পুতিন দিচ্ছেন পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি, ইউক্রেন যুদ্ধ তবে কি শেষের পথে
গত সপ্তাহে রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমাদের উত্তেজনা নতুন মাত্রায় পৌঁছায়। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের সীমানার কাছে ট্যাকটিক্যাল পারমাণবিক অস্ত্রের মহড়ার ঘোষণা দেন। ক্রেমলিনের দিক থেকে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করা হয়েছে। তারা বলছে যে এই মহড়া আয়োজনের কারণ হচ্ছে, পশ্চিমা নেতারা ইউক্রেনে ন্যাটো সেনা মোতায়েনের কথা বলেছে এবং তাদের অস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে বলেছে।
গত ২ মে কিয়েভে আকস্মিক সফরে গিয়ে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসেন যে যত দিন দরকার তত দিন পর্যন্ত তারা কিয়েভের সহযোগিতা করে যাবে। রুশ ভূখণ্ডে হামলার জন্য ইউক্রেনীয়দের ব্রিটিশ অস্ত্র ব্যবহারের কিয়েভের পরামর্শও দেন তিনি। যুক্তরাজ্য ইউক্রেনকে দেওয়ার জন্য ফরাসি ও ব্রিটিশদের তৈরি করা স্ট্রম শ্যাডো মিসাইল এবং নিজেদের ড্রোন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সেই প্রসঙ্গ বলতে গিয়েই ডেভিড ক্যামেরন তাঁর এই পরামর্শ দেন।
পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করলেও এখন পর্যন্ত তারা খুব পরিষ্কারভাবে জানিয়ে আসছে যে রাশিয়ার মাটিতে হামলা চালাতে সেই অস্ত্র ব্যবহার করা হবে না। সে কারণে, এখন পর্যন্ত ইউক্রেন তাদের নিজ দেশে উৎপাদিত ড্রোন ও মিসাইল দিয়ে রাশিয়ার ভেতরে বিভিন্ন সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় হামলা করে আসছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ বারবার করে তাঁর দিক থেকে বলে আসছেন, ইউক্রেনে ন্যাটোর সেনা মোতায়েনের প্রশ্নটি ফয়সালা করা দরকার। এ মাসে দ্য ইকোনমিস্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আবারও তিনি এ বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেন।
বিস্তারিত কিছু খোলাসা না করলেও মাখোঁ বলেন, এ ব্যাপারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘কৌশলগত অস্পষ্টতা’ বজায় রাখা উচিত। এ ব্যাপারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রকৃত উদ্দেশ্য কী, সেটা যেন রাশিয়ার কাছে ধাঁধা হিসেবে থেকে যায়।
কিন্তু রাশিয়া ধাঁধার এই খেলায় নামতে রাজি নয়। তারা সরাসরি ইউক্রেনের সীমানাসংলগ্ন দক্ষিণ অঞ্চলের সামরিক জেলায় ট্যাকটিক্যাল পারমাণবিক অস্ত্রসহ সামরিক মহড়ার ঘোষণা দেয়। এর মধ্য দিয়ে তারা পশ্চিমকে খুব স্পষ্ট বার্তা দিয়ে চেয়েছে।
এখানে আরেকটি বিষয় পরিষ্কার করা দরকার যে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্রিটিশ ও ফরাসি দূতদের তলব করে এবং তাদের যে ভাষায় তিরস্কার করেছে, তা জনসমক্ষে প্রকাশ করে দিয়েছে।
মাখোঁর বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে রাশিয়া তাদের বিবৃতিতে বলেছে এটা ‘প্ররোচনামূলক’ ও ‘ধ্বংসাত্মক’ কর্মকাণ্ড। যুক্তরাজ্যের উদ্দেশ্যে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, সেটা আরও কর্কশ। রাশিয়া বলেছে, ব্রিটিশ অস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার লক্ষ্যবস্তুতে হামলার অনুমোদন দেওয়ার মধ্য দিয়ে এই সংঘাতের একটি পক্ষ হয়ে গেল যুক্তরাজ্য।