কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

রজতজয়ন্তী পেরিয়ে সুবর্ণজয়ন্তীর পথে সিডনি বৈশাখী মেলা। ছবি: সংগৃহীত।

রজতজয়ন্তী পেরিয়ে সুবর্ণজয়ন্তীর পথে সিডনি বৈশাখী মেলা

হ্যাপি রহমান
বিশেষ প্রতিনিধি, অস্ট্রেলিয়া
প্রকাশিত: ২২ ডিসেম্বর ২০১৭, ১১:৪২
আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৭, ১১:৪২

(প্রিয়.কম) বারুদ থেকে সিডনি অলিম্পিক পার্ক, মাঝে কেটে গেছে ২৫ বছর। দীর্ঘ এ যাত্রা পথে আলোর মশাল জ্বালিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বঙ্গবন্ধু কাউন্সিল অস্ট্রেলিয়া।সংগঠনটি বাংলা সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখার জন্য প্রতি বছর নানান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। তবে, মিশ্র সংস্কৃতি ও নানান ভাষা-ভাষীদের মাঝে বৈশাখী মেলা’র আয়োজন করে বাংলাদেশকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। এরই ধারাবাহিকতায় অলিম্পিক পার্কের এএনজেড স্টেডিয়ামে গত বছর পালিত হয়েছিল দিনব্যাপী বৈশাখী মেলার বর্ণাঢ্য রজতজয়ন্তী উৎসব।

যথারীতি, এবারও অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিডনির অলিম্পিক পার্কে বৈশাখী মেলা। গত ১৭ ডিসেম্বর রবিবার মেলার আয়োজক সংগঠন বঙ্গবন্ধু কাউন্সিল অস্ট্রেলিয়া সিডনির কনকর্ডে তাদের নিজস্ব কার্যালয়ে স্থানীয় লেখক, সাংবাদিক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে মত বিনিময় সভার আয়োজন করে। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু কাউন্সিলের অন্যান্য সাংগঠনিক কর্মকর্তা সুরজিৎ রায়, মেহেদী রব, ফয়সল হোসেন প্রমুখ।  

সভায় সংগঠনের সভাপতি শেখ শামীমুল হক আগামী ১৪ এপ্রিল শনিবার বৈশাখী মেলার তারিখ ঘোষণা করেন। এটি হবে বঙ্গবন্ধু কাউন্সিল অস্ট্রেলিয়া আয়োজিত ২৬তম বৈশাখী মেলা। রজতজয়ন্তী পেরিয়ে সুবর্ণজয়ন্তীর পথে সিডনি অলিম্পিক পার্কের বৈশাখী মেলা। এটি শুধু বাঙালির মিলনমেলা বা এক টুকরো বাংলাদেশে পরিণত হওয়া নয়। এ ধরনের উদ্যোগ নিঃসন্দেহে নানান সংস্কৃতির আবহে স্বদেশিয় সংস্কৃতির মেলবন্ধনও বটে! দল-মত-বর্ণ নির্বিশেষে পহেলা বৈশাখ উদযাপনে সার্বজনীন উৎসবের যে রূপ আমরা দেখতে পাই, বৈশাখী মেলা সেই রূপকে ব্যপ্ত ও পরিপূর্ণভাবে প্রকাশ করে। হাজার মাইল দূরত্ব ছাপিয়ে বহুমাত্রিক দেশে বাংলার আদি এ সংস্কৃতিকে বর্ণিল উৎসবে পরিণত করা মোটেও সহজ নয়। নানান প্রতিকূলতা ও প্রতিবন্ধকতা পাশ কাটিয়ে বৈশাখী মেলা বাংলাদেশকেই প্রতিনিধিত্ব করে। বাঙালীর কয়েক’শ বছরের জীবনের নানা অনুষঙ্গকে ধারণ করেছে এ দিনটি- কথাগুলো বলছিলেন শেখ শামীমুল হক। তিনি জানান সমগ্র অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড প্রবাসী বাঙালী কমিউনিটি ও মিডিয়ার সহযোগিতা অনস্বীকার্য। সকলের সম্মিলিত সহযোগিতায় অলিম্পিক পার্কের বৈশাখী মেলা আজ তিন দশক অতিবাহিত করতে যাচ্ছে।

সভায় উদ্যোক্তারা জানান, বর্ষবরণের এ উৎসবে সিডনি ছাড়াও মেলবোর্ন, ব্রিসবেন, পার্থ, অ্যাডিলেডসহ অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন স্থানে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশিরা সমবেত হবেন। অস্ট্রেলিয়ার মূলধারার রাজনীতিবিদ, সরকার প্রধানসহ প্রশাসনের বিভিন্ন প্রতিনিধিরাও মেলার মূল অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। লোক সমাগম ও আয়োজনের ব্যাপকতায় সিডনির বৈশাখী মেলাকেই বাংলাদেশের বাইরে বর্ষবরণের সবচেয়ে বড় মেলা মনে করেন তারা। প্রতি বছরই তারা চেষ্টা করেন মেলার আয়োজনে নতুনত্ব আনতে। গত বছর মেলার ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে দু’টি নতুন সংযোজন ছিল - একটি রাজপথে বিলবোর্ড এবং মঙ্গল শোভাযাত্রা। এবার আরও বৃহৎ ও বৈচিত্র্যভাবে সাজানোর পরিকল্পনা রয়েছে আয়োজকবৃন্দের। তারা এ ব্যাপারে সকলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা কামনা করেন।

সিডনীর বাঙালীপাড়া খ্যাত ল্যাকেম্বা সংলগ্ন কিং জর্জেস রোডে পথচারী পারাপার সেতুটিতে আগামী মেলার বিলবোর্ড স্থাপন করা হবে বলেও জানান তারা। মেলার স্টল বুকিং এর জন্য- হায়াত ভুঁইয়া (0430 372 244), সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য- ফয়সল হোসেন (0402 617 538), বিজ্ঞাপন বা স্পন্সর আগ্রহীদের জন্য- সুরজিৎ রায় (0433 351 622) এবং মেলা উপলক্ষে প্রকাশিত স্মারকে লেখা দিতে আগ্রহীদের তুষার রায় (0413 045 133) এর সাথে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য,বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়াতে সামাজিক কর্মকাণ্ডে অবদান রাখার জন্য বিভিন্ন বিষয়ে কৃতি ও গুণীজনকে তারা ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড’ দিয়ে আসছেন গত ১৫ বছর ধরে। এছাড়াও নিয়মিত অনুদান দিয়ে আসছে বিভিন্ন সংগঠনকে। আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা চিলড্রেন ফার্স্ট ফাউন্ডেশনসহ বাংলাদেশের বেশ কিছু দাতব্য প্রতিষ্ঠানকে সাহায্য-সহযোগিতার পাশাপাশি বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করা মাথা জোড়া লাগানো শিশু কৃষ্ণা ও তৃষ্ণার চিকিৎসার ব্যয় বহন করেছিল এ সংগঠনটি। এ ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু কাউন্সিল উক্ত সভায় বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া ডিজাস্টার রিলিফ কমিটিকে অনুদান স্বরূপ ২ হাজার ডলারের চেক প্রদান করে।

মত বিনিময় সভায় অংশগ্রহণ ও মেলা সংক্রান্ত সার্বিক সহযোগিতার জন্য উপস্থিত সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে পরিসমাপ্তি ঘোষণা করেন সংগঠনের সভাপতি জনাব শেখ শামীমুল হক।

প্রিয় প্রবাস/সিফাত বিনতে ওয়াহিদ