কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

স্পোর্টস কমেন্টেটর হবার ইচ্ছেটা স্বপ্ন থেকে রূপান্তরিত হয়েছে বাস্তবে। ছবি কৃতজ্ঞতা: শাহনুর রাব্বানী

'স্বপ্নটাকে আঁকড়ে ধরে রাখলে একটা সময়ে সাফল্য আসবেই'

কে এন দেয়া
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ১৭ জানুয়ারি ২০১৮, ২২:৪৬
আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৮, ২২:৪৬

(প্রিয়.কম) স্বপ্নের শুরুটা কোথায়? সবার স্বপ্নেরই একটা শুরু থাকে। ক্লাস সেভেনে পড়ার সময়ে শুরু হয় শাহনূর রাব্বানীর স্বপ্নের শুরুটা। সে সময়ে একুশে টিভির একটি জনপ্রিয় প্রোগ্রাম ছিল ‘মুক্ত খবর’। শিশু-কিশোরদের উপস্থাপনায় চলত এই অনুষ্ঠান। তা দেখেই শাহনূর সিদ্ধান্ত নেন, একদিন তিনিও উপস্থাপনা করবেন। শুধু তাই নয়, স্পোর্টস কমেন্টেটর হবার স্বপ্ন দেখা শুরু তখনই।

পড়াশোনা শেষ করে তারপরেই অনেকে স্বপ্ন পূরণের পথে ঝাঁপ দেন। কিন্তু তার জন্য অপেক্ষা করবার পাত্র নন শাহনূর। ও লেভেল পরীক্ষা দেবার পরই তিনি ফেসবুকে নোটস হিসেবে খেলাধুলার ওপর লেখালেখি শুরু করেন। ফলাফল হিসেবে ২০১১ সালে আইস টুডে ম্যাগাজিনের সাথে কাজ করার ডাক পান। সে সময় থেকেই কন্ট্রিবিউটর হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন তিনি। 

২০১১ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের সময়ে ডেইলি স্টারে কাজ করার সুযোগ পান শাহনূর। ২০১১ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত ডেইলি স্টারের হয়ে স্পোর্টস রিপোর্টার এবং সাব এডিটর হিসেবে কাজ করেন তিনি। ইচ্ছে ছিল ক্রিকইনফোর জন্য কাজ করবেন, তা আর হয়ে ওঠেনি অবশ্য। এছাড়া ঢাকা ট্রিবিউনের স্পোর্টস টিমে কাজ করার একটা সুযোগ থাকলেও তাদের স্পোর্টস টিম পরিপূর্ণ সে সময়ে। 

লেখালেখির মাঝে ডুবে থাকলেও নিজের লক্ষ্য থেকে সরে আসেননি শাহনুর।  ২০১৩ সালের শেষের দিকে রেডিও স্বাধীনের স্পোর্টস শো “বি আ স্পোর্ট” এর অতিথি হিসেবে আসেন তিনি। এরপর ডিসেম্বর থেকে সেই শোতেই অ্যাসোসিয়েট প্রডিউসার হিসেবে তার কাজ শুরু হয়। 

নিজের পছন্দের কাজটি পাওয়ার পরেই যে সব সহজ হয়ে গেল, তা কিন্তু নয়। আমেরিকায় বেড়ে ওঠার কারণে বাংলায় রেডিও শো প্রেজেন্ট করার কাজটি নিয়ে বেগ পেতে হয়েছে তাকে। এছাড়া আরজেদের ব্যবহৃত কনসোল নিয়ে কাজ করাটাও বেশ কঠিন ছিল তার জন্য। তবে সময়ের সাথে সবকিছুই এখন সহজ তার জন্য। ২০১৪ সালের শুরুর দিকে অ্যানিমে ক্যারাভান শোটি করার পর বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। এরপর আর চলার পথে আসেনি তেমন কোন বিপত্তি। 

স্বপ্ন

চৌধুরী জাফরুল্লাহ শরাফতের সাথে কাজ করতে পারাটাও ছিল শাহনূরের স্বপ্নের একটি অংশ। 

বাংলাদেশে স্পোর্টস কমেন্টেটরদের মাঝে একবাক্যে সবাই চেনেন চৌধুরী জাফরুল্লাহ শরাফতকে। তার সাথে কাজ করতে পারাটাও ছিল শাহনূরের স্বপ্নের একটি অংশ। একটা সময়ে সেই সুযোগ পেয়ে গেলেন তিনি। ২০১৪ সালে টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপের সময়ে শাহনূর তাকে অনুরোধ করেন। খুশি মনেই চৌধুরী জাফরুল্লাহ শরাফত তাদের শোতে অতিথি হিসেবে আসেন। 

স্পোর্টস শো করার ক্ষেত্রে রেডিও স্বাধীন অনেক এগিয়ে আছে বলে জানান শাহনুর। তাদের প্রচেষ্টার ফলাফল পাওয়া যায় শীঘ্রই। ফুটবল বিশ্বকাপের সময়ে রেডিও স্বাধীনের শো একই সাথে আরো তিনটি রেডিও থেকে প্রচার করা হয়। ২০১৫ সাল থেকে দেশের মাটিতে বাংলাদেশের সব ক্রিকেট ম্যাচ কভার করার সুযোগ পাচ্ছেন তারা। 

২০১৩ সালের ডিসেম্বর থেকে এখনো পর্যন্ত তিনি রেডিও স্বাধীনের সাথেই আছেন। স্পোর্টস কমেন্টেটর হবার ইচ্ছেটা স্বপ্ন থেকে রূপান্তরিত হয়েছে বাস্তবে। ভবিষ্যতে টেলিভিশন কমেন্টেটর হবার লক্ষ্য রয়েছে তার। তবে রেডিওতে কমেন্ট্রির চাইতে টেলিভিশনে সেই কাজটি করা অনেক সহজ বলেই তিনি মনে করেন। 

মোঃ গোলাম রাব্বানী এবং লিনা রাব্বানী দম্পতির একমাত্র সন্তান শাহনূর রাব্বানীর চলার পথটি খুব সহজ মনে হলেও আসলে তা নয়। লক্ষ্যে পৌঁছাতে অবশ্যই অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হয়েছে তাকে। সবকিছুর পরেও নিজের স্বপ্নটাকে আঁকড়ে ধরে রাখলে একটা সময়ে সাফল্য আসবেই, এমনটাই মনে করেন শাহনুর।  

প্রিয় লাইফ/ আর বি