ভালো ঘুমের জন্য খুবই কার্যকরী একটি উপায় হলো ইয়োগা বা যোগব্যায়াম। ছবি: সংগৃহীত
ঘুমপাড়ানি যোগব্যায়ামের নিয়ম (দেখুন ছবিতে)
আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১১:১৯
(প্রিয়.কম) বেশিরভাগ মানুষ ব্যায়াম করেন ওজন কমানোর জন্য। অনেকে ব্যায়াম করেন শরীরটাকে ফিট রাখতে। কেউ অসুখ-বিসুখ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার জন্য ব্যায়াম করেন। কিন্তু দৈনন্দিন অনেক উপকার পাওয়ার জন্যও ব্যায়াম করা যায়। বিশেষ করে ভালো ঘুমের জন্য খুবই কার্যকরী একটি উপায় হলো ইয়োগা বা যোগব্যায়াম। রাতভর নিশ্ছিদ্র ঘুমের জন্য দেখে নিতে পারেন এক সেট ইয়োগার নিয়ম। ঘুমের পোশাক পরে বিছানায় বসেই করে নিন এসব ব্যায়াম। সাথে রইল ছবি-
১) চাইল্ড’স পোজ
পা ভাঁজ করে হাঁটুতে ভর দিয়ে বসুন। এরপর সামনের দিকে ঝুঁকে যান। উরুর সাথে পেট লাগিয়ে দিন, মেঝেতে (বিছানায়) এক গাল লাগিয়ে রাখুন। হাত সামনের দিকে ছড়িয়ে দিন। হাঁটুর তালু মেঝেতে রাখুন। এভাবে পাঁচবার নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস নিন (৩০ সেকেন্ড)।
২) ক্যাট কাউ
হাঁটু ও হাতে ভর দিন। কোমরের ঠিক নিচে হাঁটু এবং কাঁধের ঠিক নিচে থাকবে আপনার কবজি। শ্বাস নেওয়ার সময়ে পেট নরম করে দিন, পিঠ ভেতরের দিকে বাকিয়ে আনুন, মাথা ও নিতম্ব উঁচু করুন। শ্বাস ছাড়ার সময় পিঠ বাইরের দিকে বাঁকিয়ে ফেলুন, নিতম্ব ভেতরের দিকে টেনে নিন, মাথা বুকের দিকে নামিয়ে আনুন। শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে সাথে এই দুইটি কাজ করুন। পাঁচবার নিঃশ্বাস নিন এভাবে।
৩) রিলাক্সড ডাউন ডগ
ক্যাট কাউ অবস্থা থেকে এই পজিশনে যান। আপনার হাঁটু তুলে ফেলুন মেঝে থেকে। পায়ের পাতায় ভর দিন। হাঁটু অল্প বাঁকা করুন। আপনার পায়ের পাতা ও হাতের তালু মেঝেতে থাকবে। মাথা থাকবে নিচের দিকে। নিতম্ব ওপরের দিকে। শরীর ত্রিকোণ অবস্থায় আসবে।
৪) ওপেন লিজার্ড
রিলাক্সড ডাউন ডগ থেকে ডান পা সামনের দিকে বাড়িয়ে দিন। বাম হাঁটু মেঝের সাথে লাগিয়ে দিন। মাথা ওপরের দিকে ও হাত কাঁধের ঠিক নিচে বরাবর মেঝেতে রাখুন। ডান পায়ের পাতা ডানদিকে কাত করুন, পায়ের পাতার ডান পাশটা শুধু মেঝেতে লেগে থাকবে। বুক সামনের দিকে প্রসারিত রাখুন। এভাবে পাঁচবার নিঃশ্বাস নিন।
৫) ওপেন রিভলভড এক্সটেন্ডেড সাইড অ্যাঙ্গেল
ওপেন লিজার্ড অবস্থা থেকে ডান পায়ের পাতা স্বাভাবিকভাবে মেঝেতে রাখুন। শরীরটাকে বাঁকিয়ে নিন ডানদিকে মুখ করে। ডান কাঁধ ও হাত পেছনের দিকে প্রসারিত করুন যতদূর সম্ভব। শরীরের ভার থাকবে বাম হাতের ওপর।
এভাবে পাঁচবার নিঃশ্বাস নিন। এরপর আবার ডাউন ডগ পজিশনে ফেরত যান। সেখান থেকে বাম পা সামনের দিকে প্রসারিত করে ওপেন লিজার্ড ও ওপেন রিভলভড এক্সটেন্ডেড সাইড অ্যাঙ্গেল করুন।
৬) স্ফিংস
