কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

নামাজের বিধান সবার উপরই ফরজ। এই ক্ষেত্রে নারী পুরুষ সবাই সমান। ছবি: সংগৃহীত

নারীরা মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করতে পারবে কিনা?

মিরাজ রহমান
সাংবাদিক ও লেখক
প্রকাশিত: ১২ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৮:৫৪
আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৮:৫৪

(প্রিয়.কম) নামাজের বিধান সবার উপরই ফরজ। এই ক্ষেত্রে নারী পুরুষ সবাই সমান। সেই সাথে পুরুষের জন্য রয়েছে মসজিদে নামাজ পড়ার বিধান। এই বিধান কি শুধুই পরুষের জন্য নাকি নারীর জন্যও? কুরআন ও হাদিসে কী এসেছে? একজন নারী কি শুধু ঘরে নামাজ পড়বে না কি মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়বে। সালাত আদায় করার জন্য মুসলিম নারীর মসজিদে যাওয়া জায়েজ। কোনো নারী তার স্বামীর কাছে এ ব্যাপারে অনুমতি চাইলে স্বামী তাকে নিষেধ করতে পারবে না। যদি তিনি পর্দা করে বের হন এবং তার শরীরের এমন কিছু উন্মুক্ত না থাকে যা গায়রে-মোহরেম কেউ দেখা হারাম। এর দলীল হচ্ছে- ইবনে উমর (রা.) বলেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.) বলতে শুনেছি, আপনাদের নারীরা যদি আপনাদের কাছে মসজিদে যাওয়ার অনুমতি চায়, তাহলে তাদেরকে অনুমতি দিন’। (সহীহ মুসলিম)

আরও একটি হাদিসে এসেছে, হজরত ইবনে ওমার (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.) থেকে বর্ণনা করেন যে, যদি নারীরা তোমাদের নিকট মসজিদে গমনের অনুমতি চায়, তাহলে তোমরা তাদেরকে অনুমতি দিয়ে দাও। (বুখারি ও মুসলিম)

সুতরাং বিশ্বনবির (সা.) হাদিস অনুযায়ী নামাজের জন্য নারীদের মসজিদে উপস্থিত হতে কোনো সমস্যা নেই। নারীর জন্য মসজিদে নামাজে হাজির হওয়া তখনই বৈধ, যখন মসজিদে পুরুষদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা ও পরিপূর্ণ পর্দার ব্যবস্থা থাকে। সেক্ষেত্রে পুরুষদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা করে নামাজের জামাআত করা জায়েজ।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, হে নবী, আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে, কন্যাদেরকে ও মুমিন নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের ‘জিলবাব’ (সর্বাঙ্গ আচ্ছাদনকারী চাদর) এর কিছু অংশ নিজেদের (মুখের) উপর ঝুলিয়ে দেয়, তাদেরকে (দাসী নয়, স্বাধীন হিসেবে) চেনার ব্যাপারে এটাই সবচেয়ে কাছাকাছি পন্থা। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আর আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (আহযাব ৩৩:৫৯)

শাইখ মুহাম্মাদ ইবনে উছাইমীন (রা.) মাজমূ আল-ফাতাওয়া (১৪/২১১) এ বলেছেন, যদি ফিতনার আশংকা না থাকে তবে তারাবীর সালাতে নারীদের উপস্থিত হওয়াতে কোনো সমস্যা নেই। তবে শর্ত হলো- তারা শালীনভাবে সৌন্দর্য প্রকাশ না করে বের হবে এবং সুগন্ধি ব্যবহার করবে না।

ইসলাম নারীদের মসজিদে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে কিন্তু তাদেরকে বিভিন্ন কারণে মসজিদে যেতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। একটি হাদিসে এসেছে, একদিন হজরত উম্মে হুমাইদ (রা.) রাসুল (সা.)-এর দরবারে এসে বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি আপনার সঙ্গে নামাজ পড়তে ভালোবাসি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, আমি জানি তুমি আমার সঙ্গে নামাজ পড়তে ভালোবাসো, কিন্তু তোমার ঘরে নামাজ তোমার বাইরের হুজরায় নামাজ অপেক্ষা উত্তম। আর তোমার হুজরায় নামাজ তোমার বাড়িতে নামাজ অপেক্ষা উত্তম। আর তোমার বাড়িতে নামাজ তোমার মহল্লার মসজিদে নামাজ অপেক্ষা উত্তম। আর তোমার মহল্লার মসজিদে নামাজ আমার মসজিদে নামাজ অপেক্ষা উত্তম। এরপর ওই নারী নিজ ঘরের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে নামাজের স্থান নির্ধারণ করিয়ে নিলেন এবং আমরণ তাতেই নামাজ আদায় করলেন। (মুসনাদে আহমাদ, সহিহ ইবনে খুযাইমা ও সহীহ ইবনে হিব্বান)

অন্য আরো একটি হাদিসে এসেছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-এর সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, নারীদের জন্য নির্ধারিত হুজরার নামাজ অপেক্ষা তার ঘরে নামাজ পড়া উত্তম, আর ঘরে নামাজ অপেক্ষা নিভৃত ও একান্ত কোঠায় নামাজ পড়া উত্তম। (সুনানে আবু দাউদ)

সূত্র: মুসলিমস্টোরিজ.টপ

প্রিয় ইসলাম/আশরাফ