সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শকদের একাংশ ও বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) লোগো। ছবি: প্রিয়.কম
বিপিএলের সিলেট পর্ব শেষে এগিয়ে যারা
আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৭, ২১:৪৮
(প্রিয়.কম) প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) গিয়েছিল সিলেটে। সবমিলিয়ে আটটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। এর মধ্যে চার ম্যাচেই মাঠে নেমেছে স্বাগতিক সিলেট সিক্সার্স। চার ম্যাচের তিনটিতে জয় নিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে রয়েছে প্রথমবারের মতো বিপিএলে অংশ নেওয়া সিলেট সিক্সার্স।
বিপিএলের সিলেট পর্বে একমাত্র রাজশাহী কিংস বাদে সবগুলো দলই জয়ের দেখা পেয়েছে। রংপুর রাইডার্স এবং সিলেট সিক্সার্সের মুখোমুখি হলেও এর কোনোটিতে জয়ের দেখা পায়নি গেল আসরের রানার্স আপ দলটি। দুই পরাজয়ে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে রয়েছে ড্যারেন স্যামি ও মুশফিকুর রহিমের রাজশাহী। টুর্নামেন্টের বাকি পাঁচ দল- ঢাকা ডায়নামাইটস, রংপুর রাইডার্স, খুলনা টাইটান্স, চিটাগং ভাইকিংস ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স একটি করে জয় পাওয়ার পাশাপাশি একটি করে ম্যাচে হারের স্বাদ পেয়েছে।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক বিপিএলের সিলেট পর্ব শেষে কারা এগিয়ে রয়েছে-
সবচেয়ে বেশি রান: সিলেট পর্বে ব্যাটসম্যানদের তালিকায় একচ্ছত্র আধিপত্য দেখিয়েছেন বিদেশি ক্রিকেটাররা। শীর্ষ ১০ রান সংগ্রাহকের মধ্যে মাত্র একজন বাংলাদেশি। সেরা রান সংগ্রাহকের তালিকায় প্রথম দুটি নামই সিলেট সিক্সার্সের। চার ম্যাচের মধ্যে তিনটি হাফ সেঞ্চুরিতে ১৯৬ রান করে শীর্ষস্থানে রয়েছেন শ্রীলঙ্কার উপুল থারাঙ্গা। ১৫১ রান করে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন থারাঙ্গার সতীর্থ আন্দ্রে ফ্লেচার। দুই ম্যাচে ১১৮ নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন চিটাগং ভাইকিংসের লুক রনচি।
সিলেট পর্বের শীর্ষ দুই রান সংগ্রাহক উপুল থারাঙ্গা (ডানে) ও আন্দ্রে ফ্লেচার। ছবি: প্রিয়.কম
চারে ও পাঁচে রয়েছেন যথাক্রমে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মারলন স্যামুয়েলস (৯৫) ও ঢাকা ডায়নামাইটসের এভিন লুইস (৯২)। সেরা পাঁচে নেই কোনও বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান। ৬৯ রান করে অষ্টম অবস্থানে রয়েছেন রংপুর রাইডার্সের উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুন। এবারের আসরে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহের মালিক নিউজিল্যান্ডের লুক রনচি। সর্বশেষ ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ৩৫ বলে সাত চার ও চার ছয়ে ৭৮ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন চিটাগংয়ের এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান।
রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে মাত্র ১৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন লুক রনচি। ছবি: প্রিয়.কম
সবচেয়ে বেশি ছয়: বিপিএলের এবারের আসরে এখন পর্যন্ত দুই ম্যাচে ১১৮ রান করেছেন চিটাগং ভাইকিংসের লুক রনচি। ১১৮ রানের মধ্যে ১০৪ রানই এসেছে বাউন্ডারি থেকে। সিলেট পর্বে সর্বোচ্চ ১০টি ছয়ের মালিক চিটাগংয়ের এই ব্যাটসম্যান। এর মধ্যে রংপুরের বিপক্ষে এক ম্যাচে মারেন সাতটি ছয়। আটটি ছয় নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন সিলেটের আন্দ্রে ফ্লেচার। ক্যামেরন ডেলপোর্ট হাঁকিয়েছেন ছয়টি ছয়। বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে চারটি ছয় মেরে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছেন মোহাম্মদ মিথুন। তার সঙ্গে আরও আছেন দানুশকা গুনাথিলাকা, এভিন লুইস, মারলন স্যামুয়েলস, লুক রাইট ও রস হোয়াইটলি।
সিলেট পর্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক তাইজুল ইসলাম। ছবি: প্রিয়.কম
সবচেয়ে বেশি উইকেট: ব্যাটসম্যানদের তালিকায় পিছিয়ে থাকলেও বল হাতে বেশ দাপটই দেখিয়েছেন বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা। এখন পর্যন্ত ছয় উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহকের তালিকায় শীর্ষস্থানে রয়েছেন ইংল্যান্ডের লিয়াম প্লাঙ্কেট। পাঁচটি উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন তাইজুল ইসলাম। সমান পাঁচ উইকেট নিয়েছেন বাংলাদেশি পেসার আবুল হাসান রাজুও। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডোয়াইন ব্রাভো নিয়েছেন চার উইকেট। তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, আবু হায়দার রনি, তাসকিন আহমেদ, নাসির হোসেন, শুভাশিষ রায়, শফিউল ইসলাম, কেসরিক উইলিয়ামস ও জসুয়া আর্চার।
খুলনা টাইটান্সের বিপক্ষে উইকেট নেওয়ার পর আবু হায়দার রনির উদযাপন। ছবি: প্রিয়.কম
সেরা বোলিং ফিগার: বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা যে বল হাতে দারুণ বোলিং করেছেন তার প্রমাণ সেরা বোলিং ফিগারে। সেরা পাঁচ বোলিং ফিগারের চারটি নামই বাংলাদেশি বোলারদের। সবচেয়ে সেরা বোলিং ফিগারটি ঢাকা ডায়নামাইটসের আবু হায়দার রনির। খুলনা টাইটান্সের বিপক্ষে মাত্র ১৩ রানে তিন উইকেট তুলে নেন তিনি। খুলনার বিপক্ষেই ১৯ রানে তিন উইকেট নেন সিলেটের তাইজুল ইসলাম। রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে ২২ রানে তিন উইকেট সিলেটের পেসার আবুল হাসান। এ ছাড়া চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে ২৪ রানে তিন উইকেট নেন কুমিল্লার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
আন্দ্রে ফ্লেচার ও উপুল থারাঙ্গা জুটি। ছবি: প্রিয়.কম
সেরা জুটি: এবারের বিপিএলে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সফল জুটি সিলেট সিক্সার্সের। প্রায় সব ম্যাচে দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দিয়েছেন দুই ওপেনার উপুল থারাঙ্গা ও আন্দ্রে ফ্লেচার। সিলেটে অনুষ্ঠিত আট ম্যাচের তিনটিতে শতোর্ধ্ব রানের জুটি হয়েছে, যার দুটির মালিক থারাঙ্গা-ফ্লেচার। উদ্বোধনী ম্যাচে ঢাকা ডায়নামাইটসের দেওয়া ১৩৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতেই ১২৫ রান যোগ করেন এই দুই ওপেনার। তৃতীয় ম্যাচে রাজশাহী কিংসের বিপক্ষেও ১০১ রানের জুটি গড়েন এ দু'জন। এ ছাড়া খুলনা টাইটান্সের বিপক্ষে ১১৬ রানের জুটি গড়েন ঢাকার ঢাকার ক্যামেরন ডেলপোর্ট ও এভিন লুইস।
ঢাকা ডায়নামাইটসকে ১৩৬ রানে আটকে ফেলার পর মাঠ ছাড়ছেন সিলেট সিক্সার্সের ক্রিকেটাররা। ছবি: সংগৃহীত
সবচেয়ে বড় জয়: উদ্বোধনী ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ঢাকা ডায়নামাইটসের দেওয়া ১৩৭ রানের জবাবে মাত্র এক উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় সিলেট সিক্সার্স। উইকেটের হিসেবে এটাই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়। ওই ম্যাচে ১৯ বল হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করেছিল নাসির হোসেনে দল। বলের হিসেবেও সবচেয়ে জয়ের রেকর্ডটা সিলেটের দখলে। রানের হিসাবে সবচেয়ে বড় জয়টা ঢাকা ডায়নামাইটসের। ঢাকার দেওয়া ২০৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ১৩৭ রানে গুটিয়ে যায় খুলনা টাইটান্স। ফলে ৬৫ রানের জয় পায় সাকিব আল হাসানের দল।