বুকিং দেওয়ার আগেই জেনে নিতে পারেন হোটেলটা আসলে ভালো কিনা। ছবি: সংগৃহীত
কী করে বুঝবেন খারাপ হোটেলে উঠছেন আপনি?
আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১২:৪৬
(প্রিয়.কম) ভ্রমণে অপরিচিত কোনো শহরে গেলে সবাই চেষ্টা করেন ভালো মানের হোটেলে থাকতে। সামর্থ্যের মাঝেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন একটি হোটেল খোঁজেন তারা। কিন্তু অনলাইনে হোটেলের বিবরণ পড়ে ও ছবি দেখে মুগ্ধ হয়ে বুকিং দিয়ে ফেললেন, এরপর হোটেলে থাকতে গিয়ে দেখলেন একেবারে যাচ্ছেতাই অবস্থা! মন-মেজাজ তো খারাপ হবেই, টাকাগুলোও গচ্চা যাবে। এমন অবস্থা যেন না হয়, তার জন্য বুকিং দেওয়ার আগে বা হোটেলে চেক ইন করার পর পরই কিছু জিনিস দেখে নিতে পারেন। জেন নিন কোন বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন—
১) ছবিগুলো ফটোশপ করা
ভালো মানের হোটেল দেখতে এমনিতেই সুন্দর ও গোছানো হয়ে থাকে। এজন্য ছবি ফটোশপে এডিট না করলেও হয়। কিন্তু খারাপ মানের হোটেলের ছবিতে প্রচুর এডিট করা হয় ও রঙ পাল্টানো হয়, যা দেখেই বোঝা যায়। ফিশ-আই লেন্স দিয়ে যদি রুমের ছবি তোলা হয়, তার মানে রুমটা ছোট। আর যদি হোটেলের ওয়েবসাইটে শুধু তাদের রুমের ছবি থাকে, তাহলে বুঝবেন ঘাপলা আছে। এমনকি রুমের বিছানা বা বাথরুমের ছবি না থাকাটাও সন্দেহজনক।
২) ওয়েবসাইট আর গুগল ভিন্ন কথা বলে
হোটেলের ছবিগুলো ভালো মনে হলেও এবার গুগল করুন। ওই হোটেলের স্ট্রিট ভিউ দেখুন। যদি ছবির মতো না হয়, তাহলে বুঝে নিন সমস্যা আছে। এ ছাড়া হোটেল থেকে ওই এলাকার প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখা যায় কিনা, এটাও নিশ্চিত হয়ে নিন।
৩) দামটা অতিরিক্ত কম
অনেক সময় ডিসকাউন্টে বা কোনো ডিলের কারণে হোটেল রুমের দাম কম পাওয়া যায়, কিন্তু অবিশ্বাস্য দামে খুব ভালো হোটেল পেয়ে গেলে তা চট করে বিশ্বাস না করাই ভালো। ফাইভ স্টার হোটেলের রুম টু স্টার হোটেলের দামে পাওয়া অসম্ভব, ডিসকাউন্ট হলেও। আশেপাশের অন্যান্য হোটেলের সঙ্গে দাম যাচাই করে দেখুন। যদি আশেপাশের হোটেল থেকে খুব বেশি কম দাম হয়ে থাকে, তাহলে কোনো একটা সমস্যা থাকতে পারে।
৪) বিছানায় ছারপোকা আছে
bedbugreports.com নামের একটি ওয়েবসাইটে যান। ওই হোটেলের নাম টাইপ করুন। দেখতে পাবেন সেখানো কোনো ছারপোকা দেখা গিয়েছে কিনা। ছারপোকা থাকলে ওই হোটেলে আপনি যাবেন না তা বলাই বাহুল্য। সারা দিন সাইট সিয়িং করে ক্লান্ত শরীরে ছারপোকার কামড় খেতে কে চায়?
৫) নেগেটিভ রিভিউকে অপছন্দ করে
হোটেলে প্রচুর মানুষ আসে, তাদের মাঝে কিছু নেগেটিভ রিভিউ থাকতেই পারে। হয়তো তারা যা সার্ভিস আশা করেছিল তা পায়নি বা কোনো ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। কিন্তু এই নেগেটিভ রিভিউকে যদি কর্তৃপক্ষ হেসে উড়িয়ে দেয়, আমলে না নেয় বা এর বিরুদ্ধে কটু কথা বলে, তাহলে হয়তো হোটেলের সার্ভিস সত্যিই ভালো নয়।
৬) পজিটিভ রিভিউগুলো পুরনো
রিভিউ দেখবেন নতুনগুলো। ছয় মাসের পুরনো রিভিউ ভালো হোক আর খারাপ হোক, তা দেখে লাভ নেই। ছয় মাস আগে ভালো রিভিউ ছিল, এরপরের সব রিভিউ খারাপ। কারণ কী? হয়তো গত কয়েক মাসে সার্ভিস খারাপ হয়ে গেছে, আর উন্নতি হয়নি।
৭) নিরাপত্তাব্যবস্থা ভালো নয়
হোটেল সুন্দর হলেও যদি নিরাপত্তাব্যবস্থা ভালো না হয়, তাহলে সেখানে না থাকাই ভালো। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের নিয়ে থাকলে তো কথাই নেই। যদি রিসিপশন ডেস্কে রাতে মানুষ না থাকে, প্রধান দরজায় কেউ না থাকে, দরজার ভেতর দিকে সিকিউরিটি ল্যাচ বা চেইন না থাকে, তাহলে চিন্তিত হওয়ার কথাই বটে।
৮) কার্পেট অপরিষ্কার
হোটেলের যেকোনো জায়গায় ময়লা দেখতে পেলে সেটা খারাপ বলে ধরে নিতে পারেন। অনেকে বিছানা ও বাথরুম চেক করেন, কিন্তু কার্পেট চেক করেন না। কার্পেট পুরনো হলেও পরিষ্কার থাকলে চিন্তার কিছু নেই। কিন্তু কার্পেটের কিছু জায়গা ময়লা ও কিছু জায়গা পরিষ্কার থাকলে সে ঘরে না থাকাই ভালো।
৯) সাইনের অবস্থা খারাপ
হোটেলের সাইনগুলো হতে পারে বড় একটি বিপদ সংকেত। যদি হোটেল কর্তৃপক্ষ সাইনবোর্ড বা নিয়ন সাইন মেরামত করার দিকে নজর না দেয়, তাহলে বুঝতে হবে পুরো হোটেলেই মেইনটেনেন্সের অভাব রয়েছে।
১০) সার্ভিস খারাপ
আগের ৯টি বিষয় দেখেই বুঝে নিতে পারবেন সার্ভিস খারাপ ওই হোটেলের। তবে হোটেলে ওঠার সময়েও তা বোঝা যায়। আপনি হোটেলে ঢোকার পর কেউ যদি লাগেজ টানতে সাহায্য না করে, স্টাফ যদি মোবাইল ফোন নিয়ে বসে থাকে, আপনাকে ইগনোর করে বা ফ্রন্ট ডেস্কে কেউ না থাকে, তাহলে বুঝবেন এদের সার্ভিস যাচ্ছেতাই।
সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট
প্রিয় লাইফ/আরবি/রিমন
- ট্যাগ:
- টিপস
- লাইফ
- ভ্রমণ
- নিরাপত্তা টিপস
- ভ্রমণ সতর্কতা