কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

You have reached your daily news limit

Please log in to continue


অ-করোনা রোগীর চিকিৎসা

একজন সিনিয়র সাংবাদিক। ছোট্ট একটি অপারেশনের জন্য সরকারি হাসপাতালে পরিচিত চিকিৎসকের কক্ষে। এমন কোনো রোগীর চাপ নেই। অপারেশনের ডেটও দেয়া যায়। কিন্তু ডাক্তার দিচ্ছেন না। তিনি দিতে পারছেন না। বলে দিলেন দুই সপ্তাহ পর আসেন, এবং এই সময়টায় একদম বাইরে যাবেন না, ঘরে থাকবেন। আসলে তিনি নিশ্চিত হতে চান যে এই রোগী করোনা আক্রান্ত নন। করোনা হয়নি এমন সনদ ছাড়া এখন চিকিৎসা পাওয়া পরম সৌভাগ্য এই দেশে। আমরা অতিরিক্ত সচিব গৌতম আইচের কথা জানি, যার কন্যা একজন চিকিৎসক হয়েও বাবাকে বাঁচাতে কোনো চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারেননি। করোনা ছিল কিনা এই নিশ্চয়তা না পেয়ে কোনো হাসপাতাল তাকে ভর্তি করতে চায়নি। শেষ পর্যন্ত ভর্তি হয়েও আইসিইউয়ের অভাবে মারা গেলেন তিনি। করোনা-ছুটি শুরু হওয়ার কয়েক দিন আগে হলেও তিনি সরকারের একজন উচ্চপর্যায়ের কর্মকতা হিসেবে ভালো চিকিৎসা পেতেন। এখন একজন সরকারের বড় কর্তার এই অবস্থা হলে সাধারণ মানুষ কেমন আছে, সেই প্রশ্ন উঠবে। করোনা-আতঙ্কে চিকিৎসা তো দূরের কথা, হাসপাতালেই ঢুকতে দেয়া হয় না কত রোগীকে, সেই হিসাব কি কেউ রাখে? গৌতম আইচের মেয়ে ডাক্তার সুস্মিতা আইচ তার মর্মান্তিক অভিজ্ঞতার কথা ফেসবুকে লিখেছেন। বলেছেন, করোনাভাইরাস সংকটের এই সময়ে একের পর এর হাসপাতাল ঘুরতে হয়েছে তাকে আর তার পরিবারকে। এই করোনাকালে অ্যাম্বুলেন্স পেতেও যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। আমি বেশ কয়েকজনের কথা জানি, যারা তাদের পরিবারের কোনো কোনো সদস্যের কিডনি, হৃদরগের মতো জটিল রোগ নিয়ে, প্রসূতি মাকে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সের জন্য হাহাকার করেছেন। পুলিশ, হাসপাতাল, ইমার্জেন্সি নম্বরে বারবার ফোন করেও মিলছে না একটি অ্যাম্বুলেন্স। আবার অ্যাম্বুলেন্স পেলেও করোনাভাইরাস নেই- এমন নথি দেখাতে না পারাসহ নানা অজুহাতে রোগীকে কোনো হাসপাতালে ভর্তি করা হয় না। এমনও দৃষ্টান্ত আছে যে, করোনা পরীক্ষার জন্য সরকারি তিনটি হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্য বাতায়নের ৩৩৩ নম্বরে স্বজনরা বারবার ফোন দিলেও সাড়া মেলেনি। শেষ পর্যন্ত কয়েক ঘণ্টা ধরে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ঘুরতে ঘুরতে অ্যাম্বুলেন্সেই মৃত্যু হয়েছে রোগীর। এটি শুধু ঢাকার নয়, গোটা দেশের চিত্র। সারাদেশে এত এত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, বড় বড় ফাইভ স্টার হাসপাতাল, তারা যে রোগী নিচ্ছে না, এর জন্য কারও কাছে তাদের জবাবদিহি নাই। এ মাসের মাঝামাঝি দেখলাম স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যে, দেশের সকল হাসপাতালে করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার পাশাপাশি এ ভাইরার আক্রান্ত নয় এমন রোগীদেরও চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। মন্ত্রণালয় বলছে, হাসপাতাল থেকে কোনো রোগী ফিরিয়ে দেয়া যাবে না। মন্ত্রণালয় এমন নির্দেশনা দিলেও তা মানা হচ্ছে কম। বেসরকারি হাসপাতালগুলোর বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ উঠছে যে, তারা রোগী ভর্তি একেবারেই নিচ্ছে না। সরকারি হাসপাতালগুলোর অনেকগুলোর অবস্থাও তথৈবচ। বেশ কিছু বেসরকারি হাসপাতাল কার্যত রোগী ভর্তিই বন্ধ করে দিয়েছে বলে সূত্র জানাচ্ছে। যদিও সরকারিভাবে হাসপাতালগুলো সে কথা স্বীকার করছে না। আমরা শুরু থেকে বলে আসছি, করোনা চিকিৎসাসেবায় চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের পিপিই, মাস্ক, গ্লাভস, চোখের জন্য গগল্সসহ সুরক্ষা সরঞ্জাম দিতে হবে। একইসাথে তাদের প্রণোদনাও প্রয়োজন। কিন্তু জবাবদিহির জায়গাটাও গুরুত্বপূর্ণ। যে হাসপাতাল রোগী নিল না, তার শাস্তি কী? যে ডাক্তার রোগী দেখল না, তার জবাবদিহি কোথায়? এসবে উত্তর প্রয়োজন। চিকিৎসা না পেয়ে অ-করোনা রোগীর মৃত্যু মর্মান্তিক ঘটনা, হত্যাকাণ্ডের শামিল। বেসরকারি হাসপাতালগুলো বাংলাদেশে শুধু ব্যবসাই করল, আগেও করেছে, এখনও করছে। জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার এমন অমানবিক মুখ অন্য যেকোনো দেশে বিরল যত বেশি পরীক্ষা করা হবে, তত বেশি করোনা রোগী ধরা পড়বে। কার করোনা আছে, কার নেই, সেটা বোঝার সহজ উপায় বেশি বেশি পরীক্ষা। আমরা করোনা পরীক্ষার একটা সন্তোষজনক পর্যায়ে এখনও যেতে পারিনি। ফলে করোনা অ-করোনা রোগী নিয়ে বড় সংশয় সৃষ্টি হচ্ছে। এমনকি সরকার নির্ধারিত করোনা হাসপাতালে গিয়েও রোগীকে রাতদিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে হাসপাতালের বাইরে, ফুটপাতে। এই ঘটনাগুলো বুঝিয়ে দিচ্ছে আমরা করোনা পরিস্থিতি সামলানোর জন্য তৈরিই হইনি এখনও। কোভিড-১৯ আক্রান্ত নন এমন রোগীদের কীভাবে চিকিৎসা বা রোগ নির্ণয় করা যায় সে সম্পর্কে হাসপাতালগুলোর একটি পরিকল্পনা থাকা উচিত। সব হাসপাতালের জন্য একটিই সাধারণ নীতি হওয়া উচিত যে- কোনো হাসপাতাল বা ক্লিনিক কোনো রোগীকে ফিরিয়ে দিতে পারবে না। চরমভাবে চাপে না পড়া পর্যন্ত তারা সব রোগীকে চিকিৎসা দিতে হবে। করোনায় আক্রান্তদের বাঁচানোর জন্য অন্য রোগীদের নিশ্চয়ই মেরে ফেলা যায় না।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন