মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচি (ডানে), দেশটির সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইয়াং (বামে)। ছবি: সংগৃহীত
রোহিঙ্গা হত্যা: মালয়েশিয়ায় আন্তর্জাতিক গণ-আদালতে সুচির বিচার শুরু
আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৮:২৭
(প্রিয়.কম) মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর দীর্ঘদিন ধরে চালানো গণহত্যা-ধর্ষণ-নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত করে স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচি, দেশটির সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইয়াংসহ অন্য কর্মকর্তারদের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ায় একটি আন্তর্জাতিক গণ-আদালতে বিচার শুরু হয়েছে।
আগামী ২২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার এ বিচারের রায় ঘোষণা করা হবে। বিচারে সুচিই প্রথম কোনো নোবেলজয়ী যিনি এই আদালতে বিচার এবং সম্ভবত দণ্ডিত হতে যাচ্ছেন। এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর সোমবার রাজধানী কুয়ালালামপুরে পার্মানেন্ট পিপলস ট্রাইব্যুনাল (পিপিটি) নামের ওই আদালতে অভিযুক্তদের বিষয়ে শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে রোহিঙ্গা ও কাচিন সম্প্রদায়ের লোকজন তাদের ওপর সংগঠিত অপরাধের বর্ণনা দেন।
শুনানিতে অংশ নেওয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জ মাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনোসাইড স্ট্যাডিজ অ্যান্ড প্রিভেনশনের বিভাগের অধ্যাপক গ্রেগরি স্ট্যানটন তার জবানবন্দিতে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের সর্বস্তরে বঞ্চনা ও বৈষম্যের শিকার বলে বর্ণনা করে বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার দায়ে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী, পুলিশ, বৌদ্ধ মিলিশিয়া এবং দেশটির বর্তমান বেসামরিক সরকার অভিযুক্ত।
এছাড়া ওই শুনানিতে একইদিনে বাংলাদেশের মানবাধিকার কমিশনে চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হকও অংশ নিয়েছিলেন।
এদিকে আদালতে মঙ্গলবার সকালে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা-নির্যাতনের সাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থাপন এবং বিকেলে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে সমাপনী বক্তব্য প্রদান করা হবে। একই সেশনে বিবাদী পক্ষও তাদের বক্তব্য তুলে ধরবেন। এছাড়া বৃহস্পতিবার বিচারক মণ্ডলীর সদস্যরা তাদের মতামত উপস্থাপন করবেন।
সুচি ও মিয়ানমারের সেনা প্রধান মিন অং হ্লাইয়াং-এর বিচারের বিষয়ে পিপিটি মালয়েশীয় শাখার সাংগঠনিক কমিটির সভাপতি চন্দ্র মোজাফফর গণমাধ্যমকে বলেছেন, পাঁচ দিনের অধিবেশনে বিচারের সমস্ত আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শেষে শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় রায় ঘোষণা হবে। পরে ওই রায় জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন ও গোষ্ঠীর কাছে পাঠানো হবে।
প্রসঙ্গত, মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে অবস্থিত মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে অনুষ্ঠিত এই বিচারকাজে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ৮ সদস্যের বিশেষজ্ঞদের একটি দল অংশ নিচ্ছে। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ তদন্তে অভিজ্ঞ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও আইনজীবীরাও শুনানিতে অংশ নিচ্ছেন।
প্রিয় সংবাদ/শান্ত