কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

মহাখালিতে পাওয়া যাবে এই কদবেল ভর্তা। ছবি: কে এন দেয়া

পথেঘাটে ভোজনবিলাস: নতুন রূপে চিরচেনা কদবেলের ভর্তা

কে এন দেয়া
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২২:৪৩
আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২২:৪৩

(প্রিয়.কম) সুপ্রিয় পাঠকেরা, প্রিয় লাইফে আপনাদের স্বাগতম। আপনাদের জীবনকে আরও একটু সহজ করতে, নানান রকম পণ্য ও সেবার রিভিউ ও খোঁজ-খবর তুলে ধরতে এখন থেকে আমাদের নিয়মিত আয়োজন থাকবে  "প্রিয় রিভিউ"। আমাদের আজকের রিভিউয়ের বিষয় হলো “কদবেল ভর্তা”। একজন খাদ্যপ্রেমীর দৃষ্টিকোণ থেকে খাবারটির ভালো-মন্দ তুলে ধরার চেষ্টা রইলো।

ছোটবেলার কথা মনে করে দেখুন তো। টিফিন টাইমে অথবা স্কুল ছুটির সময়ে রাস্তার অনেক খাবারই তো খেতাম আমরা। এর মাঝে থাকত ঝালমুড়ি, আচার, বিভিন্ন ফলের ভর্তা। একটি খাবারের কথা কখনোই ভোলার নয়, আর তা হলো কদবেল ভর্তা। কদবেলের ওপরে গজাল দিয়ে একটা ফুটো করা হতো, এই ফুটো দিয়ে ভেতরে বিট লবণ মাখিয়ে তাতে একটা বাঁশের কাঠি দেওয়া হতো। এই কাঠি দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে খেতে হতো কদবেল। 

দিন দুয়েক আগে বাসে চলছি, একটি মেয়ে এসে আমার সামনের সিটে বসে পড়ল, তার হাতে দেখলাম একটা কদবেল ধরা। কিন্তু ছোটবেলার সেই কদবেলের মতো নয় মোটেই। কদবেলটাকে ভেঙ্গে একটা কাপের মতো করে দেওয়া হয়েছে, তা ভর্তা করে তার মাঝে দেওয়া আছে একটা আইসক্রিমের চামচ! অর্থাৎ জীবনটাকে আরো সহজ করে দেওয়া আরকি!

চিন্তা করলাম, যে করেই হোক এই কদবেল খুঁজে বের করতেই হবে। আর খুঁজতে খুঁজতে পেয়েও গেলাম! রাবিতা নামের মেয়েটি আমাকে বলেছিল এটা পাওয়া যায় মহাখালির ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সামনে। সেখানে খুঁজে পাইনি প্রথমে, একে-তাকে জিজ্ঞেস করতে করতে অবশেষে তিতুমীর কলেজের সামনে এসে তার দেখা পেলাম। 

কদবেল ১

তিতুমীর কলেজের সামনে এই ঠেলাগাড়িতে হরেক আকৃতির কদবেল। ছবি: কে এন দেয়া

একটি ঠেলাগাড়িতে হরেক আকৃতির কদবেল সাজিয়ে বসে আছেন বিক্রেতা মিজানুর রহমান। জানালেন, আকৃতি ভেদে ১০ টাকা (একদম ছোট্ট) থেকে ৭০ টাকা (বেশ বড়সড়) পর্যন্ত পাওয়া যায় কদবেল। এর মাঝেই চলে এলেন এই ঠেলাগাড়ির মালিক আইনুল ইসলাম। জানা গেলো, আইনুল ইসলামের তিনটি ঠেলাগাড়ি, একেকটি একেক জায়গায় কদবেল বিক্রি করে। তিতুমীর ক্যাম্পাসের পাশাপাশি ব্র্যাকের সামনে এবং বনানী বিদ্যা নিকেতনের সামনে বিক্রি করা হয়। দিনের বেলা তো বিক্রি হয়ই, এর পাশাপাশি রাতের বেলায় কলম্বিয়া মার্কেটের সামনে, ওয়্যারলেস গেইটের সামনেও কদবেল বিক্রি হয়। তাদের এই কদবেল সব আসে ফরিদপুর থেকে। 

কদবেল ২

ঠেলার মালিক আইনুল ইসলমা এবং কদবেল ভর্তা তৈরির শিক্ষানবিশ মিজানুর রহমান। ছবি: কে এন দেয়া

চোখের সামনেই কদবেল ভর্তা তৈরি করে দেওয়া হলো আমাকে। তারা সাধারণ বিট লবণ নয়, বরং একটি বিশেষ ভাজা মশলা ব্যবহার করেন এটা তৈরির জন্য। গতানুগতিকের চাইতে একটু আলাদা এই ভর্তা এবং তা পরিবেশনের ধরণ, আর তাই তাদের বিক্রিবাট্টাও হয় বেশ ভালো।  দিনে ৪-৫ হাজার টাকার কদবেল বিক্রি হয়ে বলে জানা গেলো।

এত আয়োজন যাকে নিয়ে, সেই কদবেল ভর্তার স্বাদটা কেমন? তাদের ভাজা মশলাটা আসলেই ভালো, বেশ স্মোকি একটা ফ্লেভার আসে খাবার সময়ে। বেশি ছোট কদবেল খেতে গেলে কাঁচা পড়তে পারে। তাই ৩০-৪০টাকার কদবেলগুলো খাওয়াই ভালো হবে।

এতক্ষণে হয়তো অনেকেরই ইচ্ছে করছে এই কদবেল ভর্তা খেয়ে দেখতে! এই ছিলো আজকের রিভিউ। এখানে খাওয়ার অভিজ্ঞতা যদি আপনারও থেকে থাকে, তাহলে নিচে কমেন্ট আকারে আমাদের লিখে জানান। সেরা কমেন্টগুলো আমরা গ্রাহকের কমেন্ট হিসাবে যোগ করে দেব আমাদের এই ফিচারের সাথে!

সম্পাদনা: রুমানা বৈশাখী