কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ফিরে আসার পর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কথা বলছেন প্রধানমন্ত্রী। ছবি: ফোকাস বাংলা

‘বাংলাদেশের জন্যই রোহিঙ্গা সংকট এখন বিশ্ববাসীর মনোযোগের কেন্দ্রে’

আয়েশা সিদ্দিকা শিরিন
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ০৭ অক্টোবর ২০১৭, ১১:৫৭
আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৭, ১১:৫৭

(প্রিয়.কম) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের পদক্ষেপের কারণেই মিয়ানমারে রোহিঙ্গা সঙ্কট এখন বিশ্বাবাসীর মনোযোগের কেন্দ্রে। বাংলাদেশ যদি এ অবস্থান না নিত তাহলে রোহিঙ্গা সমস্যাটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এত দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারত না।

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে তিন সপ্তাহের সরকারি সফর শেষে ৭ অক্টোবর শনিবার দেশে ফিরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ সব কথা বলেন তিনি। সংবর্ধনা ‍অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে রোহিঙ্গা ইস্যু ছাড়াও পদ্মাসেতু ও নিজের চিকিৎসার বিষয়ে কথা বলেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

৫ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে মানবিকতার নির্দশন প্রদর্শন করার পাশাপাশি জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে রোহিঙ্গা ইস্যু উপস্থাপনের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আজ এই গণসংবর্ধনা দেয় আওয়ামী লীগ।

গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, মানবিকতার বৃহত্তর স্বার্থে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। আমরা প্রথমে দ্বিধাগ্রস্ত থাকলেও রোহিঙ্গাদের নির্যাতনের মাত্রা দেখে তাদের জন্য বাংলাদেশের দরজা খুলে দিয়েছি। মানুষ মানুষের জন্য, আমরা সেটা প্রমাণ করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আজ বিপন্ন মানবতাকে আশ্রয় দিচ্ছে। রোহিঙ্গাদের জন্য থাকার ব্যবস্থা, স্যানিটেশন, খাদ্যের ব্যবস্থা করেছি। তাদের জন্য আমরা আমাদের সামর্থ অনুযায়ী সব কিছু করব। প্রয়োজনে এক বেলা কম খেয়ে তাদের খাওয়াব।

তিনি বলেন, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে আমরা রোহিঙ্গাদের আইডি কার্ড করে দিচ্ছি। আশ্রয় যখন দিয়েছি, তখন তাদেরকে তাদের আত্মসম্মান অক্ষুণ্ন রেখে সম্মানের সঙ্গে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা নেব। 

শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিক চাপে পড়ে মিয়ানমার এখন রোহিঙ্গা বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছে। আশা করি, আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করব। জাতিসংঘে বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরা ছিল আমার লক্ষ্য। সেটা আমরা পেরেছি।

তিনি বলেন, দেশের মানুষের আস্থা ছিল, বিশ্বাস ছিল, সমর্থন ছিল বলেই দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। যারা বাংলাদেশকে দারিদ্র্য ও দুর্যোগের দেশ বলে জানতো, তারা আজ ভিন্ন বাংলাদেশকে দেখছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ যে আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত হচ্ছে, ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হচ্ছে, দেশের জন্য যা কিছু করতে পেরেছি, যা কিছু অর্জন, সবই এদেশের মানুষের সমর্থনে, এ দেশের মানুষের দোয়ায়।

পদ্মাসেতু প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মাসেতু নিয়ে আমাদের সরকার, আমার পরিবারের উপর অনেক অপবাদ দেওয়া হয়েছে, হেয় করা হয়েছে বিভিন্ন স্থানে। মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছে। পরে দুর্নীতির কথা বলে এই পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, পদ্মাসেতু বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল। বিশ্বব্যাংকের সাহায্য ছাড়া পদ্মা সেতু আমরা করতে পারব এটা অনেকেই বিশ্বাস করতে চায়নি। পদ্মা সেতুতে প্রথম স্প্যান বসেছে। এটি দৃশ্যমান হওয়ায় অনেক অপমানের জবাব দেওয়া হয়েছে।

গত ২৫ অক্টোবর ওয়াশিংটনে প্রধানমন্ত্রীর গলব্লাডারে অস্ত্রোপচার করা হয়। সে বিষয়ে তিনি বলেছেন, বর্তমানে সুস্থ আছি। তবে চিকিৎসক ছয় সপ্তাহ সাবধানে থাকতে বলেছেন। আর পুরো সুস্থ হতে ছয় মাস সময় লাগবে।

প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে ১৭ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে যান। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ১৬ দিনের সরকারি সফর শেষে দেশের পথে লন্ডনের উদ্দেশ্যে সোমবার ওয়াশিংটন ত্যাগ করেন। 

প্রধানমন্ত্রী লন্ডনে তিন দিনের অবস্থান শেষে শনিবার দেশে ফিরে আসছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে যোগদান শেষে ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক থেকে ওয়াশিংটনে যান। এখানে এক সপ্তাহ অবস্থানের পর ২ অক্টোবর লন্ডন হয়ে তার দেশে ফেরার কথা ছিল।

কিন্তু ২৫ অক্টোবর ওয়াশিংটনে প্রধানমন্ত্রীর গলব্লাডারে অস্ত্রোপচারের কারণে বিলম্ব হয়।

প্রিয় সংবাদ/মিজান