ছবি: সংগৃহীত
আজ আমরা অসহায়: মানববন্ধনে একসেঞ্চার কর্মীরা
আপডেট: ০৫ আগস্ট ২০১৭, ১৬:৩৯
(প্রিয়.কম) বাংলাদেশে সদ্য বন্ধ ঘোষণা দেওয়া একসেঞ্চার কমিনিকেশনস অ্যান্ড ইনফ্রাষ্ট্রাকচার সল্যুশন লিমিটেডের কর্মীরা আজ ৫ আগস্ট শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে সেরা ইঞ্জিনিয়াররা মানববন্ধনে নিজেদের অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন।
মানববন্ধনে একসেঞ্চার এমপ্লয়ীজ ইউনিয়ন বাংলাদেশের সভাপতি ইব্রাহীম হোসেন বলেন, ‘বহুজাতিক কোম্পানী একসেঞ্চার ও টেলিনর তাদের অংশীদারীত্বের ব্যবসায় পরস্পরের প্রতি দোষারোপ, অস্বচ্ছতা ও ব্যবসায়িক দুরভিসন্ধির কারণে অত্যন্ত মেধাবী কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্তৃক পরিচালিত, সুনাম কুড়ানো, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেক আশা ও স্বপ্ন পূরনের প্রতিষ্ঠান একসেঞ্চার বাংলাদেশ আজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, যার সর্বশেষ কর্ম তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০১৭। গত ১৬ জুলাই ২০১৭ রাতের অন্ধকারে দেশ ছেড়ে চলে গেছেন সিদ্ধান্ত গ্রহনকারী সকল বিদেশী কর্মকর্তাগণ। ১৭ জুলাই গভীর রাত ২ টায় কোন কারণ দর্শন না করে, পূর্বাপর কোন নোটিশ না দিয়েই একসাথে কোম্পানীর সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছাঁটাই করে দেয়া হয়েছে।’
মানববন্ধনে কর্মীদের আর্তনাদ। ছবি: সংগৃহীত।
তিনি বলেন, ‘দেশের ক্রমবিকাশমান আইসিটি সেক্টরে যুগান্তকারী পরিবর্তনের কথা বলে, এই-সকল মেধাবী কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে স্বপ্ন দেখিয়ে, জোরপূর্বক, কোন প্রকার ক্ষতি পূরণ না দিয়ে গ্রামীনফোন থেকে সরিয়ে নিয়ে ২০১০ সালে গ্রামীণফোন আইটি কোম্পানী গঠন করে গ্রামীণফোন এবং টেলিনর। সময়ের পরিক্রমায় ২০১৪ সালে, বর্তমান সরকারের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার সকল সুযোগ সুবিধাদিকে কাজে লাগিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ও হাজারো তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বহুজাতিক কোম্পানী অ্যাকসেঞ্চার, গ্রামীণফোন আইটি কোম্পানীর ৫১ শতাংশ শেয়ার ক্রয় করে এবং কোম্পানীর নাম পরিবর্তন করে অ্যাকসেঞ্চার কমিনিকেশনস অ্যান্ড ইনফ্রাষ্ট্রাকচার সল্যুশন লিমিটেড নামে বাংলাদেশের ব্যবসা পরিচালণার দায়িত্ব গ্রহণ করে। দুই দফা ব্যবসা ও মালিকানা পরিবর্তনে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তাদের ন্যায্য সুবিধাদি থেকে বঞ্চিত করা হয় এবং চতুরতার সাথে সরকারের কর ফাঁকি দেয়া হয়।’
একসেঞ্চার এমপ্লয়ীজ ইউনিয়নের সভাপতি আরও বলেন, ‘কোম্পানী শুরু করার সাথে সাথেই ম্যানেজম্যান্ট বলতে শুরু করে আমাদের বেতন ভাতাদী কমাতে হবে। নতুন কাজ পাবার জন্য, সপ্তাহে ৪০ শ্রম ঘন্টার পরিবর্তে অ্যাকসেঞ্চার কর্মীরা ৪৪ ঘন্টা করে কাজ করা শুরু করে। বাজারে দব্যমূল্যের ঊর্দ্ধগতি থাকলেও বাৎসরিক মুজুরী বৃদ্ধি ছিল গড়ে ৮-৯% মাত্র। বহুজাতিক কোম্পানী অ্যাকসেঞ্চার ও টেলিনর পরস্পরের সাথে মিলিয়ন ডলারের সেবা প্রদানের চুক্তিতে আবদ্ধ ছিল এবং চুক্তির আওতার শতভাগ সেবাই আমাদের প্রতিষ্ঠানের মেধাবী তরুণ-তরুণীরা দক্ষতার সাথে নিশ্চিত করে আসছে। সেবা প্রাপ্তির ব্যাপারে টেলিনর ও সবসময় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে। কিন্তু আশ্চর্য্যরে বিষয় অদৃশ্য কারণে আমাদের কোম্পানী খাতা-কলমে নিজেদের অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। এর ফলে কর্মকর্তা কর্মচারীরা বঞ্চিত হয়েছে ৫% প্রফিট শেয়ার থেকে। আমাদের আশংকা একই কৌশলে, উভয় বহুজাতিক কোম্পানী আমাদের দেশকেও বৈদেশিক মুর্দ্রা অর্জন ও কর সংক্রান্ত আয় থেকে বঞ্চিত করছে।’
মানববন্ধনে কর্মীদের একাংশ। ছবি: সংগৃহীত।
সবশেষে ইব্রাহীম হোসেন বলেন, ‘ম্যানেজম্যান্টের হঠকারী সিদ্ধান্তে চাকরি হারিয়ে দোদুল্যমান আমাদের ভবিষ্যত, স্ত্রী-সন্তান ও বয়োবৃদ্ধ পিতা-মাতা নিয়ে আমরা আজ অসহায়। এহেন পরিস্থিতিতে শত শত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বার্থ রক্ষা, ভবিষ্যত সুরক্ষা এবং সর্বোপরি আইসিটি খাতে বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশের ভাবমূতি অক্ষুন্ন রাখতে সময়োপযোগী সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে আপনার ও সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
প্রিয় টেক/মিজান