কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

দিব্যেন্দু পালিত ও পিনাকী ঠাকুর। ছবি: সংগৃহীত

হাসপাতালে একই দিনে বাংলা সাহিত্যের দুই নক্ষত্রের মৃত্যু

তাশফিন ত্রপা
ফিচার লেখক
প্রকাশিত: ০৩ জানুয়ারি ২০১৯, ১৬:২০
আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৯, ১৬:২০

(প্রিয়.কম) চলে গেলেন বাংলা সাহিত্যের দুই নক্ষত্র। ৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার কলকাতার যাদবপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় প্রখ্যাত সাহিত্যিক দিব্যেন্দু পালিতের। একই দিন বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের আরেকটি হাসপাতালে মারা গেলেন জনপ্রিয় কবি পিনাকী ঠাকুর। বছরের শুরুতে দুই কবির মৃত্যুতে গভীর শোক নেমে এসেছে লেখক মহলে, সৃষ্টি হয়েছে শূন্যতার।

বুধবার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন দিব্যেন্দু। পরদিন সকালে মৃত্যু হয় ৭৯ বছর বয়সী এ কবির।

১৯৩৯ সালের ৫ মার্চ ভারতের বিহার রাজ্যের ভাগলপুরে জন্ম হয় এ সাহিত্যিকের। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘তুলনামূলক সাহিত্য’ বিষয়ে স্নাতকোত্তর স্তরের পড়াশোনা করেছিলেন তিনি। ১৯৮৪ সালে ভারতে ‘আনন্দ পুরস্কার’ সম্মান পান তিনি। ১৯৯৮ সালে দেশটির ‘সাহিত্য একাডেমি’ পান। এরপর ১৯৯০ সালে ‘বঙ্কিম পুরস্কার’ও পেয়েছিলেন। তার লেখা ‘মূকাভিনয়’ গল্পটি নিয়ে ২০০৫ সালে নির্মাতা শ্যামানন্দ জালান একটি ছবি নির্মাণ করেছিলেন। নির্মাতা তপন সিংহও তার লেখা গল্প ‘অন্তর্ধান’ নিয়ে ছবি নির্মাণ করেন।

২০১২ সালে কলকাতার এক বই মেলার অনুষ্ঠানে সাদা কালো চেক শার্ট পরে চেয়ারে বসে আছেন সাহিত্যিক দিব্যেন্দু পালিত আর পেছনে হালকা সবুজ শার্ট আর চোখে চশমা পরে দাঁড়িয়ে আছেন কবি পিনাকী ঠাকুর। ছবি: সংগৃহীত

একই দিন বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের এসএসকেএম হাসপাতাল মৃত্যু হয় ৫৯ বছর বয়সী কবি পিনাকী ঠাকুরের।
গত বছরের ২১ ডিসেম্বর সেরিব্রাল ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন কবি। তাকে ভর্তি করা হয়েছিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কল্যাণীর জহরলাল নেহেরু হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসা চলছিল। পরে সেখান থেকে তাকে নিয়ে আসা হয়েছিল বারাকপুরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে। রাখা হয়েছিল ভেন্টিলেশনে। অবস্থার অবনতি দেখে চিকিৎকরা কবিকে এসএসকেএম হাসপাতালে ট্রান্সফার করেন। ২৮ ডিসেম্বর বারাকপুরের বেসরকারি হাসপাতাল থেকে কলকাতায় এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তাকে। সেখানেই তার চিকিৎসা চলছিল। অবশেষে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে আর পারলেন না। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় মৃত্যু হয় তার।

ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র ছিলেন পিনাকী। তার লেখালিখির শুরু ১৯৮০ দশকের দিকে আর খ্যাতি লাভ করেন ১৯৯০-র দশকে। তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘একদিন অশরীরী’ প্রকাশমাত্রই পাঠকের নজরকাড়ে। এরপরে ‘আমরা রইলাম’, ‘অকালবসন্ত’, ‘কলঙ্করচনা’, ‘শরীর কাচের টুকরো’ ও ‘অঙ্কে যত শূন্য পেলে’সহ তার লেখা বেশ কিছু বই স্থান করে নেয় জনপ্রিয়তার তালিকায়। ২০১২ সালে ‘চুম্বনের ক্ষত’ কাব্যগ্রন্থের জন্য পেয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের আনন্দ পুরস্কার। তার আগেই পেয়েছিলেন কৃত্তিবাস পুরস্কার, বাংলা আকাদেমি পুরস্কার।

কবিকে শেষ শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের উদ্দেশে এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে কলকাতার রবীন্দ্রসদনের নিয়ে আসা হবে কবির দেহ। সেখানে ঘণ্টা খানেক রাখা হবে। এরপর সেখান থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হবে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমিতে। তারপর হুগলি বাঁশবেড়িয়ায় আজই কবির শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।

সূত্র: এবেলা

প্রিয় সাহিত্য/গোরা