কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

মরুভূমিতে পানির সংকট প্রকট। ছবি: সংগৃহীত

মরুভুমির শুকনো বায়ু থেকে তৈরি হবে সুপেয় পানি

কে এন দেয়া
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৫:০৮
আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৫:০৮

(প্রিয়.কম) পৃথিবীকে মেরু থেকে মেরু পর্যন্ত ঢেকে রেখেছে পানি। মিলিয়ন-ট্রিলিয়ন লিটার পানি, কিন্তু তার মাত্র ২ শতাংশ পান করার যোগ্য। এই ২ শতাংশের ৯৯.৫ শতাংশ আবার হিমায়িত অথবা মাটির নিচে। আর যেটুকু বাকি থাকে, সেটুকু আবার আমরা, মানুষরা দূষিত করে চলেছি প্রতিনিয়ত।

এর মাঝেও ভালো সংবাদ আছে বটে।  আমাদের জন্য সুপেয় পানি শুধু খাল-বিল, নদী ও বৃষ্টি থেকে আসে না। বরং আমাদের আশেপাশে যে বায়ু তাতেই আছে প্রায় ১৩ ট্রিলিয়ন বিশুদ্ধ পানি। বায়ু থেকে তা আহরণ করা সময়ের ব্যাপার মাত্র।

বায়ু থেকে পানি আহরনের বেশকিছু উপায় আছে, তবে বেশিরভাগই তেমন কার্যকরী নয়, বা বেশি খরুচে। সৌদি আরবের গবেষকরা দাবি করেছেন, এ সমস্যার একটি সমাধান বের করেছেন তারা।  এই সমাধান হলো খুবই সাধারণ একটি যন্ত্র যা নিজের ওজনের সমান পরিমাণ পানি বায়ু থেকে সংগ্রহ করতে পারে ও সূর্যের আলোয় গরম হয়ে এলে তা পানি বের করে দিতে পারে।

তাদের এই প্রোটোটাইপের মূল উপাদান হলো সস্তা, পরিবেশবান্ধব ও নিরাপদ রাসায়নিক ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড।  এই লবণটি পানি শোষণ করতে এতটাই পটু যে তা বাতাসে রেখে দিলে পানি শোষণ করে গলে যায়। এই ঘটনাকে রসায়নের ভাষায় বলা হয় ডেলিকোয়েসেন্স।

লবণটি নিজের ওজনের ছয় গুণ পরিমাণ পানি শোষণ করতে পারে। তবে এটা আসলে একটা সমস্যা। তা পানি শোষণ করে তরল হয়ে যায় বলে তা সহজে ব্যবহার করা যায় না। এ কারণে গবেষকরা ক্যালসিয়াম ক্লোরাইডকে হাইড্রোজেল হিসেবে ব্যবহার করেন। হাইড্রোজেল হলো এমন একটি পলিমার যা নিজে শক্ত থেকেও অনেক পরিমাণে পানি ধরে রাখতে পারে। গবেষকরা এই হাইড্রোজেলে কিছু ক্ষুদ্র কার্বন ন্যানোপার্টিকল যোগ করেন, যার মাধ্যমে পানি বের হয়ে আসতে পারে। এই হাইড্রোজেলের ওপর আলো ফেললে এর থেকে প্রায় ১০০ ভাগ পানিই বের করে আনা সম্ভব হয়।

ক্যালসিয়াম ক্লোরাইডের হাইড্রোজেল। ছবি: সংগৃহীত

এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় প্রোটোটাইপটির কার্যকারিতা ব্যাখ্যা করা হয়।  এর মাধ্যমে প্রতিদিন একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় পানি (৩ লিটার) সরবরাহ করতে দৈনিক খরচ হবে আধা সেন্ট।

এই প্রোটোটাইপে যেমন খরচ কম হয়, তেমন তা খুবই শুষ্ক এলাকাতেও পানি সরবরাহ করতে পারে।  তাই মরুভূমি বা খরাপ্রবণ এলাকার জন্য তা আদর্শ। তা ব্যবহার করতে বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে হয় না, ফলে খুব প্রত্যন্ত এলাকাতেও তা কাজে আসবে।

সূত্র: আইএফএলসায়েন্স

প্রিয় বিজ্ঞান/ আর বি