কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

মেয়ে লিসার সঙ্গে স্টিভ জবস। ছবি: সংগৃহীত

স্টিভ জবস ও তার কন্যার কিসসা

আশরাফ ইসলাম
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ২৫ আগস্ট ২০১৮, ১৩:৩৯
আপডেট: ২৫ আগস্ট ২০১৮, ১৩:৩৯

(প্রিয়.কম) গত ৪০ বছরে সবচেয়ে প্রভাবশালী মানসিকতার একজন ছিলেন মার্কিন টেক জায়ান্ট অ্যাপলের প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস। তিনি ব্যক্তিগত জীবনে অত্যন্ত গোপনীয়তা রক্ষা করতেন। আর জীবনের নির্দিষ্ট কিছু বিষয় তো সব সময়ই গোপন করেছেন।

পারিবারিক জীবন থেকে অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার, যে রোগে শেষ পর্যন্ত মাত্র ৫৬ বছর বয়সে তিনি চিরবিদায় নিলেন, এর মাঝের বর্ণময় জীবনের খুব কম তথ্যই সাধারণ মানুষ জানতে পেরেছে। সদ্য প্রকাশিত আত্মজীবনীতে এই দাবি করেছেন স্টিভ জবসের বড় মেয়ে লিসা ব্রেনান জবস।

স্টিভ জবসকে তখন মানুষ সেভাবে চিনতেন না। ২৩ বছর বয়সে হাইস্কুলে পড়ার সময় জবসের বান্ধবী ক্রিস অ্যান ব্রেনান গর্ভবতী হয়ে পড়েন। ব্রেনানের সঙ্গে জবসের বিয়ে হয়নি। ১৯৭৮ সালে ব্রেনান একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। মেয়ের নাম রাখা হয় লিসা ব্রেনান জবস। কিন্তু স্টিভ জবস লিসা ব্রেনানের পিতা তা স্বীকার করতে চাননি। এ নিয়ে ক্রিস অ্যানের সঙ্গে স্টিভ জবসের প্রচণ্ড ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে স্টিভের বাড়ি ছেড়ে চলে যান ক্রিস অ্যান। পরবর্তী সময়ে ডিএনএ পরীক্ষা করা হলে প্রমাণিত হয় লিসার বাবা স্টিভ জবসই। কিন্তু তারপরও স্টিভ মানতে চাননি লিসা তার মেয়ে। 

স্টিভ জবস বলেছিলেন, ‘ডিএনএ পরীক্ষার ওপর ভরসা করা যায় না। পরীক্ষার ফলাফলেইতো লেখা রয়েছে ৯৪ শতাংশ নির্ভুল।’

প্রথম কন্যা লিসা ব্রেনানের জন্য স্টিভ কোনো খরচ দিতেন না। পরে আদালতে এ বিষয়ে মামলায় হেরে গেলে মেয়ের দেখাশোনা শুরু করেন স্টিভ। 

কিশোরী বয়সে বেশ কয়েক বছর লিসা বাবা স্টিভের সঙ্গে ছিলেন। সেই সময়ের কথাই মূলত উঠে এসেছে তার লেখা বই ‘স্মল ফ্রাই’ বইটিতে। লিসা ব্রেনানের কথায়, ‘বাবাকে তখন খুব ভয় পেতাম। প্রায়ই তিনি খুবই অদ্ভুত আচরণ করতেন। এক সন্ধ্যায় ল্যরেন পাওয়েল (ল্যরেন স্টিভের বিয়ে করা স্ত্রী) ও আমি ড্রয়িং রুমে বসে আছি। সেদিন বাবা ঘরে ঢুকে ল্যরেনের সঙ্গে খুবই ঘনিষ্ঠ হন। আমার খুবই অস্বস্তি হচ্ছিল। আমি সেখান থেকে চলে যেতে চাইলে বাবা বলেন, বসে থাকো। তুমি এখন আমাদের পরিবারের একটি অংশ।’

অ্যাপলের প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস। ছবি: সংগৃহীত

লিসা আরও দাবি করেছেন, স্টিভ জবস টাকার বিষয়ে খবুই কড়াকড়ি ছিলেন। লিসার ঘরে কোনো হিটিং মেসিন বসিয়ে দেননি তিনি। শীতের সময় ঠান্ডায় কাঁপত লিসা। সে সময় স্টিভ জবস লিসাকে বলেছিলেন, ‘নিজেকে সব রকম পরিস্থিতে তৈরি রাখতে হবে।’

আরও জানা গেছে, অনেক সময় শেষ সময় পর্যন্ত লিসার স্কুলের টাকা জমা দিতেন না স্টিভ। এমনকি রেস্টুরেন্টে লিসাকে খাওয়াতে নিয়ে গেলে বিল পরিশোধ না করেই স্টিভ বের হয়ে যেতেন।

আত্মজীবনীতে সৎমা ল্যরেনের সঙ্গে লিসার সম্পর্কের কথাও উঠে এসেছে। লিসা একবার মনোবিদের কাছে জানিয়েছিলেন, বাবা স্টিভ জবস এবং সৎমা ল্যরেন পাওয়েল তাকে নিজের মেয়ে বলে মনে করতেন না। রাতে ঘুমানোর আগে একবার ‘শুভ রাত্রি’ কথাটাও বলতেন না। 

এ বিষয়ে ল্যরেন বলেছিলেন, ‘আমরা মানুষগুলো খুবই কাঠখোট্টা।’

শুধু খারাপ দিকই নয়, লিসা বাবা স্টিভ জবসের কিছু ভালো দিকের কথাও তুলে ধরেছেন। বিশেষ করে স্টিভের শেষ কয়েক বছরের।

লিসা লিখেছেন, ‘বাবা তখন ক্যানসারে আক্রান্ত। সে সময় তিনি আমার কাছে বারবার ক্ষমা চেয়েছেন। জন্মদিন ভুলে যাওয়ার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন তিনি। এ ছাড়া আমার ঠিক মতো খোঁজখবর না নেওয়ার জন্যও ক্ষমা চেয়েছেন।’

লিসা অাত্মজীবনীতে আরও লিখেছেন, ‘বাবার মৃত্যুর কিছুদিন আগে, তখন সাংবাদিক হিসেবে আমার কিছুটা নাম হয়েছে। বাবা টিভি দেখছিলেন। হঠাৎ আমাকে প্রশ্ন করেন, তুমি কি আমাকে নিয়ে কোনো বই লিখবার কথা চিন্তা করছ?’ লিসা সে সময় উত্তরে জানায়, ‘না’। 

সূত্র: আনন্দবাজার, ফক্স নিউজ

প্রিয় সংবাদ/রুহুল