রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সড়ক-মহাসড়কগুলোয় যানবাহন চলাচলে কোনো রকম শৃঙ্খলা নেই বললেই চলে। সড়কের মাঝখানে যত্রতত্র বাস থামিয়ে যাত্রী উঠানো-নামানো হয়। এক বাস কর্তৃক আরেক বাসকে ওভারটেক করার প্রবণতা দেখা যায় সর্বত্র। অন্যদিকে অনেক স্থানে দ্রতগতিতে চলা যানবাহনকে তোয়াক্কা না করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হতে দেখা যায় পথচারীদের।
পথচারীরা একদিকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে রাস্তা পার হন, অন্যদিকে বেপরোয়া চালকরা ট্রাফিক আইন মানেন না। ফলে দুপক্ষের অসতর্কতার কারণে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। শুক্রবার যুগান্তরে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে-চালকের অনিয়ন্ত্রিত চালনা, পথচারীদের অসচেতনতা, মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারণে অসতর্কতা, ভিআইপিদের গাড়ি রং সাইডে চলার প্রবণতা ইত্যাদি কারণে সড়কে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির চিত্র।
পথচারীবান্ধব অবকাঠামো না থাকাও সড়কে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির একটি বড় কারণ। অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ফুট ওভারব্রিজ কিংবা জেব্রাক্রসিং নেই; থাকলেও তা কার্যকর হচ্ছে কিনা অর্থাৎ পথচারীরা ব্যবহার করছেন কিনা, সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি নেই।
পথচারীদের নির্দিষ্ট জেব্রাক্রসিং ব্যবহারের বিষয়টি মূলত আইনের প্রয়োগ ও সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর নির্ভরশীল। নিয়মমাফিক যান চলাচলের বিষয়টিও আইনের প্রয়োগসংক্রান্ত। সড়ক নিরাপদ করার দাবিতে আন্দোলন শুরুর পর সরকার সড়ক পরিবহণ আইন তড়িঘড়ি করে পাস করলেও তা আজও কার্যকর হতে আমরা দেখিনি। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, এর পেছনে রয়েছে শ্রমিক-মালিক সংগঠনগুলোর রাজনৈতিক প্রভাব।
সড়কে নিয়ম মেনে চলাচলের বিষয়ে যেমন জনগণকে সচেতন করা প্রয়োজন, তেমনি যানবাহন চালকরা প্রশিক্ষিত কিনা, সেটিও দেখভাল করা জরুরি। ট্রাফিক পুলিশ ও বিআরটিএ এসব ক্ষেত্রে কতটুকু কার্যকর ভূমিকা পালন করছে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। প্রতিবছর বাজেটে সড়ক ও সেতু নির্মাণ এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। কিন্তু নির্মাণ কাজগুলো দৃশ্যমান হলেও রক্ষণাবেক্ষণ এবং মান উন্নয়নে কার্যত কোনো পদক্ষেপ সেভাবে চোখে পড়ে না।
- ট্যাগ:
- মতামত
- নৈরাজ্য
- সড়কে শৃঙ্খলা