কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

যখনই ক্লান্তিবোধ হবে, এক গ্লাস পানি পান করে নিতে হবে সাথে সাথে। ছবি: নূর।

কফি নয়, ক্লান্তি দূর করবে ছোট্ট এই কাজগুলো!

ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ১৫ নভেম্বর ২০১৭, ১৮:০৯
আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৭, ১৮:০৯

(প্রিয়.কম) কাজের চাপে অথবা অতিরিক্ত পড়ালেখা ও পরীক্ষার জন্য মানসিক চাপের ফলে শরীরে ক্লান্তিভাব চলে আসে। আমরা ক্লান্তি দূর করার জন্য হাত বাড়াই কফির মগের দিকে। এই একটি পানীয়, যা পান করলেই ক্লান্তি দূর হয়ে যায় যেন! কিন্তু প্রতিদিন কতটুকু পরিমাণে ক্যাফেইন গ্রহণ করা উচিৎ, সেটারও রয়েছে নির্দিষ্ট একটি সীমারেখা। অতিরিক্ত পরিমাণে ক্যাফেইন গ্রহণ শরীরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই ক্লান্তি দূর করতে হলেও চা-কফি পান করতে হবে একদম পরিমিত পরিমাণে। 

কফি পান করা ছাড়াই ছোট্ট দারুণ এই কাজগুলোর মাধ্যমেও ক্লান্তি দূর করতে পারবেন সহজেই।

কান ম্যাসাজ করা

একদম তাৎক্ষণিকভাবে শক্তি পাওয়ার জন্য সবচাইতে সহজ উপায় হলো কান ম্যাসাজ করা। ‘ট্র্যাডিশনাল চায়নিজ মেডিসিন’ এর মতে, কান ম্যাসাজ করার ফলে অ্যাকুপ্রেশার পয়েন্টগুলো ত্বরান্বিত হয়। যার ফলে পুরো শরিরে শক্তি সঞ্চারিত হয়। কান ম্যাসাজ এর জন্য কোন বিশেষ পদ্ধতি মেনে চলার প্রয়োজন নেই। কানের লতিতে আস্তে ম্যাসাজ করে এরপর কানের উপরের দিকে উঠতে হবে।

ঠান্ডা পানিতে গোসল করা

অনেকের কাছেই গরম পানিতে গোসল করাটা পছন্দনীয় ও আরামদায়ক মনে হলেও, একদম ঠাণ্ডা পানি দিয়ে গোসল করার মাধ্যমেই শরীরের ক্লান্তিভাব দূর করা যায়। ঠাণ্ডা পানি দিয়ে গোসল করার ফলে, শরীর ঠাণ্ডার প্রকোপ সহ্য করার জন্য কাজ করে থাকে। এতে করে শ্বাস-প্রশ্বাসের হার বেড়ে যায়, ফলে শরীরে অক্সিজেন অনেক বেশী গ্রহণ করা হয়। যার ফলাফল স্বরূপ হৃদযন্ত্র এর কার্যক্ষমতা এবং রক্ত চলাচলের মাত্রা বৃদ্ধি পায় শরীর উষ্ণ রাখার জন্য। এই সকল শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ার ফলে শরীর ও মন উভয়ই চাঙ্গা হয়ে ওঠে।

জোরে শব্দ দিয়ে গান শোনা

অফিসে কাজের চাপে নিজেকে খুব বেশী বিধ্বস্ত মনে হলে ইয়ারফোন কানে গুঁজে নিজের পছন্দের গানটি উচ্চ শব্দে ছেড়ে দিন। ‘ইন্টারন্যাশনাল রিভিউ অফ স্পোর্ট এন্ড এক্সারসাইজ সাইকোলজি’ ২০১১ সালে তাদের একটি গবেষণা থেকে রিপোর্ট করেছে, উচ্চ শব্দে গান শোনা মানসিক প্রশান্তি তৈরিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

সকালের নাস্তা করা

আপনি বিশ্বাস করুন অথবা না করুন, সারাদিনের মাঝে সকালের নাস্তাটি হলো সবচাইতে প্রয়োজনীয়। এর স্বপক্ষে রয়েছে একদম খাঁটি গবেষণালব্ধ তথ্য! ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ফুড সায়েন্স এন্ড নিউট্রিশন’ ২০০৯ সালে একটি স্টাডিতে প্রকাশ করে, যারা প্রতিদিন সকালে নাস্তা করেন তারা অনেক বেশী মানসিকভাবে প্রশান্তিতে থাকেন তাদের তুলনায়, যারা নাস্তা খান না।

ডায়েরি লেখা

writhing

নিজের জীবনের আনন্দের কোন ঘটনা, স্মৃতি অথবা যে সকল কারণে আপনি কৃতজ্ঞ সেগুলো একটি ডায়েরিতে লিখে ফেলুন। এতে করে মন অনেক বেশী আনন্দিত এবং ফ্রেশ হয়ে ওঠে মূহুর্তেই, জানিয়েছে ‘জার্নাল অফ পারসোনালিটি আন্ড সোশ্যাল সাইকোলজি।‘ গবেষণা থকে দেখা গেছে যে, নিজের জীবনের ভালো কিছুর প্রতি মনোযোগ দিলে সেটা মনের উপরে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে সাহায্য করে।

মুখে পানির ঝাপটা দেওয়া

অফিসে প্রচণ্ড কাজের চাপ? খুব দ্রুত ও অল্প সময়ের মাঝে ক্লান্তি দূর করতে হবে? তবে কফি পান না করে মুখে পানির ঝাপটা দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন! ‘ক্লিনিক্যাল নিউরোসাইকোলোজি’ তাদের জার্নালে প্রকাশ করেছে, ক্লান্তি দূর করতে কফি পান করার চাইতেও দ্রুত কাজ করে থাকে মুখে পানির ঝাপটা দেওয়া!  

ডিম খাওয়া

ডিম হলো অন্যতম একটি প্রাকৃতিক পুষ্টিকর খাদ্য উপাদান, যাতে রয়েছে দীর্ঘস্থায়ী এবং শক্তি-বর্ধক প্রোটিন। ‘নিট্রিশন টুডে’র পাবলিশ করেছে, প্রতিদিন সকালের নাস্তায় ডিম খাওয়ার ফলে সারাদিন শরীর তার প্রয়োজনীয় শক্তি পেয়ে থাকে।

বেশী করে পানি পান করা

মানবশরীরের ৬০% হলো পানি। যে কারণে, শরীরে সামান্য পানিশূন্যতা দেখা দিলেও ক্লান্তি এসে ভর করতে পারে। ‘রিপোর্ট ইন ফিটনেস ম্যাগাজিন’ এর মতে, শরীরকে হাইড্রেটেড রাখার জন্য প্রতিদিন ৮-৯ গ্লাস পানি পান করা উচিৎ।

মজার কোন ভিডিও দেখা

কাজের ও মানসিক চাপের ফলে অবসন্নভাব দেখা দিতেই পারে। যার ফলে শারীরিক ক্লান্তির পাশাপাশি মানসিক বিষণ্ণতাও জেঁকে বসবে। এমতাবস্থায় সকল কিছু থেকে নিজেকে কিছু সময়ের জন্য ছুটি দিয়ে মজার কোন ভিডিও দেখতে বসে যান। হাসি হল এমন একটি জিনিস, যা মুহূর্তেই শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি দূর করে দিতে সাহায্য করে।

পিপারমিন্ট চুইংগাম চিবানো

পিপারমিন্ট চুইংগাম শুধুমাত্র মুখের দূর্গন্ধ দূর করতেই সাহায্য করে না, শারীরিক ক্লান্তি দূর করতেও কাজ করে থাকে। ২০০৯ সালে ‘ইউনিভার্সিটি অফ রোডে আইল্যান্ড’ কিছু অংশগ্রহণকারীদের উপরে একটি পরীক্ষা করেন। অংশগ্রহণকারী সকলেই জানান সকালবেলা পিপারমিন্ট চুইংগাম চিবানোর ফলে তারা আগের চাইতে অনেক বেশী প্রাণশক্তি পূর্ণ বোধ করেছেন।

দই খাওয়া

দইয়ে রয়েছে কমপ্লেক্স কার্বহাইড্রেট, প্রোটিন ও আঁশ, যা শরীরে শক্তি তৈরিতে সাহায্য করে থাকে। যে কারণে স্বাস্থ্যকর খাদ্য দই খেয়ে নিতে পারেন যেকোন সময়েই।

সূত্রReader’s Digest  

প্রিয় লাইফ/ আর বি