কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

শিক্ষক ও প্রতিবেশিদের পাশে বাসনা, রুমা ও ঝুমা। ছবি: সংগৃহীত

বাবা-মা নেই, তিন শিশুকে দেখছেন প্রতিবেশি ও শিক্ষকরা

ইতি আফরোজ
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ১৭ নভেম্বর ২০১৭, ১৪:১৯
আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৭, ১৪:১৯

(প্রিয়.কম) অজপাড়াগাঁয়ের শেষ প্রান্তে জরাজীর্ণ বেড়ার ঘরে বাস করে তিন মেয়ে শিশু। মা মারা গেছেন অনেক আগেই। বাবা বেঁচে আছেন, কিন্তু মেয়েদের দায়িত্ব নিতে পারবেন না জানিয়ে বাড়ি ছেড়েছেন ৷ আর সেই থেকে একচিলতে ঘরে অভিভাবকহীন বেড়ে উঠছে তিনটি শিশু। 

ভারতের মালদহের কালিয়াচক ২ ব্লকের বাঙ্গিটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের চৌধুরীটোলা গ্রামের বিদ্যুত্হীন একটি বাড়িতে তাদের বসবাস। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে পাটকাঠি জ্বালিয়ে রাতের খাবারটা প্লেটে বেড়ে পাশের বাড়িতে গিয়ে খায় ওরা। বাড়িতে শৌচালয়ও নেই। তাই রাত-বিরেতে প্রয়োজন পড়লে প্রতিবেশীর মোবাইলে আলো জ্বালিয়ে পাশের জমিতে যেতে হয়। আর তিন বোন জানেই না তালা কাকে বলে। এ জন্য রাতে দরজায় একটা বাঁশ ঠেকিয়ে রাখে শুধু। 

ওদের তিন বোনের মধ্যে বড় বোন বাসনা মণ্ডলের বয়স ১৪। মেজ বোন রুমার বয়স ১২। ছোট বোন ঝুমার বয়স ৮ বছর। ওদের বাবা মাঝেমাঝে ফিরে। আর মেয়েরা বিড়ি বেঁধে যেটুকু টাকা আয় করে, তা কেড়ে নিয়ে যায়।

প্রতিবেশী সঞ্জয় মণ্ডল বললেন, ‘এমন বাবা থাকার চেয়ে মরে যাওয়া ভালো। আমরা গ্রামের লোকরাই ওদের চোখে চোখে রাখি।’

প্রতিদিন স্কুলে যেতে দেরি হত রুমার। বকাঝকা করতে গিয়ে দিদিমণিরা জানতে পারেন, প্রতিদিন রান্নাবান্না সামলে স্কুলে আসতে দেরি হয়। কথায় কথায় বেরিয়ে আসে পুরো গল্প। সব শুনে শিউরে উঠেছিলেন তার শিক্ষিকা গার্গী আচার্য, অভিজ্ঞান সেনগুন্ত, ঋতুপর্ণা পালরা। 

এটা নিয়ে কী করা যায় ভাবতে ভাবতেই তাদের সঙ্গে আলাপ হয় ঝুমার স্কুলের শিক্ষক নিলয়কুমার সরকারের। তিনি প্রতি মাস চাল কিনে দেন। পাশাপাশি ওদের সব ধরণের খোঁজ খবর রাখেন তিনি।  

বাঙ্গিটোলা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ধরণীধর মণ্ডল বলেন, ‘স্কুলের তরফ থেকে এ বছর বাসনাকে পিটিশন দেওয়া হবে। এছাড়া ওর দুই বোনও যাতে ফ্রি পড়াশোনা করতে পারে, সে জন্য স্কুলের সঙ্গে কথা বলবো।’    

প্রিয় সংবাদ/