সয়াসস খুব কম পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত। ছবি: সংগৃহীত
সয়াসস পান করে মরতে বসেছিলেন এক নারী!
আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৮:৫৪
(প্রিয়.কম) ডায়েটের জন্য ইদানিং নানান অদ্ভুত অদ্ভুত পদ্ধতি অবলম্বন করেন অনেকে। তেমনই এক কাজ করতে গিয়ে ভয়াবহ বিপদে পড়েন আমেরিকান এক নারী। এক লিটার সয়াসস পান করার পর তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া লাগে। তার হৃৎপিণ্ড থেমে যায়। এরপর তাকে আবার বাঁচিয়ে তোলা হলেও তার মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ইউটিউবে চাবিএমু নামের একটি মেডিক্যাল চ্যানেলে স্বাস্থ্যকর্মী বার্নার্ড এই ঘটনার বর্ণনা দেন। তার ভাষ্যমতে, সিজি নামের এক নারী সয়াসস পান করে ক্ষতিগ্রস্ত হন। ওই নারী কিছুদিন আগেই মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য চিকিৎসা নিচ্ছিলেন এক হাসপাতালে। ডাক্তাররা ধারণা করেছিলেন, তার ছিল সিজোফ্রেনিয়া ও প্যারানয়া (অতিরিক্ত সন্দেহপ্রবণতা)। কিন্তু ওষুধে কাজ হচ্ছিল না। এরপর তিনি আবার ছয় মাস যাবত শুধুই সাদা পাউরুটি ও ক্যানে ভরা টুনা মাছ খেয়ে বেঁচে ছিলেন। এতে তার ওজন বারো কেজির মতো কমে যায়। কিন্তু সয়াসস কী কারণে খেয়েছিলেন তিনি?
জানা গেছে, সরকার তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে ও তার খাবারে বিষাক্ত পদার্থ মেশানো আছে এমন সন্দেহ করেন সিজি। এরপর তিনি নেট ঘেঁটে দেখেন, কেউ একজন দাবি করেছে সয়াসস পান করলে শরীর থেকে বিষ দূর হয়ে যাবে বা শরীর ডিটক্স হবে। এই ভুল তথ্য বিশ্বাস করে তিনি সকালের দিকে এক লিটার সয়াসস পান করেন।
সয়াসস রান্নার স্বাদ বাড়ালেও এতে কিন্তু থাকে অনেকটা লবণ। এক লিটার সয়াসস পান করার ফলে তার শরীরে চলে যায় ৬৬ গ্রাম সোডিয়াম! প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মৃত্যুর জন্য ২৫ গ্রাম সোডিয়াম একবারে খাওয়াই যথেষ্ট। সয়াসস খাওয়ার পর তার হৃদস্পন্দন দ্রুত হয়ে যায়। এরপরেও তিনি পানি পান করতে অস্বীকার করেন। তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন, হোঁচট খেতে থাকেন ও কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়, অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এরপর তার স্বামী অ্যাম্বুলেন্স ডাকেন। অ্যাম্বুলেন্সে থাকাকালীনই তার হৃৎপিণ্ড কাজ করা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু তাকে আবারও বাঁচিয়ে তোলা হয়।
হাসপাতালে পৌঁছানোর পর তাকে অ্যাকিউট হাইপারন্যাট্রেমিয়ার (অতিরিক্ত সোডিয়ামের উপস্থিতি) চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাকে ডেক্সট্রোজ দেওয়া হয় স্যালাইন হিসেবে। কারণ সয়াসস বা অতিরিক্ত সোডিয়াম খাওয়ার পর পরিপাকতন্ত্র শরীরের অন্যান্য অঙ্গ থেকে পানি টেনে নেওয়া শুরু করে। সিজি এত বেশি সোডিয়াম খেয়েছিলেন যে তার মস্তিষ্ক থেকেও পানি শুষে নেয় তার শরীর। এ কারণে তার মস্তিষ্কও কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
ডেক্সট্রোজ চিকিৎসা দেওয়ার পর তার পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়। চার দিন যাবত অজ্ঞান থাকার পর তার জ্ঞান ফেরে। এরপরেও তিনি হাত পা নাড়াতে পারেন না, কথা বলতে ও ঢোক গিলতে সমস্যা হয়। ডাক্তাররা জানান, তার মস্তিষ্কে স্নায়বিক একটি সমস্যা হয়েছে যাকে বলে সেন্ট্রাল পন্টিন মায়েলিনোলাইসিস।
সূত্র: আইএফএলসায়েন্স
প্রিয় লাইফ/ আর বি