কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

সন্তানকে ডিভোর্সের বিষয়ে জানানোটা বাবা-মায়ের কাছে দুঃস্বপ্নের মতো। ছবি: সংগৃহীত

ডিভোর্স নিয়ে সন্তানের সাথে কথা বলবেন যেভাবে

কে এন দেয়া
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ২৬ আগস্ট ২০১৮, ২১:২০
আপডেট: ২৬ আগস্ট ২০১৮, ২১:২০

(প্রিয়.কম) বাবা-মা আলাদা হয়ে যাচ্ছেন, তাদের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটছে- এ ব্যাপারটা সন্তানের জন্য প্রচণ্ড কঠিন। স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদের কষ্ট অনেক বেশি হলেও তারা এ পরিবর্তনে মানিয়ে নিতে পারেন। কিন্তু সন্তানের পক্ষে তা মেনে নেওয়াটা সহজ নয়। সন্তানকে কষ্ট থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করলেও তারা এ ঘটনায় কষ্ট পাবেই।

সন্তানকে ডিভোর্সের বিষয়ে জানানোটা বাবা-মায়ের কাছে দুঃস্বপ্নের মতো।  এ সময়টিতে সতর্কতা অবলম্বন করাটাই ভালো। গবেষণায় দেখা যায়, তিনটি ক্ষেত্রে মনোযোগ দিতে হবে।  সন্তানের সাথে বাবা-মা উভয়ের সম্পর্কই ভালো থাকতে হবে, তার প্রতি বাবা-মায়ের যত্নশীল হতে হবে এবং বাবা-মায়ের ঝগড়া থেকে তাক যথাসম্ভব দূরে রাখতে হবে।

প্রতিটি পরিবারই আলাদা এবং সে পরিবারের সন্তানের সাথে কীভাবে কথা বললে তাতে সন্তান কম কষ্ট পাবে তাও আলাদা। তা সত্ত্বেও সন্তানকে ডিভোর্সের ব্যাপারে জানাতে রইলো কিছু পরামর্শ-

১) সময়মতো জানান

আপনি এবং আপনার জীবনসঙ্গী যদি ডিভোর্সের ব্যাপারে চিন্তা করেন, তাহলে একদম নিশ্চিত হয়েই সন্তানকে জানান।  চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবার আগে তার ওপরে এমন একটি তথ্যের ভার চাপিয়ে দেওয়ার কোনো মানে হয় না। এছাড়া সন্তানকে জানানোর জন্য বেশ কিছুটা সময় বের করে রাখুন। সে নিঃসন্দেহে রাগারাগি করবে, কাঁদবে এমনকি ছোট সন্তান হলে অস্থির আচরণ করতে পারে। এ সময়ে তার পাশে আপনার থাকা জরুরী।

২) পুরো পরিবার একসাথে বসুন

স্বামী-স্ত্রীর মাঝে দ্বন্দ্ব থাকলেও এ বিষয়ে সন্তানের সাথে কথা বলুন একসাথে।  এতে একেক জনের থেকে একেক রকম কথা শোনার উপায় থাকে না। এতে একজন আরেকজনের ওপর দায় চাপানোর শঙ্কাও এড়ানো যায়। সন্তান বাবা বা মায়ের পক্ষ নেবার সমস্যাটিও এক্ষেত্রে হয় না। এছাড়া ডিভোর্সের ব্যাপারে জানার পর সন্তানের অনেক প্রশ্ন থাকতে পারে। এসব প্রশ্নের জবাব দুজনে মিলেই দেওয়া উচিত।

ডিভোর্সের ব্যাপারে জানার পর সন্তানের অনেক প্রশ্ন থাকতে পারে। ছবি: সংগৃহীত

৩) দোষ চাপানো থেকে বিরত থাকুন

আপনি স্বামী বা স্ত্রীর প্রতি যতই রাগান্বিত থাকুন না কেন, ডিভোর্সের জন্য সন্তানের সামনে তাকে দোষারোপ করবেন না।  এছাড়া পরকীয়া বা আর্থিক ব্যাপারেও তাকে জানানোর কোনো দরকার নেই। এতে সন্তান আরও বেশি বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে।

৪) খুঁটিনাটি তথ্য জানানোর প্রয়োজন নেই

ডিভোর্সের পুরো প্রক্রিয়াটিতে বেশ সময় লাগতে পারে।  সবকিছু সন্তানের চোখের সামনে রাখবেন না। ডিভোর্স পেপার সন্তানের সামনে রাখা বা তার সামনেই ফোনে আইনি ব্যাপারে কথা বলা তাকে মানসিকভাবে দুর্বল করে দিতে পারে সহজেই।

৫) অস্বাভাবিক আচরণের প্রতি মনোযোগ দিন

ডিভোর্সের ব্যাপারটি সন্তানের জন্য ভীতিকর। তাই এ বিষয়ে জানার পর তাদের মাঝে অস্বাভাবিক আচরণ দেখা দিতে পারে। যেমন ঘুমের সমস্যা, ছোট শিশুদের বাথরুমে যাওয়ার ব্যাপারে সমস্যা, অতিরিক্ত রাগ বা জেদ করা, মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা ইত্যাদি। এসব বিষয় এড়িয়ে না গিয়ে সন্তানের যত্ন নিন।

শুধু তাই নয়, বাবা-মা উভয়ের উচিত এ সময়ে সন্তানের পাশাপাশি নিজেরও যত্ন নেওয়া। বেশিরভাগ সময়ে মা-কেই বেশি চাপের মাঝে পড়তে হয় ডিভোর্সের পর পর। এতো চাপ একা সামলানো কঠিন। তাই পরিবার বা বন্ধুদের সাহায্য নিন।  মনে রাখুন, ডিভোর্স হচ্ছে তারমানে এই নয় যে আপনি বাবা/মা হিসেবে খারাপ। ডিভোর্সের পরেও সন্তানকে স্বাভাবিক জীবন দেওয়া সম্ভব।

সূত্র: হাফিংটন পোস্ট

প্রিয় লাইফ/ আর বি