কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

আরবি ও ইংরেজিতে হজরত ঈসা (আ.) নাম। ছবি: সংগৃহীত

হজরত ঈসা (আ.) সম্পর্কে ছয়টি জরুরি ধারণা-বিশ্বাস

মিরাজ রহমান
সাংবাদিক ও লেখক
প্রকাশিত: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭, ১১:৫০
আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭, ১১:৫০

(প্রিয়.কম) প্রকৃত মুসলিম কখনো নবীদের মধ্যে পার্থক্য করে না। নবীদের কেউ কেউ সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন আর কেউ কেউ সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন না অথবা কাউকে মানি এবং কাউকে মানি না- কোনো নবীর মাঝে এভাবে পার্থক্য করা ঠিক না। আল্লাহর পক্ষ থেকে আগত সকল নবীই একই চিরন্তন সত্য ও একই সরল-সোজা পথের দিকে আহবান জানিয়েছেন। কাজেই সত্যপ্রিয় ব্যক্তির পক্ষে সকল নবীকে সত্যপন্থী ও সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত বলে মেনে নিতে হবে। হজরত ঈসা (আ.)-কে মনে করা হয় তিনি খ্রীস্টানদের নবী, তিনি মুসলমানদের নবী নন। এমন ধারণা কোনো প্রকৃত মুসলিম পোষণ করতে পারে না। এমনকি কোনো মানুষও যদি এমন ধারণা পোষণ করেন তাহলে তিনি ভুলের মাঝে লিপ্ত। একজন মুসলিম হজরত ঈসা (আ.) সম্পর্কে যে বিশ্বাস রাখে নিম্নে সেই বিষয়গুলি তুলে ধরা হলো।

১. যে ঈসা (আ.)-এর ঈমান আনবে না, সে মুসলমান হতে পারবে না: যে ব্যক্তি ঈমানদার, যে ব্যক্তি বিশ্বাসী বা মুসলমান তাকে অবশ্যই ঈসা (আ.)-এর উপর ঈমান আনতে হবে। এমনকি হজরত আদম (আ) থেকে হজরত মুহাম্মাদ (সা.) পর্যন্ত সকল নবীদের ওপরই তাকে ঈমান আনতে হবে। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহপক ইরশাদ করেছেন, হে মুসলমানরা! তোমরা বলো, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর প্রতি, যে হিদায়াত আমাদের জন্য নাজিল হয়েছে তার প্রতি এবং যা ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব ও ইয়াকুবের সন্তানদেরকে তাদের রবের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছিল তার প্রতি। তাদের করোর মধ্যে আমরা কোনো পার্থক্য করি না। আমরা সবাই আল্লাহর অনুগত মুসলিম। (সূরা-বাকারাহ, আয়াত-১৩৬)             

২. ঈসা (আ.)-এর জন্ম হয়েছে অলৌকিকভাবে: একজন প্রকৃত মুসলিম বিশ্বাস করে যে, পিতা ছাড়া হজরত ঈসা (আ.) অলৌকিকভাবে জন্মগ্রহণ করেছেন। তিনি একজন কুমারী নারীর ঘরে জন্মগ্রহণ করেছেন। হজরত মরিয়ম বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের কাছে শ্রদ্ধা ও সম্মানিত। আল্লাহ কুরআনের এই ঘটনাটি উল্লেখ করেছেন এবং কুরআনের একটি সূরার নামকরণ করা হয়েছে তার নামে।

৩. ঈসা (আ.)-এর অলৌকিক ক্ষমতা করতেন: হজরত ঈসা (আ.) বেশ কিছু অলৌকিক কাজ করতেন। যেমন মৃত্তিকা থেকে একটি পাখি তৈরি করে উড়িয়ে দিতেন। অন্ধ ও কুষ্ঠ রোগীকে ভালো করে দিতেন। একজন মৃত ব্যক্তিকে পুনরুজ্জীবিত করতেন। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাপাক ইরশাদ করেছেন, এবং নিজের রসূল বানিয়ে ইসরাঈলদের কাছে পাঠাবেন। (আর বনী ইসরাঈলদের কাছে রসূল হিসেবে এসে সে বললোঃ) আমি তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে নিশানী নিয়ে এসেছি। আমি তোমাদের সামনে মাটি থেকে পাখির আকৃতি বিশিষ্ট একটি মূর্তি তৈরি করছি এবং তাতে ফুৎকার দিচ্ছি, আল্লাহর হুকুমে সেটি পাখি হয়ে যাবে। আল্লাহর হুকুমে আমি জন্মান্ধ ও কুষ্ঠরোগীকে নিরাময় করি এবং মৃতকে জীবিত করি। আমি তোমাদের জানিয়ে দিচ্ছি, তোমরা নিজেদের গৃহে কি খাও ও কি মওজুদ করো। এর মধ্যে তোমাদের জন্য যথেষ্ঠ নিশানী রয়েছে, যদি তোমরা ঈমানদার হও। (সূরা-আল ইমরান, আয়াত-৪৯)

৪. ঈসা (আ.) খোদার পুত্র নন: মুসলমানরা বিশ্বাস করে যে ঈসা (আ.) আল্লাহর রাসূল। তিনি নিজে খোদা বা খোদার পুত্র নন। একজন মুসলমান বিশ্বাস করেন যে তিনি অন্যান্য নবীর মতোই নবী ছিলেন। তিনি মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করতেন। এবং মানুষের মাঝে আল্লাহর বার্তা প্রচার করতেন।

৫. ঈসা (আ.) ক্রুশবিদ্ধ হননি: খ্রিস্টান বিশ্বাস করেন যে ঈসা (আ.)-কে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল কিন্তু মুসলমানরা এটা বিশ্বাস করে না। মুসলমানরা বিশ্বাস করে যে ঈসা (আ.)-কে আল্লাহ আসমানে উঠিয়ে নিয়েছেন। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, এবং তাদের আমরা আল্লাহর রসূল মরিয়ম পুত্র ঈসা মসীহ্কে হত্যা করেছি, এই উক্তির জন্য (তারা অভিশপ্ত হয়েছিল)। অথচ প্রকৃতপক্ষে তারা তাকে হত্যাও করেনি এবং শূলেও চড়ায়নি বরং ব্যাপারটিকে তাদের জন্য সন্দিগ্ধ করে দেয়া হয়েছে। আর যারা এ ব্যাপারে মতবিরোধ করেছে তারাও আসলে সন্দেহের মধ্যে অবস্থান করছে। তাদের কাছে এ সম্পর্কিত কোনো জ্ঞান নেই, আছে নিছক আন্দাজ-অনুমানের অন্ধ অনুসৃতি। নিসন্দেহে তারা ঈসা মসীহকে হত্যা করেনি। (সূরা-নিসা, আয়াত-১৫৭)    

৬. ঈসা (আ.) অবশ্যই ফিরে আসবেন: মুসলমানরা বিশ্বাস করে যে ঈসা (আ.) জান্নাতে আছেন। কিয়ামত হওয়ার পূর্বে তিনি আবার দুনিয়াতে আসবেন। একটি হাদিসে নবী (সা.) বলেছেন, যার হাতে আমার জীবন আছে, নিশ্চয়ই মরিয়ম পুত্র ন্যায়পরায়ণ শাসক হিসাবে তোমাদের মধ্যে নেমে আসবে। (সহীহ বুখারী)

সূত্র: মুসলিমস্টোরিজ.টপ

প্রিয় ইসলাম/আশরাফ