মিয়ানমার থেকে প্রাণ বাঁচাকে টেকনাফের বালুখালীতে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা বৃষ্টিতে ভিজে মানবেতর জীবন যাপন করছে। ছবি: প্রিয়.কম
টানা বৃষ্টিতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে রোহিঙ্গারা, পাহাড় ধসের শঙ্কা
আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২০:১৭
(প্রিয়.কম) গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে টেকনাফ-উখিয়ার বেশ কিছু নিচু এলাকা। অন্যদিকে প্রবল বৃষ্টির কারণে পাহাড় ধসেরও আশঙ্কা রয়েছে। ঝুঁকির মুখে রয়েছে পাহাড়ে আশ্রয় নেওয়া প্রায় হাজার হাজার রোহিঙ্গা পরিবার। ফলে যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ফায়ার সার্ভিস বলছে, পাহাড় ধসের মতো ঘটনা ঘটলে সামলানোর মতো প্রস্তুতি নেই।
দেখা গেছে, উখিয়ার কুতুপালং, বালুখালী, পালংখালী, থ্যাংখালী ও টেকনাফের নয়াপাড়া, আনজুমান পাড়া, উনছিপ্রাং এলাকায় অবস্থিত পাহাড়ে অবস্থান করছে অন্তুত দুই লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। তারা পাহাড় কেটে সাবাড় করে ঘর তৈরি করেছে। ঘর তৈরি করতে গিয়ে কেটে ফেলা হয়েছে ছোট বড় অসংখ্য গাছ-পালা। পাহাড়ে যে সবুজের হাতছানি ছিল তা এখন আর দেখা যায় না। এখন চোখ গেলেই ঘর আর ঘর।
উখিয়ার বালুখালী ও টেকনাফের উনচিপ্রাং এলাকায় পাহাড়ের উচুতে ঘর তৈরি করেছে রোহিঙ্গারা। ওইখানে প্রায় দুই শতাধিক ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। যেখানে একটুও ফাঁকা জায়গা নেই।
টেকনাফের বালুখালীতে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা বৃষ্টিতে ভিজে মানবেতর জীবন যাপন করছে। ছবি: প্রিয়.কম
বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কক্সবাজারের স্টেশন ম্যানেজার সাফায়েত হোসেন প্রিয়.কম-কে জানান, অপরিকল্পিতভাবে পাহাড় কেটে ঘর তৈরি করা হয়েছে। এমনিতে পাহাড়ে বসতি ঝুঁকিপূর্ণ। সেখানে যত্রতত্রভাবে ঘর নির্মাণ আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। টানা বৃষ্টিতে এই ঝুঁকির মাত্রা আরও বেড়েছে। এতে ধস হওয়ার বেশি সম্ভাবনা থাকে।
যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে আপনাদের কোনো প্রস্ততি আছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, দপ্তর থেকে আমাদের এখনো কিছু জানায়নি। কক্সবাজার জেলা প্রশাসক থেকে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, পাহাড়ে বসবাসরত এমনিতে ঝুঁকি রয়েছে। সেখানে অপরিকল্পতভাবে বসতি কোনোভাবে কাম্য নয়। এরপরও তাদের বিষয়টা আমরা নজরে রেখেছি।
টেকনাফের বালুখালীতে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা বৃষ্টিতে ভিজে মানবেতর জীবন যাপন করছে। ছবি: প্রিয়.কম
এদিকে টানা বৃষ্টিতে আরও ভোগান্তিতে পড়েছে রোহিঙ্গারা। পাহাড়ের কানাচে যাদের বসতি তারা দ্বিগুণ ভোগান্তিতে পড়েছে। পাহাড়ের উপরে গড়িয়ে পড়া পানি তলিয়ে যাচ্ছে তাদের বাড়ি। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে জিনিসপত্র। তারা পুনরায় রাস্তার পাশে আশ্রয় নিতে দেখা গেছে।
এদের অনেকের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, পাহাড়ের উপর থেকে ময়লা কাঁদা গড়িয়ে পড়ছে তাদের ঘরে। রাতে ঘুমাতে যেতে পারে না তারা। সকাল হলে রাস্তার পাশে এসে ঘুমানোর চেষ্টা করি। সেখানে মানুষের আওয়াজে ঘুম যেতে পারি না। বাধ্য হয়ে ভেজা মাঠিতে ঘুমানোর চেষ্টা করি।
এদিকে কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস এ সপ্তাহের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানিয়েছে, আজ ২১ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত বৃষ্টি থাকতে পারে। শুক্রবার সকাল থেকে বৃষ্টি কমে আসতে পারে। তবে শুক্রবার আকাশ মেঘলা থাকতে পারে।
প্রিয় সংবাদ/কামরুল