কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ইংরেজিতে শান্তির ধর্ম ইসলাম লেখা ওয়েলপেপার। ছবি: সংগৃহীত

বিনয়ী মানুষের অনন্য নজির মহানবী (সা.)

মিরাজ রহমান
সাংবাদিক ও লেখক
প্রকাশিত: ২১ জানুয়ারি ২০১৮, ১২:১৯
আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৮, ১২:১৯

(প্রিয়.কম) বিনয় ও নম্রতা মানুষের অন্যতম চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। বিনয় মানুষকে উচ্চাসনে সমাসীন ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্বে পরিণত করতে সহায়তা করে। বিনয়ীকে মানুষ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে। যে যত বেশি বিনয়ী ও নম্র হয়, সে তত বেশি উন্নতি লাভ করতে পারে। এ পৃথিবীতে যারা আজীবন স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায় আসন লাভ করে আছেন, তাদের প্রত্যেকেই বিনয়ী ও নম্র ছিলেন। শেষ নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.) ছিলেন বিনয় ও নম্রতার প্রতীক। তাই তো মহান আল্লাহ কুরআনে ইরশাদ করেছেন, আর নিশ্চয়ই তুমি সুমহান চরিত্রের অধিকারী। (সুরা: কালাম, আয়াত-৪)। আপনার এই নম্র ব্যবহার পাওয়ার সব থেকে যারা বেশি অধিকারী, তাদের পরিচয় তুলে ধরছি।

পরিবারের সঙ্গে নম্রতা: আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) হাত দিয়ে কোনো দিন কাউকে আঘাত করেননি, কোনো নারীকেও না, খাদেমকেও না, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ ব্যতীত। আর যে তার অনিষ্ট করেছে, তার থেকে প্রতিশোধও নেননি। তবে আল্লাহর মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়, এমন বিষয়ে তিনি তার প্রতিশোধ নিয়েছেন। (মুসলিম)

শিশুদের সঙ্গে নম্রতা: আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহর (সা.) কাছে শিশুদের আনা হতো। তিনি তাদের জন্য বরকত ও কল্যাণের দোয়া করতেন এবং তাহনিক (মিষ্টি জাতীয় কিছু চিবিয়ে মুখে দিতেন) করতেন। একদিন একটি শিশুকে আনা হলো। তিনি তাকে কোলে তুলে নিলেন। শিশুটি তার কোলে প্রস্রাব করে দিল। পরে তিনি পানি চেয়ে নিলেন এবং প্রস্রাবের ওপর পানির ছিটা দিলেন, আর তা ধুলেন না। (মুসলিম)

ইবাদতে বিনয়-নম্রতা: বিনয়-নম্রতা ইবাদত কবুলের আবশ্যক পূর্বশর্ত। মহান আল্লাহপাক ইরশাদ করেছে, আর তোমরা আল্লাহর জন্য বিনম্রচিত্তে দাঁড়িয়ে যাও। (সূরা-বাকারাহ , আয়াত-২৩৮)। রাসুল (সা.) তার নামাজে আল্লাহপাকের প্রতি আনুগত্যের অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। 

সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধে নম্রতা: আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার এক বেদু্ঈন মসজিদে প্রস্রাব করে দিল। লোকেরা উঠে তার দিকে গেল। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তার প্রস্রাব করায় বাধা দিও না। এর পর তিনি এক বালতি পানি আনালেন এবং তাতে ঢেলে দিলেন। (বুখারি)

খাদেমের সঙ্গে নম্রতা: আনাস (রা.) বলেন, ‘আল্লাহর শপথ! আমি নয় বছর রাসূল (সা.)-এর সেবায় নিয়োজিত ছিলাম। কিন্তু আমার জানা নেই যে, কোনো কাজ আমি করেছি, অথচ তিনি সে ব্যাপারে বলেছেন, এরূপ কেন করলে? কিংবা কোন কাজ করিনি, সে ব্যাপারে বলেছেন, কেন অমুক কাজটি করলে না?’

তওবাকারী পাপীর সঙ্গে নম্রতা: আবু হুরায়রাহ (রা.) থেকে  বর্ণিত যে, ‘একবার এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর খিদমতে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল, আমি তো ধ্বংস হয়ে গেছি! তিনি বললেন, ওয়াইহাকা (আফসোস তোমার জন্য)। এর পর সে বলল, আমি রমজানের মধ্যেই দিনের বেলায় আমার স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করে ফেলেছি। তিনি বললেন, একটা গোলাম আজাদ করে দাও। সে বলল, আমার কাছে তা নেই। তিনি বললেন, তাহলে তুমি এক নাগাড়ে দুই মাস সিয়াম পালন করো। সে বলল, আমি এতেও অপারগ। তিনি বললেন, তবে তুমি৬০ জন মিসকিনকে খাদ্য খাওয়াও। লোকটি বলল, আমি এটাও পারি না। নবী করীম (সা.)-এর নিকট এক ঝুড়ি খেজুর এলো। তখন তিনি বললেন, এটা নিয়ে যাও এবং ছাদাকাহ করে দাও। সে বলল, হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! তা কি আমার পরিবার ছাড়া অন্যকে দিব? সেই সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ! মদিনার উভয় প্রান্তের মধ্যস্থলে আমার চেয়ে অভাবী আর কেউ নেই। তখন নবী করীম (সা.) এমনভাবে হাসলেন যে, তার পার্শ্বের দাঁত পর্যন্ত প্রকাশ পেল। তিনি বললেন, তবে তুমিই এটা নিয়ে যাও।’ (বুখারি)

প্রিয় ইসলাম