কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

গানের মানুষ জাকিয়া সুলতানা কর্নিয়া। ছবি: শামছুল হোক রিপন, প্রিয়.কম

পাঁচ বছর আগেও গান নিয়ে সিরিয়াস ছিলাম না : কর্নিয়া

তাশফিন ত্রপা
ফিচার লেখক
প্রকাশিত: ১৭ নভেম্বর ২০১৮, ১৩:০৪
আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৮, ১৩:০৪

(প্রিয়.কম) এ প্রজন্মের সংগীতশিল্পী জাকিয়া সুলতানা কর্ণিয়া। কণ্ঠের যাদুতে মুগ্ধ করে যাচ্ছেন শ্রোতাদের। শুরুটা হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ই। নিয়মিত লাইভ কনসার্ট মঞ্চ মাতিয়েছেন। গানপ্রেমী কর্ণিয়ার সঙ্গে আলাপ হয় প্রিয়.কমের। সেই আলাপে উঠে আসে এই শিল্পীর গানের জীবন, ব্যক্তি জীবন ও প্রেমসহ তার জীবনের নানা কথা।

প্রিয়.কম: কেমন আছেন?

জাকিয়া সুলতানা কর্নিয়া: ভালো। আপনি কেমন আছেন?

প্রিয়.কম: ভালো। কী নিয়ে ব্যস্ত এখন?

জাকিয়া সুলতানা কর্নিয়া: এখন তো কনসার্টের মৌসুম। লাইভ কনসার্ট নিয়েই এখন যত ব্যস্ততা। ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে নিয়মিত শো করতে হচ্ছে। 

প্রিয়.কম: স্টেজে কোন গানের জন্য বেশি অনুরোধ পান?

জাকিয়া সুলতানা কর্নিয়া: গত বছরের আগস্টে আসিফ আকবর ভাইয়ের সাথে ‘কী করে তোকে বোঝাই’ শিরোনামে একটি গান করি। গানটির ইউটিউব ভিউ এখন প্রায় ১ কোটি ৯১ লাখ ৬৬ হাজার ৮ শত ৯১। ঢাকায় কিংবা ঢাকার বাইরে যখন কোনো স্টেজ প্রোগ্রাম করতে যাই, তখন ওই গানটা গাওয়ার জন্য প্রচুর অনুরোধ আসে। এবং এই গানটা সবাই খুব পছন্দ করে, আমি জানি না কেন। এ গানটা যখন করেছিলাম তখন খুব বেশি সিরিয়াস ছিলাম না। তবে আসিফ ভাইয়ের সঙ্গে গান করব এ নিয়ে আগ্রহ ছিল বেশ। এখন পর্যন্ত এ গানটি ওই গানের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে বেশি ভিউয়ের গান।

প্রিয়.কম: জানতে চাইব আপনার সাম্প্রতিক গানগুলো সম্পর্কে।

জাকিয়া সুলতানা কর্নিয়া: এরই মধ্যে ‘তোর হয়ে আছি’ শিরোনামের নিজের একটি একক মৌলিক গান নিয়ে কাজ করছি। কয়েকদিন আগে গানটার ভয়েস দিয়ে এসেছি। গানটি পরিচালনা ও সুর দিয়েছেন রেজওয়ান শেখ। গানের কথা লিখেছেন স্নেহাশিষ ঘোষ। আর রিসেন্ট আসিফ ভাইয়ের সাথে পাঁচটি গান করেছি। কিছুদিন আগে ‘মেঘ বলেছে’ শিরোনামের একটি গান বের হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৪টা গান বের হয়েছে। বাকি একটা গান প্রকাশের অপেক্ষায় আছি।

প্রিয়.কম: এবার জানতে চাইব, জীবনসঙ্গী হিসেবে কেমন ছেলে পছন্দ?