পেটের ওপর ভর দিয়ে শুয়ে পড়ুন। হাত ভাঁজ করুন কনুই থেকে। কনুই সরাসরি কাঁধের নিচে থাকবে। এরপর কনুইতে ভর দিয়ে শরীরের ঊর্ধ্বাংশ ওপরে ওঠান। মাথা উঁচু করুন, ঘাড় টানটান করুন। পাঁচবার নিঃশ্বাস নিন।
৭) শোল্ডার ওপেনিং স্পাইনাল টুইস্ট
পেটের ওপর ভর করে শুয়ে পড়ুন। দুই হাত দুই পাশে ছড়ানো থাকবে ইংরেজি টি’র মতো। বাম হাতের তালু বাম কাঁধের নিচে রাখুন, এরপর শরীরের ডানদিকে রোল করুন। এতে যদি কাঁধে ব্যথা না লাগে তাহলে বাম হাঁটু ভাঁজ করুন ও আপনার পেছনে মেঝেতে রাখুন পায়ের পাতা। বাম পায়ে ও ডান হাতের ওপর ভর দিয়ে থাকুন পাঁচবার নিঃশ্বাস পর্যন্ত। এরপর আবার পেটে ভর দিয়ে শুয়ে পড়ুন। শরীরের অন্যদিকেও এই একই কাজ রিপিট করুন।
৮) সিটেড স্ট্র্যাডল
দুই পা দুই পাশে যতদূর যায়, ততদূর ছড়িয়ে বসুন। হাঁটু ভাঙবেন না। পিঠ সোজা থাকবে। হাতের তালু রাখুন উরুর ওপর বা মেঝেতে। এরপর কোমর থেকে ভাঁজ হয়ে যান সামনের দিকে। যতটুকু ঝুঁকে যাওয়া সম্ভব, ঝুঁকে থাকুন ২০ সেকেন্ড। ডান উরুর ওপর ঝুঁকে থাকুন ২০ সেকেন্ড। এরপর বাম উরুর ওপর ২০ সেকেন্ড।
৯) বাটারফ্লাই
সিটেড স্ট্র্যাডল থেকে হাঁটু ভাঙ্গুন এবং দুইপায়ের তালু মুখোমুখি লাগিয়ে ফেলুন। পিঠ সোজা রেখে সামনের দিকে ঝুঁকে যান। হাত রাখতে পারেন পায়ের পাতার ওপর। এভাবে পাঁচবার নিঃশ্বাস নিন।
১০) হ্যাপি বেবি
পিঠে ভর দিয়ে শুয়ে পড়ুন। হাঁটু ভাঁজ করুন। পায়ের পাতা হাত দিয়ে ধরুন। এরপর ধীরে ধীরে মেঝের দিকে হাঁটু নামিয়ে আনুন। এভাবে পাঁচবার নিঃশ্বাস নিন।
১১) নি টু চেস্ট
হ্যাপি বেবি পজিশন থেকে এক পা ছেড়ে দিন। দুই হাত দিয়ে ডানপায়ের হাঁটুর নিচে ধরুন ও বাম পা লম্বা করে দিন। ডান হাঁটু টেনে বুকের সাথে লাগিয়ে ফেলুন। পাঁচবার নিঃশ্বাস নিন।
১২) লাইং স্পাইনাল টুইস্ট
দুই হাত শরীরের দুইপাশে ছড়িয়ে দিন ইংরেজি ‘টি’-এর মতো। এরপর ডান হাঁটু শরীরের বামদিকে বাঁকিয়ে নিয়ে যান। এতে মেরুদণ্ড মোচড়ানো হবে। পাঁচবার নিঃশ্বাস নিন। এরপর আবার হাঁটু আগের জায়গায় নিন। দুই হাত দিয়ে দুই হাঁটু ভাঁজ করে বুক ও পেটের সাথে লাগিয়ে নিন। এরপর পা ছেড়ে দিন। স্পাইনাল টুইস্ট করুন বাম পায়ে।
১৩) হাফ হুইল
পিঠে ভর দিয়ে শুয়ে পড়ুন। হাঁটু ভাঁজ করে পায়ের পাতা নিতম্বের যত কাছে রাখা যায় রাখুন। পায়ের পাতা ও কাঁধে ভর দিয়ে শরীর ওপরের দিকে তুলে দিন। হাতের তালু পিঠের নিচের দিকে রেখে শরীরের ভার সামলাতে পারেন। এভাবে পাঁচবার নিঃশ্বাস নিন। এরপর শরীর নামিয়ে ফেলুন।
১৪) শবাসন
এই ধাপটি বিছানায়, কম্বলের নিচে করুন। পিঠে ভর দিয়ে শুয়ে পড়ুন। শরীর থেকে একটু দূরে ছড়িয়ে দিন হাত। তালু ওপরের দিকে থাকবে। দুই পায়ের মাঝে ১৫-২০ ইঞ্চি দূরত্ব থাকবে। কাঁধ শ্রাগ করুন, মেরুদন্ড স্ট্রেচ করুন, পিঠের নিচের অংশটা বিছানার সাথে লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন। আরামদায়ক পজিশনে পাঁচবার নিঃশ্বাস নিন। এরপর ঘুমিয়ে পড়া পর্যন্ত গভীর নিঃশ্বাস নিতে থাকুন।
সূত্র: পপসুগার
প্রিয় লাইফ/আর বি/রুহুল