারদের কথোপকথন ধারাভাষ্যের থেকে বেশি উপভোগ করেছিলেন দর্শকরা।
এ দেখেই উদ্বুদ্ধ হয়েছেন বিশ্বকাপের ডিরেক্টর স্টিভ এলসওয়ার্থি। একজন ক্রিকেট ভক্ত হিসেবেই তিনি চান স্টাম্প মাইক সবসময় খোলা থাক। কারণ হিসেবে তিনি বলছেন, সমর্থকরা চায় তাদের নায়কদের আরও কাছাকাছি পৌঁছতে।
সাম্প্রতিক কালে স্টাম্প মাইক বেশ চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্টাম্প মাইকের জন্যই বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য করে শাস্তি পেয়েছেন পাকিস্তানের অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ। এই স্টাম্প মাইকেই ধরা পড়ে ক্যারিবীয় ক্রিকেটার শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের সমকামী-বিদ্বেষী মন্তব্য; যার জেরে শাস্তিও পেয়েছেন তিনি।
অস্ট্রেলিয়া-ভারত সিরিজে ঋষভ পান্ত-টিম পেইনের স্লেজিং তো জন্ম দিয়েছিল তুমুল আলোচনার। দুই উইকেটরক্ষকের কথার টক্কর বেশ উপভোগই করেছিল সমর্থকরা। বিভিন্ন টি-টোয়েন্টি লিগগুলিতেও অনেক সময় ধারাভাষ্য চলাকালে মাঠের ক্রিকেটারদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলা হয়, যা দর্শকরা উপভোগই করে থাকেন।
সবমিলিয়ে স্টাম্প মাইকের বিষয়টি বেশ স্পর্শকাতর। আর বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে এটা আরও অধিকতর স্পর্শকাতর হয়ে উঠবে বলেই মত এলসওয়ার্থির। তাই এ নিয়ে বোর্ড সভায় আলোচনা করেই তবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এর সুবিধা-অসুবিধা যাচাই না করে সিদ্ধান্ত নিলে তা হিতে বিপরীত হবে বলে মত তার।
আইসিসির প্রধান নির্বাহী ডেভিড রিচার্ডসন অবশ্য এমন কিছুর ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন। তার মতে, স্টাম্প মাইকের সার্বক্ষণিক ব্যবহার চালু করার আগে অনেক কিছুই ভাবনায় রাখতে হবে আইসিসিকে। এর মধ্যে ডিসিপ্লিনারি ইস্যুও রয়েছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, ক্রিকেটারদেরকেও এ ব্যাপারে প্রস্তুত করতে হবে।
কেননা, খেলা চলাকালীন একজন খেলোয়াড় বিভিন্ন রকম পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যায়। ওই সময় সে কি বলবে তা অনেক কিছুর ওপরই নির্ভর করছে। এ নিয়ে তার ভাষ্য, সুস্থ বিনোদনের জায়গা ক্রিকেট। এখানে দর্শকদের এমন কিছু শোনানো বা দেখানো উচিত হবে না যা সুস্থ বিনোদনের পরিপন্থি।
শুধু তাই নয়, সম্প্রচার সংস্থাদের কথাও ভাবছেন রিচার্ডসন। ধারাভাষ্যের মাধ্যমে যেভাবে সমর্থকদের কাছে পৌঁছানো যায়। স্টাম্প মাইক দিয়ে ততটা সম্ভব নয়। আইসিসির প্রধান এই নির্বাহী চান, সীমিত পরিসরে স্টাম্প মাইকের ব্যবহার করতে। এতে করে সমর্থকদের বিনোদন সুস্থ ও সুন্দর হবে বলে মনে করেন তিনি।
প্রিয় খেলা/রুহুল