জাকিয়া সুলতানা কর্নিয়া: সবার আগে তাকে একজন ভালো মানুষ হতে হবে। তাকে যে খুব বেশি পয়সাওয়ালা হতে হবে, তা নয়। আমার কাজে সাপোর্ট করার মানসিকতা থাকতে হবে। সিগারেট খাওয়া যাবে না। আমি নিজেও কখনো ধূমপান করি নাই। সুতরাং আমার পাশের জনও সিগারেট খেতে পারবে না। আমি কখনো ড্রিঙ্কস করি নাই। সুতরাং আমার পাশের জনও ড্রিঙ্কস করতে পারবে না। আসলে ভদ্র ছেলে পছন্দ। আমরাতো দুই বোন তাই আমি চাইব এমন একজনকে যে কিনা আমার মায়ের কাছে তার ছেলের মতো হবে। আর অবশ্যই তার মধ্যে সহযোগী মনোভাব থাকতে হবে। তা না হলে আমি তো আমার কাজ ঠিক মতো করতে পারব না।

বিভিন্ন ধরনের গান গাইতে ভালোবাসেন কর্নিয়া। ছবি: শামছুল হোক রিপন, প্রিয়.কম

প্রিয়.কম: অনেক সময় প্রেমিকার সৃজনশীল কাজে অনেক প্রেমিক বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করেন, তো গান নিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে কখনো কি কোনো সংঘর্ষ হয়েছিল?

জাকিয়া সুলতানা কর্নিয়া: আমার একটা বয়ফ্রেন্ড ছিল। গানের কারণে ওকে ছেড়ে দিয়েছি। আমার মিউজিক নিয়ে তার প্রবলেম ছিল বিধায় তাকে ছেড়ে দিয়েছি। কারণ আমিতো গান ছাড়তে পারব না। মনে করেন ‘আমি গান গাইব না’। কিন্তু সেটা আমি আমার ইচ্ছায় গাইব না। মন চাইলে আমি নিজের ইচ্ছায় গান ছেড়ে দিলাম বা গাইলাম না। গাবো কি গাবো না সেটা আমার ইচ্ছা। কিন্তু বয়ফ্রেন্ড আমাকে জোর করে গান ছাড়তে বাধ্য করবে, এটা আমি অ্যালাউ করব না।

প্রিয়.কম: গান নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী? সামনের দিনগুলোতে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?

জাকিয়া সুলতানা কর্নিয়া: কত দূর যেতে পারব তাতো জানি না। প্রত্যেকটা শিল্পীরই কিছু না কিছু স্বপ্ন থাকে। সে রকম আমারও একটা স্বপ্ন আছে। আমি চাই আমি যখন বুড়ো হয়ে যাব, তখন যেন অনেকের মনে আমার গাওয়া গানগুলো গেঁথে যায়। আমার গানশুনেই যেন মানুষ নির্দিষ্ট করে বলেতে পারে, ‘হ্যাঁ, এটাতো কর্নিয়া আপুর গান।’ যখন বুড়ো হয়ে যাব তখন দেখব মানুষ আমার গানগুলো কভার করছে। তখন দেখব মানুষ আমার গানগুলো গাচ্ছে। এইতো, এতোটুকুই আমার স্বপ্ন। কিন্তু তত দূর যেতে পারব কি না জানি না।

প্রিয়.কম: শুরুর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত সংগীত ক্যারিয়ারে নিয়ে কিছু বলুন?

জাকিয়া সুলতানা কর্নিয়া: সত্যি কথা বলতে এতো দিন গান নিয়ে খুব একটা সিরিয়াস ছিলাম না। গানের ব্যাপারে খুব বেশি মনোযোগও দিইনি। এখন গানের প্রতি আমার মনোযোগ এসেছে। হয়তো ছোট বেলায় না বুঝেই গান গেয়েছি। কিন্তু এখন বুঝে সুঝেই গাচ্ছি। আমার কাছে মনে হয় ভালো গান গাইতে হলে প্রচুর পরিমান স্টেজ প্রোগ্রাম থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে। কারণ স্টেজ প্রোগ্রাম করলে গলার উপর অনেক প্রেশার যায়। এতে করে খুব বেশি দিন আর গান করা সম্ভব হয় না।

শুধু গানেই নয় গেটআপ ও এক্সপ্রেশনসহ সব কিছুতেই পারদর্শী তিনি। ছবি: শামছুল হোক রিপন, প্রিয়.কম 

প্রিয়.কম: ব্যক্তিগতভাবে কাদের গান বেশি পছন্দ?

জাকিয়া সুলতানা কর্নিয়া: আমাদের পাশের দেশ ইন্ডিয়ার শিল্পী সুনিধি চৌহানের গান আমার খুব পছন্দ। ওনারা খুব ভার্সেটাইল গান গাইতে পারেন। খুব সহজে রক গেয়ে ফেলেন, আবার পপও গেয়ে ফেলেন। ওই জিনিসটা আমার খুব ভালো লাগে। ছোটবেলা থেকে গান পছন্দ করতাম রুনা লায়লা ম্যামের। এ ছাড়া মিলা ইসলাম আপুর গান খুব ভালো লাগে। আমি তার একজন বড় ভক্ত। উনিও খুব সহজে বিভিন্ন ধরনের গান গেয়ে ফেলেন। ওনার একটা গান আছে, ‘ছেঁড়া পালে লাগুক হাওয়া।’ এ গানটা গেয়ে আমি আমার ইউনিভার্সিটিতে হিট হয়ে গিয়েছিলাম।

প্রিয়.কম: পাওয়ার ভয়েসে কবে অংশ নিয়েছিলেন ?

জাকিয়া সুলতানা কর্নিয়া: ইউনিভার্সিটির অধ্যায় যখন প্রায় শেষ পর্যায়ে তখন আমি পাওয়ার ভয়েসে অংশ নিই। এর আগে আমি চ্যানেল আইয়ের নেসক্যাফে গেট সেট রকে ছিলাম। আমার ব্যান্ড করার অনেক শখ ছিল। নেসক্যাফে গেট সেট রকে যখন গিয়েছিলেম তখন ১৩টা ব্যান্ডের মধ্যে আমি একটা মাত্র মেয়ে ছিলাম, অর্থাৎ মোট ৬৫ জনের মধ্যে আমিই একজনই মেয়ে। যাই হোক ওখানে আমি সপ্তম হয়েছি।

প্রিয়.কম: প্রোগ্রাম করা শুরু করেন কবে থেকে?

জাকিয়া সুলতানা কর্নিয়া: কলেজে পড়ার সময় খুব বেশি একটা প্রোগ্রাম করতাম না। কলেজ পাশ করার পর আস্তে আস্তে বিভিন্ন গানের প্রোগ্রামগুলোতে অংশ নেওয়া শুরু করি। এর পেছনে অবশ্য একটা কারণ ছিল। কারণ তখনো পর্যন্ত আমরা আব্বুর পেনশনের টাকা দিয়েই চলতাম। এদিকে আমিও একটু একটু করে বড় হচ্ছিলাম। বুঝতে শিখছিলাম। তো মনে হলো একটু বাড়তি আয়তো করাই যায়। তাছাড়া সংসারের খরচটাও বাড়ছিল। ছোট বোনটা পড়াশোনা করছে, অন্যদিকে আমার নিজের পড়াশোনার খরচ চালানো।

প্রিয়.কম: জীবনের প্রথম সম্মানি কত ছিল?

জাকিয়া সুলতানা কর্নিয়া: আমার জীবনের প্রথম প্রোগ্রামটা করি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি’তে। ওই প্রোগ্রামে দুই একটা গান করে আমি ২০০ টাকা সম্মানি পাই। এটা ছিল আমার জীবনের প্রথম সম্মানি। আমার দ্বিতীয় প্রোগ্রামের কনভেনস ছিল ৫০০ টাকা। (হাসতে হাসতে) এখানে একটা মজার ঘটানা আছে। আসলে দ্বিতীয় প্রোগ্রামটিতে আমার কনভেনস নির্ধারণ করা ছিল ১৫০০ টাকা। কিন্তু একজন আমার ১০০০ টাকা মেরে দিয়েছিল। তাই আমি পেয়েছিলাম ৫০০ টাকা। এরপর আস্তে আস্তে সবাই আমাকে চিনতে শুরু করল, অনেকেই এসে প্রোগ্রামের জন্য নম্বর নিয়ে যেত। ধীরে ধীরে আমি অনেক পরিচিতি লাভ করতে শুরু করি। প্রচুর প্রোগ্রামও আমার হাতে এসে জমা হতে শুরু করে। আর আমি প্রোগ্রামগুলো করা শুরু করলাম। পাশাপাশি নিজের পড়াশোনাটাও চালিয়ে যাওয়া শুরু করলাম। তো ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় যে পরিমাণ প্রোগ্রাম করতাম, তা দিয়ে আমি আমার নিজের পড়াশোনার খরচটাও মিটিয়ে ফেলতাম।

সংগীতাঙ্গনের প্রিয় মুখ কর্নিয়া। ছবি: শামছুল হোক রিপন, প্রিয়.কম

প্রিয়.কম: পাওয়ার ভয়েসে অংশ নেওয়ার শুরুটা নিয়ে যদি কিছু বলতেন।

জাকিয়া সুলতানা কর্নিয়া: পাওয়ার ভয়েসের রেজিস্ট্রেশন করেছি। পাশাপাশি টুকটাক প্রোগ্রামগুলোও করছি। একদিন সাকাল বেলা কক্সবাজারের একটি প্রোগ্রাম শেষ করে আসি। হঠাৎ আমার এক বন্ধু ফোন করে বলে, ‘আমি পাওয়ার ভয়েসের ইয়েস কার্ড পেয়েছি।’ তো আম্মুকে বললাম, ‘ও তো ইয়েস কার্ড পেয়েছে।’ আম্মু বলল, ‘তুমিও ইয়েস কার্ড পাবা, যাও একবার গিয়ে দেখই না।’ তো আমিও ভাবলাম যাই। আমাদের বাসা তখন নাখালপাড়ায় ছিল। তখন চ্যানেল নাইন এর পাওয়ার ভয়েসের স্টুডিওটা ছিল আমার বাসার পাশে তেজগাঁওতে। স্টুডিওতে গিয়ে দেখি অনেক মানুষ আর লম্বা লাইন। আমি একদম মাথায় ঘোমটা-টোমটা দিয়ে গেছি। কারণ কিছু মিউজিশিয়ানতো আমাকে চেনেন। তারা আমাকে দেখলেই বলে বসবে, ‘কেন আসছো তুমি? কী দরকার ছিল আসার? তুমিতো গান করছ-ই।’ এ ধরনের আরও নানা কথা বলতে পারে। কিন্তু আমিতো গান নিয়ে এখানে থেমে থাকতে চাই না। আরও বড় জায়গায় যেতে চাই। তো যাওয়ার পর ওখানে এক বন্ধুর সাথে দেখা। ও আমাকে দেখেই বলা শুরু করে দিল, ‘কর্নিয়া, তুমি এখানে কী করছ?’ এরকম আরও নানা প্রশ্ন করা শুরু করে দিল সে। যাই হোক এরপর ইয়েস কার্ড পেলাম।

প্রিয়.কম: ইয়েস কার্ড পাওয়ার পর আপনার প্রতিক্রিয়া কী ছিল ?

জাকিয়া সুলতানা কর্নিয়া: ইয়েস কার্ড পাওয়ার পর আমার কোনো প্রতিক্রিয়া ছিল না। কারণ আমিতো জানিই আমি ইয়েস কার্ড পাব। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে পুরো পাওয়ার ভয়েসে আমি কখনো ডেনজার জোনে যাইনি। কাউকে ডিস্টার্ব না করে কচ্ছপের গতিতে এগিয়েছি।

প্রিয়.কম: কার অনুপ্রেরণাতে গান গাওয়া ?

জাকিয়া সুলতানা কর্নিয়া: আম্মুর অনুপ্রেরণাতেই আসলে গানটা করা। আম্মু এক সময় গান করতেন। আম্মুর যে শখটা ছিল সেটা আর ফুলফিল হয়নি। সেই শখটা হয়তো মেয়েকে দিয়েই পূর্ণ হয়েছে। আম্মুর কাছ থেকেই আমার প্রথম গান শেখা। আমার যখন সাড়ে তিন বছর বয়স, সারগামটা তখন আম্মুর কাছ থেকেই শিখেছি।

প্রিয়.কম: এরপর কার কাছে গান শিখেছেন?

জাকিয়া সুলতানা কর্নিয়া: ছোটবেলায় যার কাছে গান শিখেছি, আমার সেই ওস্তাদজির নাম টিটো শিহাব। তিনি বিমান বাহিনিতে চাকরি করতেন। ক্লাস সিক্স কি সেভেনে পড়ার সময় পর্যন্ত ওনার কাছে গান শিখেছি। ক্লাসিক্যালের ১০টা রাগ-ঠাট শেষ করার পর যে কোনো গান শুনে যখন হারমোনিয়ামে তুলতে পারি তখন আমি ছায়ানটে ভর্তি হই। তো শুরুতেই ছায়ানটের প্রারম্ভিক ‘খ’ তে ভর্তি হয়ে যাই। প্রারম্ভিক শেষ করে নজরুল সংগীতের উপর প্রতিষ্ঠানটির ফিফথ ইয়ার পর্যন্ত শেষ করি। স্কুলে পড়ার সময় যা হতো, তখন জাতীয় পর্যায়সহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতাম। কিন্তু বিভিন্ন পলিটিক্সের কারণে ছোটবেলায় কখনো কোনো জায়গায় প্রথম হতে পারিনি। এ কারণে সবসময় মন খারাপ হয়ে যেত। তখন মনে হতো, ‘না আর গাইব না’। সে সময় বড় কোনো শিল্পী হওয়ার ইচ্ছা আমার মধ্যে ছিল না।

প্রিয়.কম: সবশেষে জানতে চাইব পরিবার ও পড়ালেখা সম্পর্কে?

জাকিয়া সুলতানা কর্নিয়া: আব্বু বিমান বাহিনীতে চাকরি করতেন। ২০০০ সালে আমার বাবা যখন মারা যান। আমি তখন ক্লাস সেভেনে পড়ি আর আমার বোন তখন কেজিতে ছিল। তখন আসলে এতো ছোট ছিলাম যে, আম্মুর পক্ষে দুজনকে একসঙ্গে নিয়ে বের হওয়া সম্ভব ছিল না। আমার বোন ছোট বেলায় খুব ভালো নাচ করতো। যেহেতু দুজনকে এক সাথে নিয়ে বের হওয়াটা বেশ কষ্টকর ছিল। তাই পরবর্তীতে ওর নাচটা বন্ধ হয়ে যায়। তখন ছায়ানটে সপ্তাহে একদিন শুক্রবার ক্লাশ হতো। ওকে তখন বাসায় রেখে আমি আর আম্মু ছায়ানটে আসতাম। আমার বোনের নাম অমিও। ও খুব শান্ত একটা বাচ্চা। ইনফেক্ট এখনো খুব শান্ত। ও ঢাকা ডেন্টাল কলেজে পড়ছে। আমি হচ্ছি দুরন্ত। আমার স্কুল কলেজের কালচারাল বিষয়গুলোতে আমি ছিলাম লিডার টাইপের। কোনো প্রোগ্রাম হলে টিচারদের সঙ্গে আমিও অনেকটা বিচারকের ভূমিকা পালন করতাম। রাজধানীর বিএফ শাহিন স্কুল থেকে এসএসসি শেষ করি। এইচএসসি ছিল আইডিয়াল কমার্স কলেজে। এরপর আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হই। সেখানে একটু সমস্যা হয়। তারপর দুই মাস পরে ভর্তি হই ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে। এখান থেকেই বিবিএ-এমবিএ শেষ করি।

প্রিয় বিনোদন/গোরা