কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

লরেন্স ই ডিকসন ও তার আংটি। ছবি: সংগৃহীত

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মৃত বাবার আংটি ফিরে পেল মেয়ে

আশরাফ ইসলাম
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ১৩ আগস্ট ২০১৮, ১১:১৬
আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০১৮, ১১:১৬

(প্রিয়.কম) মার্লা এল অ্যান্ড্রুস নামে এক নারী চোখে চশমা দিয়ে ছোট প্লাস্টিকের ব্যাগে থাকা স্বর্ণের আংটিটি দেখছেন। চোখে কম দেখেন মার্লা। মার্লার দৃষ্টি শক্তি কমে গেছে। তাই আংটিতে খোদাই করা শব্দগুলো পড়তে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। আংটির ভেতরে খোদাই করে লেখা রয়েছে, ‘পি.ডি’ আর একটা তীরবদ্ধ হৃদয়। শেষে লেখা রয়েছে ‘এল.ই.ডি. ৫-৩১-৪৩’।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, পি.ডি আসলে অ্যান্ড্রুসের মা ফিলিস ডিকসন। আর এল.ই.ডি তার বাবা লরেন্স ই ডিকসন। লরেন্স দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় টাস্কিগী পাইলট যোদ্ধা ছিলেন। ৩১ মে, ১৯৪৩ ছিল তার ২৩তম জন্মদিন।

টাস্কিগী আর্মি ফ্লাইং স্কুলে ডিকসন প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। ১৯৪৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর মাত্র ২৪ বছর বয়সে তিনি দক্ষিণ অস্ট্রিয়ায় এসকর্ট মিশন চলাকালীন মারা যান।

৭৩ বছর পর নিউ অরল্যান্স বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকের শিক্ষার্থী তিতাস ফারমিন ওই এলাকায় খননকার্যের সময় ডিকসনের এই আংটিটি খুঁজে পান। ৯ আগস্ট, বৃহস্পতিবার পাস্ট কনফ্লিক্ট রেপার্ট্রিয়েশন বিভাগের চিফ মাইকেল মি, মার্লা এল অ্যান্ড্রুসকে ফিরিয়ে দেন এই আংটি।

অ্যান্ড্রুস একটি সাদা টিস্যু আর একটি কালো মার্কার নিয়ে বসলেন। খুঁটিয়ে দেখার চেষ্টা করলেন আংটিটি। এই স্বর্ণের আংটিটি তার জীবনের এমন একজন মানুষের সাক্ষ্য বহন করছে যাকে তিনি সেভাবে চেনেনই না।

মার্লা এল অ্যান্ড্রুস প্লাস্টিকের ব্যাগে থাকা স্বর্ণের আংটিটি দেখছেন। ছবি: সংগৃহীত

বেশ কিছুদিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল খনন কাজে আংটি পাওয়া গেছে। শেষ পর্যন্ত মাইকেল মি বৃহস্পতিবার অ্যান্ড্রুসের হাতে তুলে দিলেন সেই আংটি।

অ্যান্ড্রুস বলেন, ‘অসাধারণ, এই সেই আংটি।’

মাইকেল মি প্লাস্টিক থেকে আংটিটি বের করে দেবেন কিনা বললে অ্যান্ড্রুস সেটা বের করতে দেননি। 

প্রতিবেদন থেকে আরও জানা গেছে, খননের সময় আংটিতে থাকা পাথরটিও পাওয়া গেছে। কিন্তু সেটি ভাঙা ছিল। সেই পাথরটিও অ্যান্ড্রুসের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

অ্যান্ড্রুস বলেন, ‘তার মা জলরঙ পছন্দ করতেন, তাই হতে পারে জলরঙা পাথরের সেই আংটিটি বাবার জন্মদিনে মা উপহার দিয়েছিলেন বাবাকে।’ 

জানা গেছে, খননকার্যে পাওয়া হাড়ের টুকরোর ডিএনএর সাথে অ্যান্ড্রুজের ডিএনএ পরীক্ষা করেও দেখা হয়। ওই এলাকা থেকে ডিকসনের পাঁজর, মেরুদণ্ড, বাহু আর পায়ের হাড়ের ছোট ছোট টুকরোও পাওয়া যায়।

নিউ অরল্যান্সের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জাদুঘর এবং অস্ট্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় নিউ অরল্যান্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পিওডব্লিউ ও এমআইএ অ্যাকাউন্টিং এজেন্সি এই খনন কার্যটি পরিচালনা করে।

প্রিয় সংবাদ/রুহুল