কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

You have reached your daily news limit

Please log in to continue


‌বাংলাদেশ কেন স্বর্ণ চোরাচালানের সবচেয়ে বড় করিডোর?

পেঁয়াজ, রসুন, আদা এমনকি কাঁচামরিচ আমদানি বা চোরাচালানের কারণ কী? দৃশ্যতই সরবরাহ ঘাটতি। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, অতএব আমদানি করতেই হবে, নতুবা হবে চোরাচালান। প্রয়োজন বড় বালাই। প্রয়োজনেই আমদানি, প্রয়োজনেই চোরাচালান। কিন্তু তাই বলে স্বর্ণ চোরাচালান হয়ে দেশে আসবে কেন? স্বর্ণ নিত্যপ্রয়োজনীয় কোনো বস্তু নয়, নয় কোনো দরকারি, ভীষণ দরকারি বস্তু। দেখা যাচ্ছে, তা সত্ত্বেও বাংলাদেশে প্রতি বছর স্বর্ণ চোরাচালান হয়ে আসছে। এর ওপর একটা ভালো প্রতিবেদন দেখলাম দৈনিক ‘‌বণিক বার্তা’য় (১৫.৭.২৩)। দেখা যাচ্ছে, এ বছরের অর্থাৎ ২০২৩ সালের প্রথম পাঁচ মাসেই চোরাচালানকৃত স্বর্ণ জব্দ করা হয়েছে ১২১ টনের ওপর। তার মানে মাসে ২৪ টনের ওপর। এ হিসাবে বছরে হবে ৩০০ টনের কাছাকাছি। খবরে দেখা যাচ্ছে, এসব চোরাচালানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে কয়েকজন। বলা বাহুল্য, যে পরিমাণ স্বর্ণ জব্দ হয়েছে তা-ই কি চোরাচালান হয়ে বাংলাদেশের সীমান্তে ঢুকছে। নিঃসন্দেহে বলা চলে, তা নয়। চোরাচালানকৃত স্বর্ণের পরিমাণ হবে আরো অনেক বেশি। বস্তুত, এটি এক দশকের ঘটনা নয়। স্বর্ণ চোরাচালান ঘটছে কবে থেকে তা বলা বড়ই মুশকিল। আমি অন্তত স্বাধীনতার পর থেকে দিনের পর দিন খবরের কাগজে পড়ে আসছি—স্বর্ণ চোরাচালানের ঘটনা, সঙ্গে হুন্ডিওয়ালাদের ‘‌কীর্তি’। এর কোনো বিরাম নেই। চোরাচালান হচ্ছে কখনো কম, কখনো বেশি। এটি বন্ধ নেই। প্রশাসনিক পদক্ষেপ গৃহীত হচ্ছে, মামলা-মোকদ্দমা হচ্ছে, কিছু লোকের বিচার হচ্ছে, কিন্তু ‘‌যথা পূর্বং তথা পয়ং’। এটি নিয়মিত চলছে। বলা যায়, স্বর্ণ চোরাচালান একটি নিয়মিত ব্যবসা (ট্রেড)। ভালো সংগঠিত ব্যবসা। 

আমরা স্বর্ণ দেশে তৈরি করি না, কিছুদিন আগে পর্যন্ত সীমিত পরিমাণেও স্বর্ণ বৈধভাবে আমদানি হতো না। তবু সারা দেশের বাজারে বাজারে গজিয়ে উঠছে হাজার হাজার স্বর্ণের দোকান। তকতক ঝকঝক সব দোকান রীতিমতো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। আজকের বায়তুল মোকাররমে স্বাধীনতার আগে হরেক রকমের দোকান ছিল। কিন্তু এখন সব স্বর্ণের দোকান। নিউ মার্কেটেও তাই। শুধুই স্বর্ণের দোকান আর দোকান। মফস্বলেও তাই। মফস্বলে এখন বিদ্যুৎ আছে। গ্রামের বাজারে যেখানে পুরনো স্বর্ণের দোকান ছিল, ছিল কর্মকার শ্রেণীর কারিগর, সেখানে এখন রাত-বিরাতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত দোকানে ধর্মপ্রাণ নারীরা পর্যন্ত স্বর্ণের দোকানে নিজেদের পছন্দের গহনা কেনেন। অভূতপূর্ব ঘটনা। যতই দেশে রেমিট্যান্স বেড়েছে, ক্রমান্বয়ে বেড়েছে স্বর্ণের গহনার চাহিদা। হতে পারত ভিন্ন একটি চিত্র। রেমিট্যান্সের টাকা/ডলার মানুষ ব্যাংকে আমানত হিসেবে রাখতে পারত। আজকাল গ্রামে গ্রামে ব্যাংক শাখা আছে, এজেন্ট ব্যাংক আছে। কিন্তু না, দেখা যাচ্ছে, মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখতে চায় না। এর কারণ কী? কারণ হয়তো অনেক আছে। এর মধ্যে প্রথম কারণ হচ্ছে, বর্তমানে ব্যাংকে কোনো ‘‌সুদ’ পাওয়া যায় না। মূল্যস্ফীতির হারের চেয়ে কম হচ্ছে আমানতে সুদের হার। তারপর আছে ব্যাংকে টাকা রাখার ঝামেলা। টাকা কোথায় পেলেন—এ প্রশ্ন ব্যাংকারদের, যেন তারা পুলিশ, আয়কর কর্মকর্তার ভূমিকায় অবতীর্ণ। টাকা জমা দেয়ার সর্বোচ্চ সীমা আছে, আবার তোলার ক্ষেত্রেও। মনে হয়, তা এখন ৯ লাখ টাকার মতো। এর ঊর্ধ্বে হলে প্রশ্ন, খাতাপত্র নিয়ে টানাটানি। এসব ঝামেলা কে পোহাতে যায়?

এছাড়া আরো একটা বড় কারণও আছে। আর সেটি হচ্ছে স্বর্ণের ‘‌মেটার ভ্যালু’। স্বর্ণ বাড়িতে নিজের হাতে রাখা যায়। এতে লাভও বেশি। কেমন? একটা হিসাব দিই। স্বাধীনতার পরপর এক ভরি স্বর্ণের দাম ছিল মাত্র ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। তাও ক্রেতা ছিল না। বাজারে গিয়ে স্বর্ণের কর্মকারদের কাছে ধরনা দিতে হতো। আর আজ? স্বর্ণের দাম কত? এক ভরি ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ১ লাখ টাকার ওপরে উঠেছে। প্রতিদিনই এর দাম ডলারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। এখন ভাবুন, যারা স্বাধীনতার পর ১০ ভরি স্বর্ণ রেখেছিল তার এখন মূল্য কত? বিপরীতে যিনি সেই পরিমাণ টাকা ব্যাংকে আমানত হিসেবে রেখেছিলেন তার টাকা কত গুণ বেড়েছে? নিশ্চিতভাবেই এই ক্ষেত্রে স্বর্ণের গুরুত্ব বেশি। অবশ্য আরেকটা জিনিসের দাম আরো বেশি বেড়েছে। আর সেটা হচ্ছে জমি/বাড়ি/ফ্ল্যাট। এসবের দামও ক্ষণে ক্ষণে বাড়ছে। ডলারের দাম বাড়ছে, সোনার দাম বাড়ছে, বাড়ছে জমির দাম—কমছে টাকার ক্রয়ক্ষমতা। সম্ভবত এ বিবেচনায়ই আমাদের দেশের মা-মাসি-খালাম্মারা স্বর্ণ ধরে রাখাকে পছন্দ করতেন। স্বর্ণের দাম বাড়ে, স্বর্ণ বিপদের বন্ধু। স্বর্ণ মর্টগেজ দিয়ে লোন পাওয়া যেত। টাকা হাতে থাকলে খরচ হয়ে যেতে পারে। দ্বিতীয় যে কাজটি তারা করতেন—কিছু স্বর্ণ জমলে তা বিক্রি করে মায়েরা অল্প-স্বল্প জমি কিনতেন। এসবই গরিবের বন্ধু। ছেলেমেয়ের বিয়েশাদিতে এসব কাজে লাগে। স্বর্ণ-জমি বিক্রি করে প্রয়োজনীয় খরচ নির্বাহ করা যেত। এছাড়া কাঁচা টাকা, ‘উপরি’ রোজগারের টাকাও তারা স্বর্ণে রাখত। অথচ এসবকে আমাদের অর্থনীতিবিদরা বলতেন, ‘আন-প্রোডাক্টিভ বিনিয়োগ’। এখন দেখা যাচ্ছে, স্বর্ণে বিনিয়োগই অধিকতর লাভজনক। একে আরো বেশি আকর্ষণীয় করে তুলছে ব্যাংকের নতুন নতুন নিয়মনীতি, কড়াকড়ি, ডিজিটাল ব্যাংকিং, ক্যাশলেস অর্থনীতি ইত্যাদি।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন