কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

You have reached your daily news limit

Please log in to continue


ব্যাধি-মহামারী বনাম মার্কস-লেনিন

কার্ল মার্কসের পাথরমূর্তি আজও বহাল তবিয়তেই রয়েছে। অবশ্য মাঝেমধ্যে শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদী ফ্যাসিস্ট বদমাশদের দ্বারা আক্রান্ত হয়। বিলেতে মার্কসের পাথরমূর্তি আমেরিকার স্ট্যাচু অব লিবার্টির মূর্তির চেয়েও মহিমান্বিত। অন্যদিকে রুশ বিপ্লবের জনক তথা বিশ্বের মেহনতি জনতার মুক্তিদাতা ভøাদিমির ইলিচ লেনিন রয়েছেন মমি হয়ে, মস্কোয়। সোভিয়েত ইউনিয়নের ধ্বংসকারী গর্বাচেভ আর ইয়েলেতসিন সে মমিকে স্পর্শ করার সাহস পায়নি। সোভিয়েতের গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবির প্রাক্তন প্রধান বর্তমান রুশ রাষ্ট্রনায়ক ভøাদিমির পুতিনও লেনিনের মমিকে জাদুঘর থেকে অপসারিত করে কবরগুহায় স্থানান্তর করেননি। লেনিনের সে সোভিয়েত ইউনিয়ন আজ আর নেই, মহাশক্তিধর হিসেবে এক দিন সাম্রাজ্যবাদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামনে ছিল দণ্ডায়মান, তা অতীত। কিন্তু মমিতে পরিণত হয়েও লেনিন আছেন, মানবসভ্যতার অবশ্যম্ভাবী আগামী মহাবিপ্লবের ঘুমন্ত ভলকানো হয়ে। এটাই পুঁজিবাদের চিরস্থায়ী আতঙ্ক। দুঃস্বপ্ন। তবে লেনিন যে একেবারে ভাগ্যশূন্য এমন দাবি করা যাবে না। সোভিয়েত ইউনিয়ন বিলোপ হলে আমেরিকার ইন্ধনে এবং গোপন অর্থে সারা দেশে বুলডোজার দিয়ে লেনিনের মূর্তি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। শুধু তা-ই নয়, পূর্ব ইউরোপের সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোতে রাজনৈতিক বিবর্তন ঘটলেও একই কাণ্ড ঘটানো হয়। বাংলাদেশের একেবারে কানঘেঁষা ক্ষুদ্র ভারতীয় রাজ্য ত্রিপুরায়ও উগ্র হিন্দু মৌলবাদী রাজনৈতিক দল বিজেপি ক্ষমতায় আসামাত্র লেনিনের মূর্তিকে দুরমুশ করা হয়েছে।

মূর্তি ভাঙার ঐতিহ্য মানবসমাজের নতুন কোনো দর্শন নয়। এর শুরু সভ্যতার একেবারে গোড়ায়। এর পেছনে রয়েছে আধিপত্যবাদী বাসনা। রাজনীতি, সংস্কৃতি, ধর্ম-বিশ্বাসের ইন্ধন শক্তি। মানবসভ্যতার প্রাচীন এবং মধ্যযুগ তো হচ্ছে মূর্তি ভাঙার যুগ। আধুনিক যুগ তার উত্তরসূরি। আমরা স্মরণ করতে পারি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে। বিদ্যাসাগর হচ্ছেন বাঙালির মাতৃভাষা চর্চার আদি গুরু। সত্তর দশকে কলকাতায় বিদ্যাসাগরের মূর্তির মুন্ডু ছেদন করে মাওবাদী নকশাল কমিউনিস্টরা। পরে তারা ভুল স্বীকার করলেও ইতিহাস ভোলা যায় না। তখন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের মূর্তিও পুলিশ পাহারায় ছিল কিছুদিন। কী অপরাধ রবীন্দ্রনাথের? না তিনি ‘বুর্জোয়া কবি’। একেবারে হালে বিদ্যাসাগরের নিজের কলেজের ভেতরই তার ক্ষুদ্র মূর্তিটি ভেঙে দেয় আরএসএস, বিজেপির উগ্রহিন্দু মৌলবাদী মিছিলকারী যুবকরা। কেন এই আদিম অভ্যাস ভাঙাভাঙির? ভয়! আতঙ্ক! মূর্তিকে আবার ভয় কী? সে তো জড়পদার্থ। শক্তিহীন। প্রতিরোধ-শূন্য। ভয় অবশ্যই আছে, মূর্তির ভয় নয়, ভয় আদর্শের, মূর্তি-হয়ে-যাওয়া একদা জীবন্ত মানুষটির অগ্নিময় মতাদর্শের। এই মতাদর্শের তো মৃত্যু নেই। সে অমর। রবীন্দ্রনাথ তার ‘ছবি’ কবিতায় মৃত স্ত্রীর ছবির দিকে তাকিয়ে আত্মপ্রশ্ন জাগিয়েছিলেন, ‘হায় ছবি, তুমি কি কেবল ছবি শুধু পটে লিখা?’ কবি শামসুর রাহমানের একটি অসাধারণ কবিতা আছে অকাল-মৃত পুত্রের ছবির দিকে তাকিয়ে। কবির শ্যামলীর বাসায় এ বিষয়ে তাকে আমি প্রশ্ন করেছিলাম। কবি ছিলেন নীরব। ঠোঁট কাঁপছিল। চোখ সজল। তাতেই আমি উত্তরটাও পেয়ে যাই। অনেকক্ষণ পর কবি প্রশ্ন করেছিলেন, ‘হরিপদ, আপনি কি সাঁতার জানেন?’ কেননা এ প্রশ্নের পেছনে ছিল কবিপুত্রের পানিতে ডুবে অকালমৃত্যু।

অন্যদিকে মূর্তির অমরত্বের পেছনে যে শুধু শুভশক্তিই রয়েছে তা কিন্তু নয়। অশুভ শক্তিও আছে। ধরা যেতে পারে মহাসমুদ্র অভিযাত্রী কলম্বাসের কথা। সাম্রাজ্যবাদ আর উপনিবেশবাদ সমর্থক ইতিহাসবিদরা কলম্বাসের গুণকীর্তনে মুখর। শ্বেতাঙ্গ ইউরোপীয়দের উপনিবেশ স্থাপনে যেসব সমুদ্র-অভিযাত্রী নতুন দেশ-ভূমি আবিষ্কার করে সহায়তা করে দিয়েছেন, কলম্বাস তাদের অন্যতম। আমেরিকার ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যে কলম্বাসের একটি মূর্তি ছিল। তা ভেঙে দেয় আমেরিকার আদিবাসী ভূমিপুত্রদের একদল রাগী যুবক। এতে হয়তো তাদের শ্বেতাঙ্গ ইউরোপীয় দখলদারদের প্রতি ঘৃণাই প্রকাশ পেল। কিন্তু উপনিবেশবাদের ইতিহাস, বর্ণবিদ্বেষের ইতিহাস বদলানো কি গেল? নিশ্চয়ই নয়। ইতিহাসের কবর খুঁড়লে তো স্তূপের পর স্তূপ শোষণ-নির্যাতনের কঙ্কাল বেরিয়ে আসবে। অন্যদিকে কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গের ভেতর আজও সগৌরবে বিরাজ করছে একটি মূর্তি। পলাশী যুদ্ধের খলনায়ক, ভারতবর্ষে ইংরেজ উপনিবেশ স্থাপনের স্থপতি রবার্ট ক্লাইভের। ইংরেজের তৈরি মূর্তি। অতীতে ছিল, বর্তমানেও আছে। কই, এত বছর পরও কোনো বাঙালি তো সেই মূর্তি ভাঙতে গেল না? ভাঙল বিদ্যাসাগরের মূর্তি! এ কী রহস্যময় বাঙালি চরিত্র?

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন