কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ান। ছবি: এএফপি

আমেরিকা আমাদের পিঠে ছুরি মেরেছে: এরদোয়ান

আবু আজাদ
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ১৩ আগস্ট ২০১৮, ২০:১৪
আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০১৮, ২০:১৪

(প্রিয়.কম) যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তিক্ত বিবাদকে কেন্দ্র করে তুরস্কের মুদ্রা লিরার মূল্যমানে ধস নামার পর প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ান বলছেন, ‘কৌশলগত মিত্র হয়েও আমেরিকা আমাদের পিঠে ছুরি মেরেছে।’

তুরস্কে আটক একজন আমেরিকান যাজককে নিয়ে কূটনৈতিক বিবাদের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র তুর্কি ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়মের ওপর দ্বিগুণ শুল্ক আরোপ করার পর ডলারের বিপরীতে লিরার মূল্যমান ক্রমাগত কমছে। এশিয়ার বাজারে একপর্যায়ে লিরার দাম ৭ দশমিক ২৪-এ নেমে যায়। তবে এখন তা কিছুটা স্থিতিশীল হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান আমেরিকার আচরণকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ আখ্যায়িত করে বলেন, ‘তুরস্ক জিম্মি হয়ে পড়েছে।’

ট্রাবজন শহরে সমর্থকদের এক সভায় প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেন, ‘যারা সারা বিশ্বের বিরুদ্ধে বাণিজ্যযুদ্ধ চালাচ্ছে, তাদের প্রতি আমাদের জবাব হবে নতুন নতুন বাজার এবং মিত্র বের করার পথে এগিয়ে যাওয়া।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করে তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘তারা ধাতু এবং ইস্পাতের ওপর ট্যারিফ বাড়িয়েছে। এটা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়মের মধ্যে পড়ে না।’

তুরস্কের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতোমধ্যে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ব্যবসা সহজতর করা এবং যত তারল্য দরকার, তা দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে, কিন্তু সুদের হার বাড়ায়নি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, তারা দেশটির অর্থ খাতের স্থিতিশীলতার ধরে রাখতে সব রকম পদক্ষেপই নেবে।

দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে বলেছে, তারা সামাজিক মাধ্যমের ৩৪৬টি অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে, যারা তাদের ভাষায় উস্কানিমূলকভাবে লিরার দর পড়ে যাওয়া নিয়ে মন্তব্য করেছিল।

যে কারণে আমেরিকার সঙ্গে বিবাদ

তুরস্কের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিবাদের কারণ হলো, গত দু’বছর ধরে তুরস্কে একজন আমেরিকার ধর্মযাজক বন্দী আছেন, যাকে এরদোয়ানবিরোধী অভ্যুত্থান এবং কুর্দি ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার জন্য অভিযুক্ত করা হয়।

তুরস্কের মুদ্রা লিরার বিনিময় হার কমে গেছে। ছবি: সংগৃহীত
তুরস্কের মুদ্রা লিরার বিনিময় হার ৭ শতাংশেরও বেশি কমে গেছে। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্র তার মুক্তি দাবি করলেও তুরস্ক তাকে ছেড়ে দিতে অস্বীকার করে। এরপরই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তুরস্কের ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্ক দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেন, আর তার আগে তুরস্কের দু’জন মন্ত্রীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এই পদক্ষেপে এরদোয়ান দাবি করেন, ‘তার দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।’

তুরস্ক সেই ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পেছনে ফেতুল্লাহ গুলেনের আন্দোলন জড়িত ছিল বলে দাবি করে, যিনি এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় অবস্থান করছেন।

ফেতুল্লাহ গুলেনকে বিচারের জন্য তুরস্কের হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যা এরদোয়ানের ক্ষুব্ধ হবার আরেকটি কারণ।

যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে যুদ্ধে কুর্দি বিদ্রোহী গ্রুপগুলোকে সমর্থন দিচ্ছে । এটাও তুরস্কের পছন্দ নয়, কারণ তুরস্ক নিজেই তাদের ভূখণ্ডে কুর্দি বিদ্রোহের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।

এ ছাড়া এরদোয়ান ইদানিং রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছেন, তাদের কাছ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার চুক্তি করেছেন। কিন্তু তুরস্ক রাশিয়ার শত্রু ন্যাটো জোটের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। দেশটির ইনজারলিক বিমান ঘাঁটিটি আইএস বিরোধী লড়াইয়ে ন্যাটো ব্যবহার করছে। তাই রাশিয়ার সঙ্গে এরদোয়ানের ঘনিষ্ঠতা ন্যাটোর জন্য এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে।

এ ছাড়া ইনজারলিক বিমান ঘাঁটি বন্ধ করে দেওয়ার জন্য তুরস্কের ভেতর থেকে এরদোয়ানের ওপর চাপ রয়েছে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

প্রিয় সংবাদ/শান্ত