কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

শ্রীলঙ্কার পক্ষে সর্বোচ্চ ৭০ রানের জুটি গড়েন কুশল মেন্ডিস (বামে) ও কুশল পেরেরা। ছবি: প্রিয়.কম

ফাইনালে ওঠার রেসে টিকে রইলো শ্রীলঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিয়.কম
প্রকাশিত: ২১ জানুয়ারি ২০১৮, ১৯:২৫
আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৮, ১৯:২৫

(প্রিয়.কম) জয়ের বিকল্প ছিলো না। হারলেই ফাইনালের রেস থেকে বিদায়- এমন সমীকরণ নিয়ে রোববার জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি হয় শ্রীলঙ্কা। এমন পরীক্ষার ম্যাচে এসে ঘুরে দাঁড়ালো লঙ্কানরা। ত্রিদেশীয় সিরিজে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে দ্বিতীয় সাক্ষাতে পাঁচ উইকেটের জয় তুলে নিলো শ্রীলঙ্কা। অনেক কষ্টে পাওয়া এই জয়ে ফাইনালের দৌড়ে নিজেদের টিকিয়ে রাখলেন উপুল থারাঙ্গা-দিনেশ চান্দিমালরা

শুরুতেই ধাক্কা। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১২ রানের হারে ত্রিদেশীয় সিরিজ শুরু হয় শ্রীলঙ্কার। পরের ম্যাচে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া হার। বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৬৩ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরে যায় চান্দিকা হারুসিংহের শিষ্যরা। রোববারের এই ম্যাচটি হারলেই ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হতো জিম্বাবুয়ে। এমন ম্যাচে পাঁচ উইকেটের জয় স্বস্তির হাওয়াই বুলিয়ে দিলো লঙ্কান শিবিরে। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন হাতুরুসিংহেও। শ্রীলঙ্কার কোচ হিসেবে এটাই তার প্রথম জয়।

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে থিসারা পেরেরা ও নুয়ান প্রদীপের বোলিং তোপের মুখে ৪৪ ওভারে ১৯৮ রানে অলআউট হয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। জবাবে খুব দেখেশুনে ব্যাটিং করেও ধুঁকতে হয়েছে শ্রীলঙ্কাকে। জয়ের বন্দরে পৌঁছাতে পাঁচ উইকেট হারাতে হয় তাদের। খরচ করতে হয় ৪৪.৫ ওভার। একটি করে জয় পাওয়ায় শ্রীলঙ্কা এবং জিম্বাবুয়ের ঝুলিতে এখন সমান চার পয়েন্ট। তবে রানরেটে পয়েন্ট টেবিলে এগিয়ে আছে জিম্বাবুয়েই। যে কারণে তাদের অবস্থান দুই নম্বরে। 

১৯৯ রানের লক্ষ্য। এটা ভেবেই তাড়াহুড়ো করেনি শ্রীলঙ্কা। ১০ ওভারে স্কোরকার্ডে ৩৩ রান যোগ করে তারা। ১৫ ওভারে সেটা গিয়ে দাঁড়ায় ৬৪ রানে। এত সতর্কতার মাঝেও অবশ্য ১৭ রান করা উপুল থারাঙ্গাকে হারাতে হয় শ্রীলঙ্কাকে। ৬০ পেরনোর পর রানের গতি বাড়াতে থাকে লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা। কুশল মেন্ডিসকে সঙ্গে নিয়ে এগোতে থাকেন ওপেনার কুশল পেরেরা। এসময় হাত খুলে ব্যাট চালাতে থাকেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। 

এই জুটি থেকে ৭০ রান পেয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। কিন্তু দলীয় সংগ্রহ ১০০ পেরনোর পর এই জুটি ভাঙতেই দিক হারিয়ে বসে তারা। ৪৯ রান করে বিদায় নেন কুশল পেরেরা। এরপর দ্রুত ফিরেছেন ৩৬ রান করা কুশল মেন্ডিস ও ৭ রান করা নিরোশান ডিকভেলা। ১০৩ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারনো শ্রীলঙ্কা ১১৭ রানে যেতে যেতে আরও দুই উইকেট হারায়। প্রথম সারির চার ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে হারের শঙ্কাতেই পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা।

শঙ্কা আরো বাড়ে ১৪৬ রানের মাথায় আসেলা গুনারত্নের বিদায়ে। যদিও এই শঙ্কা আর বাড়তে দেননি দিনেশ চান্দিমাল ও ম্যাচসেরা থিসারা পেরেরা। এই দুই ব্যাটসম্যান মিলেই শ্রীলঙ্কার জয় নিশ্চিত করেন। চান্দিমাল ৩৮ ও থিসারা ৩৯ রানে অপরাজিত থাকেন। জিম্বাবুয়ের ব্লেসিং মুজারাবানি সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান কাইল জার্ভিস ও তেন্ডাই চাতারা।

এরআগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা মন্দ হয়নি জিম্বাবুয়ের। উদ্বোধনী জুটিতে ৪৪ রান যোগ করেন হ্যামিল্টন মাসাকাদজাসলোমন মিরে। কিন্তু মাসাকাদজাকে ফিরিয়ে জিম্বাবুয়ের ইনিংস ওলট পালট করে দেন থিসারা পেরেরা। এখানেই থামেননি লঙ্কান এই পেসার। তুলে নেন ক্রেইগ আরভিন ও সলোমন মিরেকে। কিছুক্ষণ পর সিকান্দার রাজাকে সাজঘর দেখিয়ে দেন লক্ষণ সান্দাকান।

৭৩ রানেই চার উইকেট হারিয়ে জিম্বাবুয়ে তখন ধুঁকছিলো। তবে একটা পাশ আগলে ছিলেন অভিজ্ঞ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ব্রেন্ডন টেলর। তার সাথে যোগ দেন ম্যালকম ওয়ালার। এই জুটিতে কিছুটা স্বস্তি ফিরে পায় জিম্বাবুয়ে। টেলর-ওয়ালার জুটির করা ৬৬ রানে দেড়শ’র কাছাকাছি চলে যায় জিম্বাবুয়ে। এই জুটিতে লড়াকু সংগ্রহ গড়ার স্বপ্নই দেখছিলো গ্রায়েম ক্রেমারের দল। কিন্তু ২৪ রান করে আরভিন বিদায় নিলে আবারো দিক হারায় জিম্বাবুয়ে।

বাকিটা সময় টেলর আর ক্রেমারই যা লড়াই করেছেন। বাকিরা উইকেটে গেছেন আর ফিরেছেন। ৮০ বলে ছয়টি চারে সর্বোচ্চ ৫৮ রানের ইনিংস খেলেন ব্রেন্ডন টেলর। মূলত তার ব্যাটেই ১৯৮ রানে পৌঁছায় জিম্বাবুয়ে। এছাড়া অধিনায়ক ক্রেমার ৪৩ বলে তিনটি চারে ৩৪ রান করেন। শ্রীলঙ্কার থিসারা পেরেরা চারটি, নুয়ান প্রদীপ তিনটি ও চায়নাম্যান বোলার (বাঁহাতি লেগস্পিনার) লক্ষণ সান্দাকান দুটি উইকেট নেন।