রোহিঙ্গা শরণার্থী। ছবি: ফোকাস বাংলা
‘হুমকির মুখে’ বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শিশুরা
আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৭, ১৪:০৮
(প্রিয়.কম) মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নিধন অভিযান শুরুর পর প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৫ লাখ ৮২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া এ সব রোহিঙ্গার ৬০ শতাংশ শিশু বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)।
এ সব শিশু ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার মধ্যে বসবাস করছে। তারা অপুষ্টি ও মরণব্যাধীর হুমকিতে রয়েছে। জাতিসংঘের শিশু তহবিলের মুখপাত্র মরিসিও মারকাদোর বরাত দিয়ে ভয়েস অব আমেরিকা এ তথ্য জানিয়েছে।
মরিসিও মারকাদো জানান, পাহাড়ের কাছে যেখানে রোহিঙ্গা শিশুরা বসবাস করছে এ সব অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ঝড়ো বাতাস বা বৃষ্টির সময় দুর্ভোগে পড়তে পারে এ সব শিশুরা।
তিনি জানান, আশ্রয়কেন্দ্রের শিশুরা চর্ম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ সব শিশু তীব্র অপুষ্টিতেও ভুগছে। বিশুদ্ধ পানি পান না করায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে রোহিঙ্গা শিশুরা। চলতি মাসে এক সপ্তাহেই ১০ হাজার শিশুকে তিনি অসুস্থ হতে দেখেছেন।
জাতিসংঘ শিশু তহবিলের এই কর্মকর্তা জানান, এ সব রোহিঙ্গা শিশুদের জরুরি সহায়তা প্রদানের জন্য পরবর্তী ছয় মাসে ৭৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন যার ৭ শতাংশ সংগ্রহ করতে পেরেছে ইউনিসেফ।
তিনি আরও জানান, অন্তত ৪০ হাজার মানুষকে বিশুদ্ধ পানি এবং অপুষ্টি থেকে বাঁচাতে ১০ হাজার শিশুকে পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। এ ছাড়া স্বাস্থসম্মত শৌচাগার স্থাপন করতে হবে। না হলে নতুন করে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া এক লাখ রোহিঙ্গা শিশু মরণব্যাধী হাম, রুবেলা ও পোলিওতে আক্রান্ত হতে পারে।
এর আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য আরও এক হাজার ৩০০টি শিক্ষাকেন্দ্র তৈরির ঘোষণা দিয়েছে জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ। ইউনিসেফ কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও অস্থায়ী বসতিগুলোয় বর্তমানে ১৮২টি শিক্ষাকেন্দ্র পরিচালনা করছে, যাতে ১৫ হাজার শিশু নিবন্ধিত রয়েছে।
এদিকে গত ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত গত ৩০ দিনে ১৮ হাজার ৪৪৯ জন রোহিঙ্গা এতিম শিশুকে সনাক্ত করা হয়েছে। ‘মিয়ানমার ন্যাশনাল অরফান চাইল্ড’ কার্যক্রমের মাধ্যমে এ সব এতিম রোহিঙ্গা শিশুদের সুরক্ষার জন্য আবাসস্থল ‘শিশু পল্লী’ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী রোহিঙ্গা শিশুদের স্মার্ড কার্ড দেয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ।
প্রিয় সংবাদ/আশরাফ