কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। ছবি : প্রিয়.কম

নেত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি: ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন

আমিনুল ইসলাম মল্লিক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৬ জানুয়ারি ২০১৮, ১২:১৮
আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৮, ১২:১৮

(প্রিয়.কম)  ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক এবং সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য। তিনি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন। বঙ্গবন্ধু জীবিত থাকা অবস্থায় বরিশাল এলাকা থেকে সংসদ সদস্য (এমপি) হিসেবে নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশের আওয়ামীপন্থী আইনজীবীদের।

ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্পেশাল গাইড লাইন (বিশেষ দিকনির্দেশনা) নিয়ে আইনজীবীদের মাঝে কাজ করছেন। জানা যায়, সারাদেশের আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বার কাউন্সিল, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিসহ দেশের সব জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃত্বে থাকতে চায় আওয়ামী লীগ। কিন্তু গত কয়েক বছর যাবৎ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি, ঢাকা আইনজীবী সমিতি, ট্রাক্সেস বারসহ অনেক প্রতিষ্ঠানেই পরাজিত হচ্ছেন আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরা। সমন্বয়ের অভাব, নানা বিষয়ে বিরোধ, দলাদলি ও মতপার্থক্যই এর পেছনে মূল কারণ বলে মনে করেন বোদ্ধারা। এসব মতপার্থক্য ও বিরোধ নিষ্পত্তি করতে উদ্যোগ নেন দলের হাইকমান্ড। আইনজীবী নেতাদের ডাকেন তিনি। তারপরের অবস্থা কী, তা জানতেই ১৩ জানুয়ারি শনিবার প্রিয়.কমের সাথে কথা হয় ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনের।

প্রিয়.কম : প্রথমেই বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সম্পর্কে যদি কিছু বলতেন।

ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন : আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের প্রথমে দুটি সংগঠন ছিল। একটি বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ, আরেকটি আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ। আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ একসময় মূল দল আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছিল। দুটি সংগঠন থাকায় আমাদের সংগঠনের নেতাদের মধ্যে মতবিরোধ ছিল। ফলে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। তখন আমাদের নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগের দুটি সংগঠন বিলুপ্ত করে নতুন সংগঠন তৈরি করেছেন। নাম দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ। 

প্রিয়.কম : নতুন সংগঠন তৈরির পর আপনাদের মাঝে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল তা কী দূর হয়েছে?

ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন : আপাতদৃষ্টিতে নতুন সংগঠন তৈরি হওয়ার পর আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য ও বৈষম্য দূর হয়েছে। এই সংগঠন তৈরির পর আমার মনে হয় সিনিয়রদের মধ্যে অনেকটাই আন্তরিকতার পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে। কর্মী পর্যায়ে যারা আছেন, যারা বঙ্গবন্ধুর মতাদর্শে বিশ্বাস করেন, তারা এ সংগঠন তৈরির পর উজ্জীবিত হয়েছেন। আমি সিনিয়রদের পজিটিভ ভূমিকা দেখছি।

প্রিয়.কম : আপনি দায়িত্ব নেয়ার পর কতটুকু গোছাতে পেরেছেন?

ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন : আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর চেষ্টা করছি সংগঠনকে গুছিয়ে নিতে। ঢেলে সাজাতে। আরও সময় লাগবে। আইনজীবীদের সময় বের করা কঠিন। কারণ কোর্টে বেশি সময় দিতে হয়। সংগঠন সম্প্রসারণ করতে আমরা ইতোমধ্যে চট্রগ্রাম, সিলেট এবং বরিশালে সফর করেছি। কর্মী সংগ্রহ অভিযান শুরু করেছি। আমরা পরবর্তীতে বাকি বিভাগীয় জেলা শহর যেমন খুলনা, রাজশাহী ও রংপুরসহ সব জায়গায় যাব। সেখানে যাওয়ার পর আমরা কর্মী সংগ্রহ করব। তারপর ঢাকায় ফিরে সারা দেশের আইনজীবীদের নিয়ে সম্মেলন করব। 

প্রিয়.কম : কাজ করে আইনজীবীদের সাড়া পাচ্ছেন কেমন?

ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন : ভালো সাড়া পাচ্ছি। আমি বরিশাল গিয়ে দেখি অনেক আইনজীবী আমাদের সংগঠনের সদস্য হওয়ার জন্য বসে আছেন। আমরা তাদের কাছে গিয়ে দেখলাম, তারা আমাদের সাথে কাজ করতে অনেক আগ্রহী। তাদের এ রকম উপস্থিতি আমাদের কাজের প্রেরণা দিয়েছে। মনে হচ্ছে আইনজীবীদের এ রকম সাড়া আগামী দিনে বারের নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলবে।

প্রিয়.কম : সংগঠন গোছাতে নেত্রীর বিশেষ কোনো গাইডলাইন বা পরামর্শ কী?

ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন : গাইড লাইন তো আছেই। নেত্রীর কথা হলো, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়া, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে যারা লালন করে, তাদের একত্রিত করা। নেত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সামনের দিনে এগিয়ে যাব। সে লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছি। আমি আশাবাদী যে আমাদের সংগঠন শক্তিশালী হবে। 

প্রিয়.কমের প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলছেন অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। ছবি : প্রিয়.কম

প্রিয়.কম : তরুণ ও মহিলা আইনজীবীরা আপনার ডাকে সাড়া দিচ্ছে কেমন?

ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন : নতুন সংগঠন গঠনের পর মহিলা আইনজীবীদের সাড়া পাচ্ছি বেশ। আগে সংগঠন বিভক্ত থাকায় মহিলা আইনজীবীদের সংখ্যা অনেক কম ছিল। নতুন সংগঠনে কাজ শুরু করায় অনেক মহিলা ও তরুণ আইনজীবী কাজ করছেন। এতদিন মফস্বল আইনজীবী সমিতিতে মহিলা আইনজীবীদের অংশগ্রহণ কম ছিল। কিন্তু ইদানীং আমাদের এ সংগঠনে অনেক মহিলা আইনজীবী আসছেন। বিশেষ করে ঢাকা আইনজীবী সমিতির মহিলা আইনজীবীরা সংগঠনের জন্য অনেক কাজ করছেন। ঢাকা বারের ইলেকশন সামনে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মহিলা আইনজীবীরা যেভাবে নির্বাচন করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন, তাতে আমি অনেক আশাবাদী। আমি আশা করছি এমন এক সময় আসবে যখন মহিলা আইনজীবীরাই বারের নেতৃত্ব দেবেন। তারা দলের বিভিন্ন পদে থেকে দায়িত্ব পালন করবেন।

প্রিয়.কম : সংগঠনে তরুণ আইনজীবীদের নেতৃত্ব কম হওয়ার কী কারণ বলে মনে করেন?

ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন : তরুণদের আমরা কাজ শেখাচ্ছি। তারা তাদের সিনিয়রদের বাদ দিয়ে তো এ কমিটিতে আসতে পারবেন না। কারণ সিনিয়রদের সম্মান করেই আগাতে হবে। যেহেতু সিনিয়রদের অভিজ্ঞতা বেশি।

প্রিয়.কম : আইনজীবীদের উদ্দেশে কিছু বলতে চান?

ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন : আইনজীবীদের উদ্দেশে আমার বক্তব্য হলো, আমাদের সৎ থাকতে হবে। সবাই মিলে আমরা যদি একসাথে কাজ করতে পারি, তাহলে সংগঠন অনেক এগিয়ে যাবে। এ সংগঠনকে কেউ দমাতে পারবে না।

প্রিয়.কম : প্রিয়.কমকে সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন : আপনাকেও ধন্যবাদ।

প্রিয় সংবাদ/আজাদ চৌধুরী