(‌প্রিয়.কম) জামায়াতে ইসলামী বা তারেক রহমানসহ অন্য কোনো বিশেষ নেতাকে সমর্থন দিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়নি বলে জানিয়েছেন ড. কামাল হোসেন।

২২ অক্টোবর, সোমবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেন।

ড. কামাল বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী বা তারেক রহমানসহ অন্য কোনো বিশেষ নেতার প্রতি সমর্থন হিসেবে এই উদ্যোগ‌কে দেখার কোনো সুযোগ নেই। যারা ক্রমাগতভাবে আমার বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ, ভিত্তিহীন, ব্যক্তিগত আক্রমণ করে চলছেন; আমি তাদের স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বা কোনো রাষ্ট্রীয় পদ পাওয়ার কোনো ইচ্ছা আমার নেই। একটি গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ ও বহুমাত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য আমি কাজ করে যাব।’

সাত দফা দাবির কথা উল্লেখ করে কামাল হোসেন বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এই লক্ষ্যগুলোর প্রতি সংকল্পবদ্ধ। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে এই লক্ষ্যগুলো অর্জনে কাজ করে যাওয়া ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে এ প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত দলগুলোর মধ্যে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।’

এক প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল বলেন, ‘তারেক রহমানের সঙ্গে আমার দলের কোনো সম্পর্ক নেই। বিএনপির সঙ্গে আমাদের ঐক্য আছে। এখানে তারেক রহমানের সঙ্গে আমাদের কথা বলার প্রয়োজন হয় না। জনগণের এই উদ্বেগ ও আগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও দেশের নাগরিক সমাজের কয়েকজন প্রতিনিধি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য গণফোরাম ব্যাপক আলোচনার ভিত্তিতে সাতটি দাবির ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি।’

ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘এই সাত দফা দাবি প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও দেশের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিগণ জাতীয় পর্যায়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে মতৈক্যে পৌঁছেছি, যার ফলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে একটি উদ্যোগ প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।’

‘আমরা বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে সমাবেশ করব। এ ছাড়াও নাগরিকদের কাছে যাব, তাদের কাছে আমাদের দাবিগুলো তুলে ধরব; যাতে তারাও অবদান রাখে অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্র‌তিষ্ঠায়।’

‘আমরা কয়েকটা দল মিলে একটা ঐক্য গড়ে তুলেছি, সেটি শুধু নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি আদায় করার জন্য। এ ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে নয়। কারণ আমরা ঐক্য করেছি নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থা করার জন্য।’

গতকাল সংসদে ড. কামাল হোসেনকে নিয়ে যেসব মন্তব্য করা হয়েছে—সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এসব নিয়ে মন্তব্য করার প্রয়োজন মনে করছি না। যদি কখনো প্রয়োজন মনে করি, তাহলে তখন মন্তব্য করব। আর সংসদে তারা অনেক কিছু নিয়ে আলোচনা করতেই পারেন।’

‘সংবিধানের বাইরে কোনো দাবিই মানা হবে না’—আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই সংবিধান তো তারা সংশোধন করছে। আগের সংবিধানে আমাদের দাবিগুলো ছিল। আমরা সংসদে আগের সংবিধানে যেগুলো ছিল, সেগুলোই বলেছি।’

দাবি মানা না হলে কর্মসূচি কেমন হবে জানতে চাইলে ড. কামাল বলেন, ‘আমরা আপাতত সারা দেশে যে জনমত গঠন করব, তার মাধ্যমে আশা করি দাবি আদায় হবে। তারপরও যদি দাবি আদায় না হয়, তাহলে গভীরভাবে ভেবে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।’

প্রিয় সংবাদ/নোমান/আজাদ চৌধুরী