কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

বারডেম হাসপাতালের বহির্বিভাগ। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে ডায়াবেটিস: রোগীর বার্ষিক খরচ কত

হাসান আদিল
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ২১ অক্টোবর ২০১৮, ১৭:১৪
আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৮, ১৭:১৪

(প্রিয়.কম) বাংলাদেশে জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগে আক্রান্ত। তাদের বেশির ভাগ রাজধানী কিংবা স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। হাসপাতাল অনুযায়ী সেই চিকিৎসার খরচ বাড়ে-কমে। রোগী ও চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি অনুসন্ধানের চেষ্টা করেছে বিবিসি বাংলা। 

গাজীপুরের বাসিন্দা শামীমা আক্তারের স্বামী প্রায় আট বছর ধরে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। তার স্বামীর জন্য প্রথম দুই বছর গড়ে এক হাজার টাকা খরচ হলেও দিনের পর দিন সে খরচ বেড়েছে। এখন স্বামীর পেছনে শামীমার প্রতি মাসে খরচ হয় প্রায় ৯ হাজার টাকা। ডায়াবেটিসের কারণে আরও নানাবিধ শারীরিক জটিলতা তৈরি হয়েছে তার স্বামীর। চিকিৎসা নিয়ে এখন এক প্রকার হতাশ শামীমা।

জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (নিপোর্ট) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে যারা ডায়াবেটিস রোগের চিকিৎসা নেন, তাদের মধ্যে শতকরা ৭২ শতাংশ ট্যাবলেট খান। আর প্রায় ১৭ শতাংশ ইনসুলিন নেন। বাকি ১১ শতাংশের দুটিই প্রয়োজন।

বারডেম হাসপাতাল বাংলাদেশে ডায়াবেটিক রোগীদের চিকিৎসার জন্য সবচেয়ে বড় হাসপাতাল। প্রতিদিন সকাল থেকে শত-শত মানুষ সেখানে যান চিকিৎসা নিতে। প্রায় প্রতি মাসেই এখানে যান ঢাকার মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা রাবেয়া আক্তার।

তিনি বলেন, ‘বছর দুয়েক আগে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার পর এখন নিয়ম করে দুই বেলা ঔষধ খেতে হয়। এখন প্রতি মাসে প্রায় দেড় হাজার টাকার মতো ঔষধ কিনতে হয়।’

বাংলাদেশ ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চিকিৎসক অধ্যাপক রশিদ-ই-মাহবুব বলেন, ‘সব ডায়াবেটিক রোগীকে ট্যাবলেট খেতেই হয়। যেহেতু এর সঙ্গে অন্যান্য রোগ থাকে, এ ধরনের একটি রোগী কোনোমতেই প্রতি মাসে দেড় থেকে দুই হাজার টাকার নিচে চলতে পারবে না।’

ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফাউন্ডেশনের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে এখন ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা প্রায় ৭০ লাখ।

একজন রোগীর যদি প্রতি মাসে গড়ে দুই হাজার টাকা খরচ হয়, তাহলে সে হিসেবে ডায়াবেটিসের চিকিৎসা বাবদ প্রতি মাসে বাংলাদেশে খরচ হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। প্রতি বছরে খরচ হচ্ছে ১৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।

অধ্যাপক রশিদ-ই-মাহবুব বলেন, ‘সচেতনতার মাধ্যমে যদি ডায়াবেটিসের বিস্তার কমানো সম্ভব না হয়, তাহলে এ রোগের জন্য আগামী ১৫-২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি টাকা খরচ হবে।’

চিকিৎসকরা জানান, ডায়াবেটিস অন্য আরও নানা ধরনের রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ফলে চিকিৎসা ব্যয় বাড়তেই থাকে।

বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি বলছে, শারীরিক পরিশ্রম ও খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে সচেতন না হলে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে বড় দুর্যোগ নিয়ে আসবে ডায়াবেটিস।

এ রোগের চিকিৎসা নিতে মানুষের আর্থিক চাপ যেমন বাড়ছে, তেমনি মানুষের কর্মক্ষমতাও কমে যাচ্ছে, দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

প্রিয় সংবাদ/আজহার