কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

বাঁয়ে তুলাতলি গ্রামে সেনা অভিযানের আগের ছবি। ডানে সেনা অভিযানের পরে গত শনিবারের ছবি।

স্যাটেলাইটের ছবিতে রাখাইনের তুলাতলি গ্রামের ধ্বংসযজ্ঞ

জাহিদুল ইসলাম জন
জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক, নিউজ এন্ড কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স
প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৬:৩১
আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৬:৩১

(প্রিয়.কম) নতুন প্রকাশিত একটি স্যাটেলাইট ছবিতে মিয়ানমারের রাখাইনে রাজ্যে আরও সহিংসতার চিত্র ধরা পড়েছে। মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রকাশ করা ওই ছবিতে উত্তর রাখাইনের তুলাতলি গ্রামের ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র স্পষ্ট হওয়ার পর ব্রিটিশ গণমাধ্যম গার্ডিয়ান ওই গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে ধ্বংসযজ্ঞ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছে।

তুলাতলি গ্রামের ভুক্তভোগী রোহিঙ্গারা গার্ডিয়ান-কে জানিয়েছেন, গত ৩০ আগস্ট সেনা সদস্যরা ওই গ্রামে অভিযান চালায়। বেশ কয়েকজনকে হত্যা ছাড়াও কাঠের বাড়িগুলোতে আগুন লাগিয়ে দিয়ে গ্রাম খালি করে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গত ১৬ সেপ্টেম্বর শনিবার সকালে ধারণ করা ওই গ্রামের ছবি প্রকাশ করে। হালকা বৃষ্টিপাতের পর ধারণ করা স্বচ্ছ ওই ছবিতে গ্রামের ধংসযজ্ঞ স্পষ্ট দেখা গেছে।

সংস্থাটি বলেছে, ‘নতুন পোড়া চিহ্নসহ ছবিতে আশেপাশের গাছপালাও ধ্বংস হয়ে যাওয়ার চিত্র দেখা গেছে।’ স্থানীয়দের কাছে ‘মিন গি’ নামে পরিচিত তুলাতলি গ্রামের শুধুমাত্র দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল অক্ষত রয়েছে। স্থানীয় শরণার্থীদের বরাতে গার্ডিয়ান জানিয়েছে ওই এলাকায় বৌদ্ধ রাখাইনরা বসবাস করে।

ওই গ্রামের অধিবাসীরা জানান, সৈন্যরা আক্রমণ করার আগে স্থানীয় বৌদ্ধরা তাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে সবকিছু লুট করে নিয়ে যায়। পিতম আলী নামে একজন বলেন, তার দাদীর গলা কেটে পুড়িয়ে দেয় সৈন্যরা। অন্যান্যরা জানান, সৈন্যরা শিশু এবং পুরুষদের নদীতে ডুবিয়ে হত্যা করে।

তুলতলি গ্রাম থেকে ধোঁয়া ওড়ার চিত্র স্পষ্ট। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালতুলাতলি গ্রাম থেকে ধোঁয়া ওড়ার চিত্র স্পষ্ট। ছবি: অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল

নিউইয়র্ক ভিত্তিক সংগঠন হিউমান রাইটস ওয়াচ মঙ্গলবার জানিয়েছে, স্কচর্ড আথ নামে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওই অভিযান শুরুর পর স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণ করে তারা রাখাইনের ২১৪টি গ্রাম ধ্বংস হয়ে যাওয়ার চিত্র পেয়েছেন।

এ ছাড়া অ্যামনেস্টি রাখাইনের উত্তরাঞ্চলে অন্তত ৮০টি বড় আকারের আগুনের ঘটনা শনাক্ত করেছে। সংস্থাটি বলছে, ‘একটি পর্যালোচনায় দেখা গেছে ধ্বংসযজ্ঞ শুধু তুলাতলিতে সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং আরও বেশ কয়েকটি এলাকায় একইরকম চিত্র দেখা গেছে। তবে অবস্থা দেখতে ওই এলাকায় যেতে এখনও সাংবাদিকদের অনুমতি দেওয়া হয়নি। এছাড়া এ বিষয়ে কোনো মন্তব্যও করতে অস্বীকার করেছে মিয়ানমার সরকার।

‘অবৈধ বাঙালি’ আখ্যা দিয়ে কয়েক দশক ধরে রোহিঙ্গাদের রাখাইন থেকে বিতাড়িত করে চলেছে মিয়ানমার সরকার। কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর গত ২৫ আগস্ট থেকে নতুন করে রক্ত ঝরাতে শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। অব্যাহত হামলার মুখে প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা ইতোমধ্যে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

প্রিয় সংবাদ/শান্ত