ছবি: প্রিয়.কম
দ্য নিউজ মিডিয়া: হোয়াট এভরিওয়ান নিডস টু নো || এখন সংবাদমূল্য নির্ধারণ করে কে?
আপডেট: ২০ মে ২০১৭, ২১:১১
নিউ ইয়র্কের সিটি ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক সি. ডব্লিউ. অ্যান্ডারসন, অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির জার্নালিজম বিভাগের অধ্যাপক লিওনার্ড ডাউনি জুনিয়র এবং কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির জার্নালিজমের অধ্যাপক মাইকেল শাডসন দ্য নিউজ মিডিয়া: হোয়াট এভরিওয়ান নিডস টু নো নামের একটি বই লিখেছেন। ২০১৬ সালে বইটি প্রকাশ করে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। বইটিতে লেখকরা সাংবাদিকতার অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করেছেন, বিশ্লেষণ করেছেন। সেই বই অনুসারে ধারাবাহিকভাবে অনুলিখন করছেন মিজানুর রহমান।
আজকের বিষয়: এখন সংবাদমূল্য নির্ধারণ করে কে?
(প্রিয়.কম) যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ এন্ড্র চ্যাডউইকের মতে, ডিজিটাল প্রযুক্তি এক ধরনের ‘হাইব্রিড’ সংবাদমাধ্যম তৈরিতে দারুণ সাহায্য করছে। (দ্য হাইব্রিড মিডিয়া সিস্টেম: পলিটিক্স এন্ড পাওয়ার। এন্ড্র চ্যাডউইক, ২০১৩)। কোনটি সংবাদযোগ্য আর কোনটি নয়, এটি নির্ধারণ করা কখনও সহজ কাজ ছিল না এবং বর্তমানে কোন সংবাদটি পত্রিকা বা টিভিতে প্রচারিত হবে, সেটি নির্ধারণের প্রক্রিয়ায় এখনকার মতো এত ধরনের মানুষও আগে যুক্ত ছিলেন না।
এখন যা পরিবর্তন হয়েছে তা হলো- সংবাদ এজেন্ডা ঠিক করার প্রক্রিয়াটা আগের চেয়ে আরও জটিল হয়ে গেছে এবং পুরো পক্রিয়ায় আরও বেশি মানুষের সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছে ডিজিটাল প্রযুক্তি। মানুষ কোন সংবাদটি জানতে পারবে আর কোনটি জানতে পারবে না, অল্প কিছুদিন আগেও এগুলো নির্ধারণ করতেন পত্রিকার সম্পাদক এবং ব্রডকাস্ট নিউজ প্রডিউসাররা।
কিন্তু এখন ডিজিটাল মাধ্যমের পাঠক কী ভাবছে এবং সংবাদের ট্রেন্ড কোন দিকে যাচ্ছে, সম্পাদকদের এসব গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হচ্ছে। অর্থাৎ সোজা কথায়, অাগে সম্পাদকরা নিউজ ঠিক করে দিত, আর এখন কোনটি সংবাদযোগ্য সেটি পাঠক নিজেরাই ঠিক করছেন।
ডিজিটাল সংবাদমাধ্যম, সার্চ ইঞ্জিন এবং সামাজিক মাধ্যমে কোন নিউজটি সর্বপ্রথমে দেখাবে সেটি নিয়ে কাজ করা প্রোগ্রামার, কোন নিউজ পাঠকরা কেমন পড়ল তা বিশ্লেষণের জন্য সংবাদমাধ্যমের ডিজিটাল ডাটা অ্যানালিস্ট, এরা সবাই এখন নিউজের এজেন্ডা ঠিক করার প্রক্রিয়ায় যুক্ত। এরা সবাই মিলে ঠিক করে পাঠক ওয়েবসাইটে এসে প্রথমেই কোন নিউজটি দেখবে অথবা কোন নিউজটি পপ-আপের মাধ্যমে গ্রাহকের ডিভাইসে যাবে। (ফেসবুক মেসেঞ্জার পপ আপ বা ব্রেকিং নিউজ এলার্টের মতো)। এসব নিউজ সম্পর্কে টুইটার, ফেসবুকে বা অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে পাঠক নিজের মতো করে মন্তব্য করতে পারবে।
একজন পাঠক কি ধরনের নিউজ বেশি পড়ছেন বা দেখছেন, ওয়েবসাইট এবং সামাজিক মাধ্যম সেই পাঠককে সেই ধরনের নিউজই আগে দেখাবে। কিন্তু বিজ্ঞাপনদাতারা সেই পাঠককে তাদের বিজ্ঞাপন দেখাতে চাইলে ওই ধরনের কন্টেন্টের ওপরই তাদের বিজ্ঞাপন দেবে। ছাপা পত্রিকা বা টিভিতে প্রচারিত যেকোনো বিজ্ঞাপনই সবার জন্য, কিন্তু ডিজিটাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন সম্পূর্ণ ভিন্ন। আপনি একটি ওয়েবসাইটে যে ধরনের বিজ্ঞাপন দেখতে পাবেন, একই ওয়েবসাইটে অন্য পাঠক সেই বিজ্ঞাপন দেখতে পাবে না। ওয়েবসাইটগুলো প্রত্যেকটি পাঠকের রুচি, পছন্দ বা আগ্রহের ওপর ভিত্তি করে বিজ্ঞাপন দেয়। তাই বেশিরভাগ বিজ্ঞাপনের সঙ্গেই পাঠক নিজেদের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পেতে পারেন।
প্রচলিত সংবাদমাধ্যমের মধ্যে যেগুলো এখনও সারাবিশ্বে প্রভাব বিস্তার করে আছে, সেগুলোর সম্পাদকরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঠিক করে দেন পাঠক কোন নিউজটি জানবে, কোনটি জানবে না। সামাজিক মাধ্যমে যত ধরনের সংবাদ ঘোরাফেরা করে, তার বেশিরভাগই এখনও এ ধরনের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যমের খবর।
তবে একবার কোনো নিউজ সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার হয়ে গেলে সেটির ওপর আর ওই সংবাদমাধ্যমের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। তখন ওই সংবাদটির অবস্থা হয় মাঠভর্তি খেলোয়াড়ের মধ্যে একটি মাত্র বলের মতো, যেটাতে কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।