কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

You have reached your daily news limit

Please log in to continue


আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমার সুফল নেই কেন

আমরা যেসব পণ্য ও কাঁচামাল আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আমদানি করি, সেগুলোর স্থানীয় দামের ক্ষেত্রে বিশ্ববাজারের দামের একটা প্রভাব থাকে এবং সেটাই স্বাভাবিক। তাই কোনো সময় কোনো পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে গেলে আমদানি ব্যয় বেড়ে যায় এবং শেষ পরিণতিতে ভোক্তাকে তা বেশি দাম দিয়ে কিনতে হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম কমলে স্থানীয় বাজারে সেই অনুপাতে এর প্রভাব পড়তে দেখা যায় না। বরং জ্বালানি তেলের ক্ষেত্রে এর উলটোটাই দেখলাম আমরা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বারেলপ্রতি ১০০ ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমছে। বৃহস্পতিবার রাতে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম নেমে আসে ৯৩ দশমিক ৮১ ডলারে, যা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সর্বনিম্ন। অথচ শুক্রবার বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম রেকর্ড পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অকটেনের ক্ষেত্রে এ দাম বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ, প্রায় ৫২ শতাংশ। ডিজেলের ক্ষেত্রে ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির এই হার অযৌক্তিক ও অকল্পনীয়। এর প্রভাব পড়বে আরও অনেক পণ্য ও সেবার মূল্যে। ফলে বেড়ে যাবে জীবনযাত্রার ব্যয়।

প্রশ্ন হচ্ছে, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বাড়ার কারণে আমরা যে পরিমাণ ভোগান্তির শিকার হই, দাম কমার ফলে সেই পরিমাণ স্বস্তি ভোগ করতে পারি না কেন? করোনা অতিমারি ও পরবর্তী সময়ে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে সংকট দেখা দিয়েছে। বিশ্ববাজারে খাদ্য ও জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। যুদ্ধের ভয়াবহতার কথা চিন্তা করে অনেক দেশই নিজ নিজ দেশের পণ্য রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্য সরবরাহ কমে যায়, যার পরিণামে দাম বৃদ্ধি পায়। আমরা এর কুফল ভোগ করতে বাধ্য হয়েছি। কিন্তু অতিসম্প্রতি দেশগুলো রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের সরবরাহ বেড়েছে, ফলে দাম কমেছে। আন্তর্জাতিক বাজারের ২৩ মে ও ৩১ জুলাইয়ের একটি তুলনামূলক দামচিত্র গত সপ্তাহে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তাতে দেখা যায়, ২৩ মে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন গমের দাম ছিল ৫০৬ ডলার; ৩১ জুলাই তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৫৩ ডলারে। অর্থাৎ দাম কমেছে প্রায় ৩০ শতাংশ। কিন্তু স্থানীয় বাজারে আটার দাম কমেছে মাত্র ৭ শতাংশ। দুই মাস আগে আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম ছিল টনপ্রতি ১ হাজার ৯৭০ ডলার, যা জুলাইয়ের শেষে কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৫৬ ডলারে। শতকরা হিসাবে আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম কমেছে ৩১ শতাংশ; পাম অয়েলের দাম কমেছে প্রায় ৩৬ শতাংশ (প্রতি টন ১ হাজার ৬৯০ ডলার থেকে কমে ১ হাজার ৭৫ ডলার)। অথচ আমাদের দেশে অভ্যন্তরীণভাবে ভোজ্যতেলের দাম কমেছে মাত্র ১০ শতাংশ। মসুর ডালের দাম ১৯ শতাংশ কমে টনপ্রতি ৭০৩ ডলার থেকে ৫৬৬ ডলারে নেমেছে, কিন্তু আমাদের কিনতে হচ্ছে আগের দামেই। চিনির দাম ৬ শতাংশ কমলেও আমাদের বাজারে কিছুটা বেড়েছে।

আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম কমা সত্ত্বেও কেন আমরা সে পরিমাণ সুবিধা ভোগ করতে পারছি না, আমদানিকারকরা এর দুটি কারণ উল্লেখ করেছেন-এক. বিশ্ববাজারে পড়তি দামের পণ্য এখনো দেশে না আসা; দুই. ডলারের দাম স্থানীয়ভাবে বেড়ে যাওয়া। প্রথমটি নিয়ে আমাদেরও কিছু পর্যবেক্ষণ আছে। এ কথা ঠিক, বিশ্ববাজারে শনিবার দাম কমে গেলে রোববারেই সেই পণ্য স্থানীয় বাজারে আসবে না; পণ্য পরিবহণে কিছুটা সময় লাগবে। তাই দাম অপরিবর্তিত থাকার পেছনে যুক্তি আছে। কিন্তু যখন বিশ্ববাজারে শনিবার কোনো পণ্যের দাম বাড়ে, তখন রোববারেই কেন পণ্যের দাম বেড়ে যায়? তখন পণ্য কি জাহাজের পরিবর্তে ইন্টারনেটের ভেতর দিয়ে আসে? এর জ্বলন্ত উদাহরণ হলো ইউরিয়া সারের দাম বৃদ্ধি করা। প্রতি কেজি ইউরিয়া সারের দাম বাড়ানো হয়েছে প্রায় ৩৪ শতাংশ। পরের কথা হলো, যদি পড়তি দামের পণ্য দেশে না-ই এসে থাকে, তাহলে স্বল্প হারে হলেও পণ্যের দাম কমল কেন? লোকসান দিয়ে তো কেউ পণ্য বিক্রি করবে না। তার মানে হলো, বিশ্ববাজারে পড়তি দামের সংবাদ শুনে মাত্রাতিরিক্ত মুনাফার হার কিছুটা কমানো হয়েছে।

বাস্তবতা হলো, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম যতই বাড়ুক বা কমুক, আমরা ন্যায্যমূল্যের অনেক বেশি দাম পরিশোধ করি। বাজার বিশ্লেষকরা মনে করেন, আমাদের আমদানি বাজারে প্রতিযোগিতা কম হওয়ায় আমরা প্রাপ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। এর পাশাপাশি বাজার মনিটরিংয়েও দুর্বলতা প্রকট। এ বিষয়ে একটি উদাহরণ দেওয়া যায়। চট্টগ্রামের পাইকারি বাজারে সরু দানার আস্ত মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮১ টাকায়। আস্ত ডাল ভাঙাতে প্রতি কেজিতে খরচ পড়ে ১২ থেকে ১৩ টাকা। এর মানে হলো, প্রাথমিক পর্যায়ে সরু দানার মসুর ডালের দাম দাঁড়ায় প্রায় ৯৪ টাকায়। এর সঙ্গে যুক্ত হবে মিল মালিকের মুনাফা, পরিবহণ খরচ, পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীর মুনাফা। সেই সরু মসুর ডাল ঢাকায় বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়; বিপণন কোম্পানি মোড়ক লাগিয়ে বিক্রি করছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। এতটা পার্থক্য কি প্রত্যাশিত? সেজন্যই বাজার মনিটরিংয়ের দুর্বলতার কথা উঠে আসে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন