কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

You have reached your daily news limit

Please log in to continue


বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ড আমাদের কী বার্তা দেয়?

নিমতলীর রাসায়নিক বোঝাই গুদামঘর, তাজরীন গার্মেন্টস, সেজান জুস কারখানা, সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপো থেকে সীমা অক্সিজেন, হাতিমারা পাথারিয়া থেকে রাজকান্দি বন কিংবা ঢাকার বঙ্গাবাজার, একের পর এক প্রশ্নহীন আগুন। নিমিষেই অঙ্গার টাটকা জীবন, বিধ্বস্ত বাস্তুতন্ত্র, চুরমার সংসার, ভষ্ম জীবিকা, বিশৃঙ্খল পরিবার। তদন্ত হচ্ছে, বিশেষজ্ঞ কমিটি সুপারিশ করে, মামলা হয়, ক্ষতিপূরণ কিছু দেয়া হয়। কিছু ধরপাকড় চলে। দৃষ্টান্তমূলক কিছুই হয় না। প্রতিবারই দেখা যায় প্রতিটি ঘটনায় অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে সর্বস্তরের গাফিলতি থাকে এবং অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে এমন ঝুঁকি মোকাবেলার কোনো প্রস্তুতিও সেসব জায়গায় থাকে না। বঙ্গবাজার থেকে শুরু করে কারখানা কিংবা বসতবাড়ি বা মজুতাগারের নির্মাণশৈলী এবং অগ্নিনির্বাপণসহ সামগ্রিক নিরাপত্তা এতো দায়সারা কেন?

৪ এপ্রিল সকালে আগুন লাগল ঢাকার ঐতিহাসিক বঙ্গবাজারে। ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিট, সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী এবং সাধারণ জনতার চেষ্টায় ছয় ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রনে আসে। আগুনে পুড়ে গেছে বঙ্গবাজার, মহানগর, আদর্শ ও গুলিস্তান মার্কেট। ফায়ার সার্ভিসের তিন সদস্যসহ ৮ জন আহত ও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বঙ্গবাজারে আগুন লাগার কারণ এখনো জানা যায়নি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোশনের মালিকানাধীন বঙ্গবাজার চারটি ইউনিটে বিভক্ত। বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স, মহানগর কমপ্লেক্স, গুলিস্তান কমপ্লেক্স এবং আদর্শ ইউনিট। ছোট বড় মিলিয়ে দোকান প্রায় দুই হাজার ৩৭০টি।

তবে এই প্রথম বঙ্গবাজারে আগুন লাগেনি। ১৯৯৫ সনে আগুনে ভস্ম হয়েছিল বঙ্গবাজার। অগ্নিকাণ্ডের পর নতুন করে আবার গড়ে তোলা হয় বাজারটি। কিন্তু সেই স্থাপনা ও নির্মাণশৈলীতে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি সামাল দেয়ার বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়ে বিবেচনা করা হয়নি। কারণ এরপর ২০১৮ সনের ২৪ জুলাই আবারও আগুন লেগে গুলিস্তান ইউনিটের বহু দোকান ভষ্মীভূত হয়। ১৯৯৫ থেকে ২০১৮ দুই বারের বড়ধরণের অগ্নিকাণ্ডের পরও বঙ্গবাজার কর্তৃপক্ষ তৎপর হননি। দেশের গুরুত্বপূর্ণ অতি ব্যস্ততম জনবহুল ঘিঞ্জি এই মার্কেটে মূলত বেচাকেনা হয় কাপড়ের মতো দাহ্য উপকরণ। অথচ বারবার আগুনে এর দোকানপাট অঙ্গার হয়, রুটিরুজি নিয়ে পথে বসতে হয় বহু মানুষের। খানখান হয়ে যায় বহুজনের টেনে চলা সংসার। কিন্তু এরপরও এরকম মার্কেটগুলোতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা জোরদার করা হয় না। দমকলবাহিনী জীবন দিয়ে আগুন নেভাতে তৎপর হয়। কিন্তু এসব মার্কেট এতো ঘিঞ্জি থাকে যেখানে অগ্নিনির্বাপণের সকল সরঞ্জাম নিয়ে প্রবেশ করা দুঃসহ হয়ে পড়ে। এমনকি এসব মার্কেটে পর্যাপ্ত কোনো পানির ব্যবস্থাও থাকে না, না থাকে চারধারে কোনো উন্মুক্ত অঞ্চল। বারবার এমনি ঘটছে। মার্কেট থেকে কারখানা, বাসাবাড়ি থেকে গুদামঘর অগ্নিকাণ্ড বিষয়ে আমাদের প্রশ্নহীন অবহেলা বারবার কেড়ে নেয় বহু জীবন ও সম্পদ। অপ্রতুল উপকরণ, সংকীর্ণ পথ, বিপজ্জনক অভ্যন্তর, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন এবং দাহ্য পদার্থের ভেতর এরপরও আমাদের দমকল বাহিনীসহ সকলের অদম্য চেষ্টায় ক্ষয়ক্ষতির প্রবলতা কমে, নেভে আগুন, এও এক চূড়ান্ত বিস্ময়। এমনকি এবারের অগ্নিকাণ্ডের পর ফায়ার সার্ভিসের অফিস ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ২০১৯ সালে বঙ্গবাজার অগ্নিকাণ্ডের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে তারা নোটিস টানিয়েছিল, কিন্তু মার্কেট কর্তৃপক্ষ সে বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি।

কবে আমাদের মার্কেট, ভবনমালিক, কারখানা কিংবা কর্তৃপক্ষের হুঁশ হবে? বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সামগ্রিকভাবে আগুন নেভানো ও জানমালের উদ্ধার তৎপরতার পাশাপাশি আশা করি তদন্ত কমিটির মাধ্যমে দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের পাশাপাশি আহতের চিকিৎসা এবং ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণে কর্তৃপক্ষ ও রাষ্ট্র মানবিক ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে এই রমজানের মাসে, ঈদ উৎসবের আগে যাদের জীবনজীবিকা পুড়ে অঙ্গার হয়েছে তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব। তাজরীন গার্মেন্টস থেকে সীতাকুণ্ড কিংবা সাম্প্রতিক বঙ্গবাজার প্রতিটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কর্তৃপক্ষের চূড়ান্ত গাফিলতি ও অবহেলা প্রমাণিত হলেও রাষ্ট্র মালিকপক্ষকে কোনো দৃষ্টান্তমূলক বিচার ও দণ্ডের আওতায় আনতে পারছে না। যে কারণে চূড়িহাট্টা থেকে সেজান কিংবা সীমা অক্সিজেন কারখানা কিংবা বঙ্গবাজারে পুড়ছে জীবন ও সম্ভাবনা।

বাসাবাড়ি থেকে কারখানা কিংবা মার্কেট সর্বত্র অগ্নিকাণ্ড বিষয়ে নিরাপত্তা ও নির্বাপণ বিষয়ে সামগ্রিক জনসক্রিয়তা জরুরি। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের নীতি ও অঙ্গীকার সুস্পষ্ট ও জোরালো হতে হবে। বঙ্গবাজারের অঙ্গারের স্তুপে পূর্ববর্তী কিছু অগ্নিকাণ্ডের নির্দয় আহাজারির ছায়াও দেখতে পায় চলতি আলাপ। প্রতিটি বিপদ ও সংকট আমাদের নতুন কিছু বার্তা দেয়। সেই বার্তা থেকে শিক্ষা নিয়ে জীবন ও জীবিকা বিকাশের নতুন প্রস্তুতি নিতে হয়। কিন্তু বারবার প্রতিটি অগ্নিকাণ্ড থেকে আদতেই আমরা কোনো শিক্ষা নিচ্ছি কী? দুর্যোগবিদ্যার বিশ্লেষণে অগ্নিকাণ্ড এক আপদ, যা বিপদ ও ঝুঁকি তৈরি করে এবং পরিস্থিতি সামাল না দিতে না পারলে দুর্যোগ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তো অগ্নিকাণ্ডের মতো আপদ-বিপদ সামালে আমাদের দক্ষতা ও প্রস্তুতিকে সামগ্রিকভাবে সক্রিয় করা জরুরি।  

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন