কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

আসামের ৪০ লাখ নাগরিকের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেন কিছু বাংলাদেশি। ১৭ আগস্ট রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে ছবিটি তোলা। ছবি: প্রিয়.কম

আসামে নাগরিকত্ব না-পাওয়াদের পাশে বাংলাদেশিরা

প্রদীপ দাস
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৭ আগস্ট ২০১৮, ২০:৩৯
আপডেট: ১৭ আগস্ট ২০১৮, ২০:৩৯

(প্রিয়.কম) ভারতের আসাম রাজ্যের প্রায় ৪০ লাখ নাগরিকের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে সংহতি মানববন্ধন করেছেন কিছু বাংলাদেশি।

১৭ আগস্ট, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে সাউথ এশিয়ান ইয়ুথ ফোরাম বাংলাদেশ।

সম্প্রতি আসাম রাজ্য সরকার জাতীয় নাগরিক নিবন্ধনের (এনআরসি) চূড়ান্ত খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে। এতে আসামে বসবাসরত ৪০ লাখেরও বেশি মানুষকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ভারতীয় নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি না-পাওয়াদের অধিকাংশই বাঙালি।

সংহতি মানববন্ধনে ৪০ লাখ নাগরিককে ‘নিপীড়িত’ উল্লেখ করে তাদের হয়রানি বন্ধের দাবি জানানো হয়। সেই সঙ্গে দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষকে ‘নিপীড়িত’ এ মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়।

এ সময় জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক মনিরুল কবির বলেন, ‘বিজেপি-আরএসএস এতদিন এনআরসি’র বিরোধী ছিল, কারণ নিখুঁত এনআরসি প্রকাশিত হলে দেখা যেত যে বিভিন্ন দেশ থেকে আগত হিন্দু অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা মুসলিমদের তুলনায় বহুগুণ বেশি।

এখন ক্ষমতায় এসে তারা যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে, তখন যুক্তিসঙ্গত অভিযোগগুলোর জায়গাতে তারা নিজস্ব দক্ষিণপন্থী রাজনীতির রূপায়ণ ঘটাচ্ছে। আসামের ঘন ঘন প্রলয়ঙ্করী বন্যা এবং ভ্রাতৃঘাতী সংঘর্ষের বলি হয়ে বহুবার জনগণকে সর্বস্ব হারিয়ে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিতে হয়েছে।

এসব প্রাকৃতিক এবং মানবসৃষ্ট ঘটনায় জনগণ একদিকে যেমন তাদের জীবন, সম্পত্তি এবং বহু মূল্যবান নথিপত্র হারিয়েছেন। অন্যদিকে দেশবিভাগের বলি হাজার হাজার অসহায় মানুষ গত ৫০-৬০ বছর যাবৎ আসামসহ ভারতবর্ষের নানা প্রান্তে খাস জমি, বনাঞ্চল, বস্তি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে এলেও তাদের হাতে কোনো ধরনের সরকারি নথি প্রদান করা হয়নি।

আজ এত বছর পর জনগণের পক্ষে এসব নথি সংগ্রহ করা যে অসম্ভব, তা জানা সত্ত্বেও সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে শুধু দলিলের ওপর ভিত্তি করে নাগরিক পঞ্জি তৈরি করার আসল উদ্দেশ্য নাগরিকত্ব প্রদান নয়, নাগরিকত্ব হরণের অপচেষ্টামাত্র।’

সাউথ এশিয়ান ইয়ুথ ফোরাম-বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘অগপ-আশু’র উদ্দেশ্য হলো হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে বাঙালি, সাঁওতাল, নেপালি, আদিবাসী চা-শ্রমিক এবং উত্তর ভারতীয় দিনমজুর খেদানো। যে হিংস্র অসমীয়া উগ্র-জাতীয়তাবাদের পিঠে চড়ে অগপ আসামের রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করেছিল, বিজেপি সেই জাতীয়তাবাদের ওপর একটি উগ্র-মুসলিমবিদ্বেষের চাদর মুড়িয়ে তাকে আরও জমকালো করে তুলেছে।’

মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পথিক, গণতান্ত্রিক গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি আলমগীর রনি, ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের বাংলাদেশ কমিটির সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ও গার্মেন্টস শ্রমিক নেতা কামরুল হাসান, জাতীয় শ্রমিক জোটের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মোসতাক আহমেদ, গৃহ শ্রমিক নেটওয়ার্কের নেতা মুক্তি বেগম, ইয়ুথ ফোরামের সহ-সভাপতি বেলাল, নাসির উদ্দিন তালুকদার, মো. কাজল, রিফাত প্রমুখ।

প্রিয় সংবাদ/আজাদ চৌধুরী