কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের একটি আয়োজনে পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া। ছবি: প্রিয়.কম

‘জটিলতায়’ আটকে গেল বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব

মিঠু হালদার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮ জানুয়ারি ২০১৯, ১৪:৪১
আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৯, ১৪:৪১

(প্রিয়.কম) গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় গেল নভেম্বরে হওয়ার কথা ছিল বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব ২০১৮। তবে গত ২৪ অক্টোবর আয়োজক প্রতিষ্ঠান জানায়, নভেম্বরে নয় দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ২০১৯ সালের ৭ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি হবে উৎসবটি। তবে আজ ৮ জানুয়ারি দুপুরে জানা গেছে, এখন সময়ের ‘জটিলতায়’ আটকে গিয়েছে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম প্রধান এ উৎসবটি।

৮ জানুয়ারি, মঙ্গলবার দুপুর ১টার পরে এ তথ্য প্রিয়.কমকে জানিয়েছেন উৎসবের আয়োজক বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী।

তিনি বলেন,‘ফেব্রুয়ারিতে করার ইচ্ছা তো ছিলই। কিন্তু সেটা এখন আর বাস্তব সম্মত মনে হচ্ছে না। আমরা আসলে আয়োজনটি করার জন্য প্রস্তুত না, ফেব্রুয়ারিতে। মাত্র সরকার গঠিত হলো। সদ্যই তো সবকিছু পাল্টেছে। নতুন সরকারের সঙ্গে বিষয়টি বসতে হবে, কথা বলতে হবে।’

‘আয়োজনটি নিয়ে তাদের কী চিন্তা, সেটাও জানতে হবে। আর এত বড় আয়োজন সরকারের সহযোগিতা ছাড়া আমাদের পক্ষে করাও সম্ভব নয়। নতুন সংস্কৃতি মন্ত্রীর সঙ্গে আয়োজনটি নিয়ে আলোচনারও বিষয় আছে। তবে এখন আসছে নভেম্বরের আশায় আছি আমরা।’

২০১২ সাল থেকে নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে আয়োজিত হয়ে আসছিল বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব। ২০১৭ সালে ভেন্যু জটিলতায় উৎসবটি ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে হয়।

এদিকে গত ২৪ অক্টোবর বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, ২২ থেকে ২৬ নভেম্বর উৎসবটি করার প্রাথমিক পরিকল্পনা তাদের ছিল। কিন্তু সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে পরিকল্পনা থেকে তারা পিছিয়ে এসেছেন। তাই উৎসবটি আগামী বছরের (২০১৯) ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে করতে চান।

৭ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি পাঁচ দিনব্যাপী সপ্তম বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব আয়োজনের জন্য তাঁরা এখন ভেন্যু খুঁজছেন। ইতোমধ্যে তাঁরা ঢাকার বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামের জন্য আবেদন করেছেন।

এদিকে বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের জেনারেল ম্যানেজার আতাউর রহমান প্রিয়.কমকে বলেন, ‘আমারা ফেব্রুয়ারিতে যে সময়টা নির্ধারণ করেছিলাম, সেটাতেও করতে পারছি না। আর হচ্ছে না বলতে, আমরা পারছি না। কারণ, আমাদের শিল্পী যারা থাকেন, তাদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলাম।’

‘এখন যাদের ছাড়া অনুষ্ঠান হয় না, বা এ ধরনের অনুষ্ঠান করে লাভ হয় না এখন তো তারা তাদের অন্যান্য অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত আছেন। তাদের সবার শিডিউলও একদম যথাযথ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’

বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের লিটুর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তাকে ৭ জানুয়ারি দুপুরে ফোন করা হলে তার কলটি রিসিভ হয়নি।

এরপর বিষয়টি উল্লেখ করে মেসেজ পাঠিয়েও তার দিক থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপক (কমিউনিকেশন্স) রেজওয়ানুল কামাল বলেন, ‘এত বড় একটা আয়োজন করতে হলে একটা টাইম হাতে রাখতে হয়। সবচেয়ে বড় যে দিকটা আর্টিস্ট পাওয়ার বিষয়। বাকি সব কিছু সেটআপ করা যায়। ওটা আমাদের সমস্যা হত না। তাদেরও তো জানাতে হবে, তাদেরও সময় দেওয়ার বিষয় আছে।’

‘ওটাই আমাদের সবচেয়ে বড় প্রতিবন্দকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নতুন একটা গভর্নমেন্ট স্ট্রাকচার হচ্ছে। আর স্ট্রাকচারটা কমপ্লিট হতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। এখন আমরা যে অবস্থায় আছি আর্টিস্টদের কনফার্ম করার সময়টাও আমাদের হাতে নাই। আর এটাই এবার এ অনুষ্ঠানটি না হওয়ার সবচেয়ে বড় একটি কারণ।’

আয়োজনের ব্যাপ্তি, বাংলাদেশ এবং ভারতের প্রথম সারির উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিল্পীর অংশগ্রহণ এবং দর্শকসংখ্যা বিচারে বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব পৃথিবীর সবচেয়ে বড় উচ্চাঙ্গসংগীত আয়োজন হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে৷

প্রতিবছর প্রায় আড়াই লাখ দর্শক শ্রোতা এই আয়োজনে অংশ নেন৷ উপমহাদেশীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের রথী-মহারথীরা নিয়মিতই এতে অংশ নেন। বাংলাদেশ ছাড়াও বিদেশের দর্শকের কাছে আয়োজনটি সমাদৃত হয়েছিল।

গত কয়েক বছরে উৎসবের মাধ্যমে দর্শকের সুযোগ হয়েছে সংগীতের শিরোমণি গিরিজা দেবী, আমজাদ আলী খান, হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া, শিবকুমার শর্মা, আলী আহমেদ হোসেন, পারভিন সুলতানা, আশিষ খাঁ, অনিন্দ্য চ্যাটার্জি, রাধা ও রাজা রেড্ডি, উল্লাস কশলকার, অজয় চক্রবর্তী, রাশিদ খান, জাকির হোসেন, মাধবী মুডগাল, আলারমেল ভাল্লি, মালবিকা সারুক্কাই, এল সুব্রহ্মণ্যন, কড়াইকুডি মানিসহ প্রমুখের পরিবেশনা কাছ থেকে দেখা ও শোনার।

প্রিয় বিনোদন/গোরা