কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

অগ্ন্যাশয়ের ক্ষতি থেকে হয় এই টাইপ 3c ডায়াবেটিস। ছবি: দেয়া

নতুন ধরণের এই ডায়াবেটিসের কথা আপনি জানেন কী?

কে এন দেয়া
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ২৬ অক্টোবর ২০১৭, ১৬:৩৩
আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৭, ১৬:৩৩

(প্রিয়.কম) আমরা সারাজীবনই জেনে এসেছি ডায়াবেটিসের দুইটি ধরণ আছে। কিন্তু সম্প্রতি জানা গেছে যে, আরো এক ধরণের ডায়াবেটিস হতে পারে। এই তৃতীয় ধরণের ডায়াবেটিস আসলে অনেক মানুষেরই থাকতে পারে তাদের অজান্তে। 

নতুন গবেষণা থেকে দেখা গেছে, এই টাইপ 3c ধরণের রোগীদেরকে ভুল করা জানানো হচ্ছে তাদের টাইপ 2 ডায়াবেটিস আছে, এতে তাদের ভুল চিকিৎসা হচ্ছে। ডায়াবেটিস কেয়ার জার্নালে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, টাইপ 3c আছে এমন মানুষদের মাত্র ৩ শতাংশের রোগ সঠিকভাবে শনাক্ত হয়। 

আলাদা একটি গবেষণা  থেকে জানা যায়, পাশ্চাত্যের সব ডায়াবেটিসের ৫-১০ শতাংশ সম্ভবত টাইপ 3c ডায়াবেটিসে ভুগছে। এর অর্থ হলো, পৃথিবীর কয়েক মিলিয়ন মানুষ এই রোগে আক্রান্ত অথচ তারা এ ব্যাপারে কিছুই জানে না। 

এই গবেষণার সাথে জড়িত, ইউনিভার্সিটি অফ সারে এর অ্যান্ড্রু ম্যাকগভার্ন ব্যাখ্যা করেন, এই নতুন ধরণের ডায়াবেটিসের চিকিৎসা বেশ কঠিন হতে পারে। এই ডায়াবেটিসের ফলে অগ্ন্যাশয় ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না শুধু তাই নয়, এর পাশাপাশি আরো কিছু জরুরী এনজাইম তৈরির প্রক্রিয়া ব্যহত হয় যেগুলো কিনা খাবার হজমে দরকারি, এবং কিছু হরমোনের উৎপাদনও বন্ধ হয়ে যায়। 

তিনি জানান, “যাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিস আছে, তাদের তুলনায় যাদের টাইপ 3c আছে এদের ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করা বেশি কঠিন হয়ে যায়। তাদের ইনসুলিন দরকারও হয় বেশী।“

এই ধরণের ডায়াবেটিসের ব্যাপারে মানুষের অজ্ঞতা নিয়ে কথা বলা হয় এই গবেষণায়। অনেক বছর ধরে শুধুমাত্র টাইপ ১ এবং ২ ডায়াবেটিস নিয়েই মানুষ জানতেন। অন্যান্য টাইপগুলো একেবারেই তাচ্ছিল্য করা হত। 

টাইপ ১ ডায়াবেটিসও অনেক দুর্লভ, তারপরেও এর বেশ পরিচিতি আছে। যখন মানুষের ইমিউন সিস্টেম তার ইনসুলিন সৃষ্টিকারী কোষগুলোকে ধ্বংস করে ফেলে তখন এটা হয়। ইনসুলিনের অভাবে সেই মানুষটির ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকে না। এটি একটি অটোইমিউন কন্ডিশন এবং অনেকেই ধারণা করেন এটা বংশগত, তবে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায় না। 

টাইপ ২ ডায়াবেটিস আবার অনেক বেশী দেখা যায়। যখন শরীর যথেষ্ট ইনসুলিন উৎপাদন করে না তখন এটি হয়, অথবা শরীরের কোষগুলোর ওপর ইনসুলিন যথেষ্ট কাজ করতে পারেন না (ইনসুলিন রেজিস্টেন্স)। এক্ষেত্রেও ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তবে এক্ষেত্রে বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে, যেমন ওজন, বয়স এবং বংশগতি। 

গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের কথাও জানেন অনেকেই। এটা শুধুই গর্ভাবস্থায় দেখা যায় এবং তা ক্ষণস্থায়ী। সাধারণত ইনসুলিন রেজিস্টেন্সের একটা ধরণ হিসেবেই একে দেখা হয়। 

এই সবের চাইতে টাইপ 3c আলাদা। সাধারণত অগ্ন্যাশয়ে কোনো ধরণের ক্ষতি থেকে এটা হয়। এই ক্ষতির কারণ হতে পারেন ইনফ্ল্যামেশন, ক্যান্সার ধরণের কোষের উপস্থিতি, অথবা অস্ত্রোপচার। অগ্ন্যাশয়ে ক্ষতি হবার পর এই ধরণের ডায়াবেটিস হতে পারে অনেক বছর পরে। এ কারণে এই রোগ শনাক্ত এবং তার চিকিৎসা দুটোই কঠিন। কিন্তু নতুন এই গবেষণার মতে এই ব্যাপারটা মোটেই বিরল নয়, সুতরাং একে আলাদা এক ধরণের ডায়াবেটিস বলে শনাক্ত করাটা প্রয়োজনীয়। 

সূত্র: IFLScience