কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

প্রতীকী ছবি

টনক নড়েছে টিকটকের, মুছে ফেলেছে ২ লাখ ভিডিও

রাকিবুল হাসান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৬:২৬
আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৬:২৬

(প্রিয়.কম) বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিরোধী ও অশ্লীল কন্টেন্ট থেকে ইন্টারনেটকে নিরাপদ রাখতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে বন্ধ করেছে পর্ন, জুয়াসহ ২০ হাজারেরও বেশি সাইট। ইউটিউব ও ফেসবুকে যারা অশ্লীল ভিডিও প্রকাশ করে, তাদেরও সতর্ক করা হয়েছে। স্বল্পদৈর্ঘ্যের ভিডিও তৈরির অ্যাপ টিকটকেও অনেক বিতর্কিত, অশ্লীল ও ব্যঙ্গাত্মক ভিডিও রয়েছে, এ নিয়ে সরকার কোনো ব্যবস্থা নিবে কিনা, তা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে প্রিয়.কম। এর এক সপ্তাহ পর টিকটকের টনক নড়েছে। তারা দাবি করছে, বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিরোধী প্রায় দুই লাখ ভিডিও মুছে ফেলেছে এবং ১৫০টি অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছে।

২৪ ফেব্রুয়ারি, রবিবার বাংলাদেশি একটি জনসংযোগ এজেন্সির মাধ্যমে প্রিয়.কমকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এমন তথ্যই দিয়েছে টিকটক কর্তৃপক্ষ।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ‘বাংলাদেশে বন্ধ হতে পারে টিকটক?’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে প্রিয়.কম। ওই সময় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানান, যা বাংলাদেশিদের জীবন-যাপন ও সংষ্কৃতির সঙ্গে কিছুর সঙ্গে যায় না, সেটার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেবে সরকার। এ নিয়ে সরকার কোনো ধরনের ছাড় দেবে না। নিরাপদ ইন্টারনেট করতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই ধারাবাহিকতায় টিকটকের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

প্রিয়.কমকে পাঠানো ওই বিবৃতিতে টিকটক বলছে, বাংলাদেশের মানুষ এবং সমাজের কল্যাণ ও নিরাপত্তা রক্ষার্থে সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বসমূহ সম্পূর্ণরূপে অনুধাবন করেছে টিকটক। মন্ত্রণালয়টির এমন পদক্ষেপকে পূর্ণ সমর্থন জানায় টিকটক কর্তৃপক্ষ।

বিবৃতিতে টিকটকের মুখপাত্র বলেন, ‘টিকটক প্ল্যাটফর্মে যেকোনো অবৈধ ও অনুপযুক্ত কনটেন্ট ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করি। আমরা সবসময় স্থানীয় আইন মেনে আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকি, বিশেষ করে দেশের মানুষ ও সমাজের নিরাপত্তা রক্ষার্থে নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গৃহীত ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট মেনে চলার ক্ষেত্রে আমরা খুবই যত্নবান। এর সাথে সংগতি রেখে আমরা নিম্নোক্ত আনুষ্ঠানিক বিবৃতিটি প্রদান করছি—

টিকটক, স্বল্পদৈর্ঘ্য মোবাইল ভিডিওগুলোর জন্য বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় মাধ্যম এবং আমরা একটি নিরাপদ ও ইতিবাচক ইন-অ্যাপ্লিকেশন কমিউনিটি নির্মাণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটি ব্যবহারকারীদের আবেগ এবং সৃজনশীল অভিব্যক্তিসমূহ ভিডিওর মাধ্যমে প্রকাশ করতে উৎসাহিত করে। আমাদের কমিউনিটি গাইডলাইনে সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত রয়েছে, টিকটক কোনো প্রকার অশ্লীল অথবা পর্নোগ্রাফিক কনটেন্টকে সমর্থন করে না। আমরা স্থানীয় আইন ও নীতিমালা মেনে চলার ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন এবং আমাদের ব্যবহারকারীগণও যেন সেগুলো মেনে চলে, তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি আমাদের প্ল্যাটফর্মকে অপব্যবহার থেকে রক্ষা করার জন্য রেগুলেটরের সাথে কাজ করার ব্যাপারেও আমরা সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

বিবৃতিতে দাবি করা হয়, টিকটক অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের শর্তাবলি এবং কমিউনিটি গাইডলাইন লঙ্ঘন করে, এমন অনুপযুক্ত ভিডিওগুলো মুছে ফেলার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। গত ৬ মাসে বাংলাদেশি ব্যবহারকারীদের দ্বারা তৈরি ভিডিওগুলো পর্যালোচনা করার পর, টিকটক কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে দুই লাখ ভিডিও মুছে ফেলেছে এবং কমিউনিটি গাইডলাইন লঙ্ঘন করেছে, এমন ১৫০টি অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হয়েছে।

টিকটকের এমন উদ্যোগে সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে জানতে চাইলে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার প্রিয়.কমকে বলেন, ‘ওরা কনটেন্ট ফিল্টারিং করবে এই আস্থা তো আগে তৈরি করতে হবে। বাজে জিনিস থেকে বাজে কন্টেন্ট আমাদের এখানে ঢুকবে না, এর নিশ্চয়তা কী? ওরা নিজেরা সতর্ক হলে এটি হতো না। এটি কেবল বাংলাদেশের না, পৃথিবীর সকল দেশের জন্য এটি কনসার্ন যে, আপনি যে কনটেন্ট দেবেন সেই কনটেন্ট সবার জন্য নিরাপদ। বিষয়টি যদি টিকটক ইনশিওর করত তাহলে তো খারাপ কনটেন্ট উঠত না।’

‘আপনি (টিকটক) এখন হঠাৎ করে চাপের মুখে পড়ে বলছেন, আমি ভালো মানুষ হয়ে যাব, কত দিন ভালো মানুষ থাকবেন, তা তো আমি জানি না। কোন সময়ে এর ভেতরে কি ঢুকে যাবে তা তো আমি জানি না। আমার কাছে আগে তারা প্রমাণ করবে যে তারা ভদ্র হয়েছে তারপরে...।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই ধারণা ভুল যে, আমরা কেবল পর্ন সাইট বন্ধ করছি, জুয়ার সাইট বন্ধ করছি। আমাদের কাজ পুরো ইন্টারনেটটিকে নিরাপদ করা। এর জন্য লিখিত বক্তব্য থেকে ছবি কিংবা ভিডিও কোনো কিছুকে বাদ দেওয়ার কিছু নাই।’

প্রিয় প্রযুক্তি/রিমন